পুণে ও মুম্বই, ২৯ জুন (হি.স.): প্রবল বৃষ্টির দাপটে মহারাষ্ট্রের পুণে-তে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল একটি আবাসনের বিশালাকার দেওয়াল। ধ্বংসস্তুপের তলায় চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে শিশু-সহ কমপক্ষে ১৫ জনের। এছাড়াও আরও দু’জন গুরুতর আহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তিনটি গাড়িও। ধ্বংসস্তূপের তলায় আরও বেশ কয়েকজন চাপা পড়ে রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শনিবার ভোররাতে পুণে-র কোন্ধওয়া এলাকায় হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে বিশালাকার একটি দেওয়াল। দেওয়াল ভেঙে পাওয়ার খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ ও উদ্ধারকারী দল। মাটি ও ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে প্রায় ১৭ জনকে উদ্ধার করে নিকটবর্তী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, তাঁদের মধ্যে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকি দু’জন আপাতত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
দেওয়াল ভেঙে পড়ার ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীশ। মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘পুণে-র কোন্ধওয়ায় দেওয়াল ভেঙে মৃত্যুর ঘটনায় খুবই দুঃখিত। মৃতদের পরিবারের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। পুণের জেলা শাসককে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’ পুণে-র জেলাশাসক এন কিশোর রাম জানিয়েছেন, ‘ভারী বৃষ্টিপাতের কারণেই দেওয়াল ভেঙে পড়েছে। নির্মাণ সংস্থার গাফিলতিও প্রকাশ্যে এসেছে, ১৫ জনের মৃত্যু কোনও ছোট ঘটনা নয়। মৃতদের মধ্যে অধিকাংশই শ্রমিক, তাঁদের বাড়ি পশ্চিমবঙ্গ এবং বিহারে। ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সাহায্য করবে সরকার।’
শনিবার সারা রাত ধরেই পুণেতে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। যার ফলে কোন্ধওয়ার একটি আবাসনের পার্কিং লটের দেওয়াল ভেঙে যায়। পার্কিং লটের ঠিক পাশেই ছিল বস্তি এলাকা। দেওয়াল বস্তির একাধিক ঘরের উপরেই ভেঙে পড়ে। দুর্ঘটনার সময় সকলেই ঘুমিয়ে ছিলেন। এই কারণেই এতগুলো মানুষ মারা গিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। ধসে পড়া দেওয়ালের নীচে আরও অনেকের আটকে থাকার আশঙ্কা করছে উদ্ধারকারী দল। দ্রুত তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। মৃতদের বেশির ভাগেরই পরিচয় এখনও জানা সম্ভব হয়নি। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই আবাসনের কাছেই আরও একটি বড় কমপ্লেক্স তৈরির কাজ চলছে। সেখানকার কর্মীরা মূলত বিহার এবং পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। তাঁরা ঘটনাস্থলে অস্থায়ী ঘর বেঁধে থাকছিলেন। পুণে-র পুলিশ কমিশনার কে ভেনকেটেশ্বম জানিয়েছেন, ‘আমাদের বিশেষ টিম দেওয়াল ভেঙে পড়ার কারণ খতিয়ে দেখছে। দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সমস্ত ধরণের অনুমতি অথবা সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ পুণের মেয়র মুক্তা তিলক জানিয়েছেন, ‘এই ঘটনার তদন্ত হবে। আপাতত কাজ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মৌসুমী বায়ু সক্রিয় হওয়ায় শুক্রবার (২৮ জুন) সকাল থেকেই প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হয় পুণে, মুম্বই-সহ মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রান্তে। শনিবার দুপুর পর্যন্ত লাগাতার বর্ষার বৃষ্টি চলছে মুম্বইয়ে। প্রবল বৃষ্টির দাপটেই পুণে-তে অকালে প্রাণ হারালেন ১৫ জন শ্রমিক। অন্যদিকে, মহারাষ্ট্রের থানে-র রাবোদিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন বছর ৪৬-এর একজন ব্যক্তি। মুম্বইয়ের আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘পশ্চিম উপকূলে অতি সক্রিয় মৌসুমী বায়ু। আর তাই মুম্বই, থানে-সহ পশ্চিম উপকূলে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।’