![](https://jagarantripura.com/wp-content/uploads/2019/08/HS-1-1024x576.jpg)
৷৷ মনির হোসেন৷৷ ঢাকা,আগষ্ট ১০৷৷ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন,ভারতের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাওয়ার পর সিভিল এভিয়েশনকে বিষয়টি পর্যালোচনা করতে বলা হয়েছে, তারা কাজও শুরু করেছে৷ এদের প্রতিবেদনের আলোকে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে৷
আগরতলা বিমানবন্দরে নিরাপদে প্লেন অবতরণে ‘ক্যাট আই লাইট’ স্থাপনের জন্য জমি চেয়ে ভারত বাংলাদেশকে যে অনুরাধপত্র দিয়েছে তা পর্যালোচনায় সরকার ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম৷বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মিডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে একথা জানান তিনি৷পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন,ভারতের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাওয়ার পর সিভিল এভিয়েশনকে বিষয়টি পর্যালোচনা করতে বলা হয়েছে, তারা কাজও শুরু করেছে৷ এদের প্রতিবেদনের আলোকে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে৷তবে বাংলাদেশের স্বার্বভৌমত্ব অক্ষুণ রেখে এবিষয়ে ভেবে-চিন্তে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের ওই বিমানবন্দরে যদি উভয় দেশের ইমিগ্রেশন চালু হয় তবে প্রস্তাবটি বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে৷
ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা বিমানবন্দর সম্প্রসারণ করতে ভারত বাংলাদেশের পরারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে জমি চেয়ে মৌখিক প্রস্তাব রেখেছে বলে উভয় দেশের গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়৷এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে সমালোচনাও করেন কেউকেউ৷শাহরিয়ার আলম বলেন,ব্রিটিশ আমলের ওই এয়ারপোর্টে (আগরতলা বিমানবন্দর) নিরাপদে প্লেন অবতরণে ক্যাট আই লাইট স্থাপনের জন্য (জমি চেয়ে) তারা অনুরোধপত্র দিয়েছে, আমরা সিভিল এভিয়শনকে বিষয়টি পর্যালোচনা করার জন্য বলেছি এবং তাদের কারিগরি কমিটি এনিয়ে কাজ করছে৷ সিভিল এভিয়শন বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর আবার আলোচনা করব, এরপর আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হবে৷
এর আগে গত ৩ আগস্ট পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন,আগরতলা বিমানবন্দরের সংস্কারের জন্য জমি চেয়ে ভারতের কোনো চিঠি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনও পায়নি৷ তবে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এর দিল্লি সফরে এনিয়ে কোন আলোচনা হয়েছেকিনা জানা যায়নি৷
ভারত জমি চাওয়ায় বাংলাদেশ জামায়াতের উদ্বেগ
বাংলাদেশের সীমান্তঘেঁষা আগরতলা বিমানবন্দর সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ভারত সরকার বাংলাদেশের কাছে জমি চেয়ে যে অনুরোধ করেছে তাতে গভীর উদ্বেগ ও বিস্ময় প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামী৷
বৃহস্পতিবার সংগঠনটির আমির মকবুল আহমাদ গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেন,আগরতলা বিমানবন্দর সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ভারত সরকার বাংলাদেশের কাছে জমি চেয়ে যে অনুরোধ করেছে তাতে আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ণ ও বিস্মিত৷ ভারতের এ অনুরোধে বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণও গভীরভাবে উদ্বিগ্ণ ও বিস্মিত৷তিনি বলেন,বাংলাদেশ একটি ছোট দেশ৷ এ দেশটি বিশ্বের ঘনবসতিপূর্ণ দেশগুলোর একটি৷ এমনিতেই সাড়ে ১৬ কোটি জনসংখ্যার ভারে বাংলাদেশ জর্জরিত৷ তার ওপর ভারতের এত জমি থাকতে আগরতলা বিমানবন্দর সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বাংলাদেশের কাছে জমি প্রদানের অনুরোধ জানানোর উদ্দেশ্য কী? বাংলাদেশ একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ৷ আগরতলা বিমানবন্দর সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বাংলাদেশের ভূখণ্ড নেয়ার পরিকল্পনা বাংলাদেশের অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্বের প্রতি একটি মারাত্মক হুমকি বলেই দেশবাসী বিশ্বাস করে৷ ভারতের এ অনুরোধ বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের সঙ্গে সাংঘর্ষিক৷ কারণ এর সঙ্গে বাংলাদেশের নিরাপত্তার প্রশ্ণ জড়িত৷জামায়াতের আমির আরও বলেন,আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, ভারত সরকার আগরতলা বিমানবন্দর সম্প্রসারণের জন্য বাংলাদেশের কাছে জমি দানের জন্য এক বছর আগে অনুরোধ জানালেও বাংলাদেশ সরকার বিষয়টি এখন পর্যন্ত জনসম্মুখে প্রকাশ করছে না কেন? সরকার বিষয়টি রহস্যজনকভাবে গোপন রাখছে কার স্বার্থে?
তিনি বলেন,বাংলাদেশের জনগণ মনে করে যে, ভারত সরকার যেখানে তিস্তা ও গঙ্গার পানি এবং তিনবিঘা করিডোরসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর সমাধান না করে দীর্ঘদিন ঝুঁলিয়ে রেখেছে, সেখানে নতুন করে ভারতের আগরতলা বিমানবন্দর সম্প্রসারণের জন্য বাংলাদেশের কাছে জমি চাওয়ার বিষয়টি খুবই রহস্যজনক৷মকবুল আরও বলেন,আমি আশা করি সরকার বিষয়টি দেশের জনগণের সামনে প্রকাশ করবে এবং দেশের জনগণের মতামতের ভিত্তিতে জাতীয় স্বার্থকে সমুন্নত রেখে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে৷ ভারতের অনুরোধের কাছে নতি স্বীকার করে সরকার জাতীয় স্বার্থবিরোধী কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে তা দেশের জনগণ কখনও মেনে নেবে না৷