BRAKING NEWS

নর্দমা কিংবা বাড়ির বাইরে আবর্জনা ফেললে, উন্মুক্ত স্থানে মূত্র ত্যাগ করলে জরিমানা করা হবে, সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১ জুলাই ৷৷ নর্দমায় কিংবা বাড়ির সামনে আবর্জনা ফেললে এবং উন্মুক্তস্থানে মূত্র ত্যাগ করলে জরিমানা করার পদক্ষেপ নিতে চলেছে রাজ্য সরকার৷ আজ আগরতলা টাউন হলে ৮ দিনব্যাপী কঠিন ও তরল সম্পদ (বর্জ্য) ব্যবস্থাপনা কর্মশালার উদ্বোধন করে এইভাবেই সতর্ক করেছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ সাথে যোগ করেন, প্রকৃতির কোনও কিছুই বর্জ্য নয়৷ সব কিছুই পুনঃব্যবহার করা যায়৷ তাই, বর্জ্য মুক্ত ও সবুজ ত্রিপুরা গড়ার লক্ষ্যে সরকার এবং রাজ্যবাসী সকলকে মিশন মুডে কাজ করতে হবে৷


প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকারের নগর উন্নয়ন দপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত এই কর্মশালায় আগরতলা পুর নিগমের ৪৯টি ওয়ার্ড, ২০টি পুর পরিষদ ও নগর পঞ্চায়েত এবং ২৪টি মডেল ভিলেজ থেকে ৫০০ জন মাস্টার’স ট্রেনার ও বি এস এফের জওয়ানগণ অংশগ্রহণ করেন৷ যারা পরবর্তীতে সারা রাজব্যাপী এই কর্মসূচিকে সকলের কাছে পৌঁছে দেবেন৷


কর্মশালায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ন্যাশনাল গ্রীণ ট্রাইব্যুনাল ২০১৮-এর মোতাবেক প্রত্যেক রাজ্যকে অচিরেই বর্জ্য মুক্ত করতে হবে৷ বর্তমান রাজ্য সরকার সে দিশাতে কাজ করার লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে৷ রাজ্যে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পুরোদমে চালু হয়ে গেলে চারদিকের স্বচ্ছতা যেমন বজায় থাকবে, ঠিক তেমনি মানুষের উপার্জনেরও বিভিন্ন পথ খুলে যাবে৷


তাঁর কথায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গত ৫ বছর পূর্বে দেশে স্বচ্ছ ভারত অভিযান শুরু করেছিলেন৷ যা বর্তমানে দেশে এক আন্দোলনের রূপ নিয়েছে৷ তিনি বলেন, আমাদের রাজ্যেও এর অনেক কাজ হয়েছে৷ কিন্তু, আরও অনেক কাজ করতে হবে৷ তিনি জানান, ত্রিপুরার উদয়পুর ও সোনামুড়া পুর পরিষদ ইতিমধ্যেই স্বচ্ছতার জন্য জাতীয়ভাবে পুরসৃকত হয়েছে৷


এদিন তিনি বলেন, আগরতলায় ৭ লক্ষ মানুষ বসবাস করেন৷ কিন্তু, মশা ও নর্দমা এই শহরের মূল সমস্যা৷ তাঁর মতে, এই কর্মসূচি শুরু হলে এই সমস্যাগুলি থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে৷ কিন্তু এই কর্মসূচির সফল রূপায়ণের জন্য জনগণকেও নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হতে হবে, সকলকে মনে করিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তাঁর কথায়, প্রধানমন্ত্রী দেশকে স্বচ্ছ করার জন্য হাতে ঝাড় তুলে নিয়েছেন৷ তাই বজর্ে্যর সঠিক ব্যবস্থাপনায় সকলকেই গঠনমূলক মানসিকতা নিয়ে নিজের পারিপাশর্িক এলাকায় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে সচেষ্ট হতে হবে৷


তাঁর দাবি, অবৈধভাবে নর্দমার জায়গা জবর দখল ও নর্দমায় প্লাস্টিক জাতীয় বর্জ্য ফেলা বর্ষাতে শহরে জলস্ফীতির একটা অন্যতম কারণ৷ মুখ্যমন্ত্রী এই ক্ষেত্রে প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা বলেন৷ তিনি বলেন, আগামী কিছুদিনের মধ্যেই শহর এলাকাগুলোতে নর্দমা কিংবা বাড়ির সামনে আবর্জনা ফেললে, উন্মুক্ত জায়গায় মূত্রত্যাগ করলে জরিমানার ব্যবস্থা করা হবে৷ সেক্ষেত্রে জনগণ যাতে এসব কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকেন এরজন্য সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও সামাজিক সংস্থার পক্ষ থেকে জোর প্রচার চালানোর উপর গুরুত্ব আরোপ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি সরকারি কর্মচারীদের সততা ও দায়বদ্ধতা নিয়ে কাজ করার জন্যও আহ্বান জানান৷


অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যসচিব ইউ ভেঙ্কটেশ্বরলু জানান, আগরতলাকে মার্টসিটি করার জন্য প্রায় দু’হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হবে৷ এই কাজে সরকার ও শহরবাসীর সহযোগিতা প্রয়োজন৷ এদিকে, অতিরিক্ত মুখ্যসচিব কুমার অলক বলেন, মানুষকে সুুস্থ থাকতে হলে স্বচ্ছ থাকতে হবে৷ কিন্তু আমরা নিজেদের স্বচ্ছতা নিয়ে সচেতন হলেও পরিবেশের স্বচ্ছতা নিয়ে ততটুকু সচেতন নই৷ অন্যান্যদের মধ্যে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের সভাপতি আগরতলা পুর নিগমের মেয়র ড প্রফুল্লজিৎ সিনহা এবং স্বাগত ভাষণ রাখেন নগর উন্নয়ন দপ্তরের অধিকর্তা মিলিন্দ রামটেকে৷ অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের বিশেষ সচিব কিরণ গিত্যে, আগরতলা পুর নিগমের কমিশনার ড শৈলেশ কুমার যাদব, এস আর এল এমের প্রোজেক্ট ডাইরেক্টর সি শ্রীনিবাসন প্রমুখ৷ অনুষ্ঠানের শুরুতে নগরোন্নয়ন দপ্তরের পক্ষ থেকে অতিথিগণের হাতে ১টি করে বিশেষ পাতাবাহার জাতীয় গাছের চারা তুলে দেওয়া হয়৷ উল্লেখ্য, কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী মাস্টার’স ট্রেইনারদের মধ্যে দুই শতাধিক মহিলা রয়েছেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *