নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৯ এপ্রিল ৷৷ নির্বাচনী ময়দানে অন্য কোনও দলের উপস্থিতি চোখে পড়েনি৷ মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপির জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসের সুরে একথা বলেন দলের প্রদেশ সভাপতি তথা মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ তাঁর কথায়, লোকসভা নির্বাচনে বামেরা প্রধান প্রতিপক্ষ হলেও পরাজয় নিশ্চিত জেনে তাঁরা সন্ত্রাসের অজুহাত তুলে ধরছেন৷ সাথে তিনি যোগ করেন, কংগ্রেসের এ রাজ্যে এখনও কোন সম্ভাবনা লক্ষ্য করা যাচ্ছেনা৷ তাই, লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি দুই আসনেই জয়ী হবে বলে তিনি প্রত্যয় ব্যক্ত করেন৷

এদিন তিনি বলেন, রাজ্য জুড়ে বিজেপির কর্মী-সমর্থক রয়েছেন৷ উপরন্তু, সম্প্রতি বিজেপিতে ২ লক্ষ ৭০ হাজারের বেশি ভোটার যোগদান করেছেন৷ তাই এবারের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের দুটি আসনে বিজেপি প্রার্থীরাই জয়ী হবেন বলে তিনি দাবি করেন৷
তাঁর মতে, কংগ্রেসে ভোট দেওয়ার অর্থ সিপিএমকে শক্তিশালী করা৷ তাই রাজ্যের ভোটারদের প্রতি সঠিক জায়গায় ভোট দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান প্রদেশ সভাপতি বিপ্লব দেব৷ তাঁর বক্তব্য, বামেরা ত্রিপুরার সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গত বছর নির্বাচনের আগে ত্রিপুরাকে হীরা বানানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন৷ লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে রাজ্যে এসে তিনি আবারও বলে গেছেন ত্রিপুরাকে হীরা বানাবেন৷ মোদী থাকলে ত্রিপুরার উন্নয়ন হবে৷ তাঁর দাবি, কর্মচারীদের সপ্তম বেতন কমিশনের বেসিক দেওয়া হয়েছে৷ মোদী থাকলে রাজ্যের আরও উন্নয়ন সম্ভব৷ তাই উন্নয়নের তাগিদে মোদীকে আবার প্রধানমন্ত্রীর পদে বসানো প্রয়োজন৷
বিপ্লব দেবের কথায়, রাজ্যে বিজেপির মূল প্রতিপক্ষ বামফ্রন্ট৷ কিন্তু, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিজেপির বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযোগ করছে বামেরা এই প্রশ্ণের উত্তরে তিনি বলেন, অভিযোগ হচ্ছে তাঁদের ভূষণ৷ তিনি বলেন, ২৫ বছর ধরে সন্ত্রাস চালিয়ে ছিল বামেরা৷ এখন তা সম্ভব নয়, তাই তাঁরা অভিযোগ করছে৷
এদিকে, নতুন ভারত গড়ার সঙ্কল্পকে সামনে রেখে বিজেপির তরফে সোমবার লোকসভা নির্বাচনের সংকল্প পত্র প্রকাশ করা হয়েছে৷ এতে ৭৫ টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে বলে জানান বিপ্লবকুমার দেব৷
ভারতীয় জনতা পার্টির ত্রিপুরা প্রদেশ কমিটির পক্ষ থেকে তাই প্রধানমন্ত্রী-সহ দলের অন্যান্য শীর্ষ নেতৃত্বকে ধন্যবাদ জানান তিনি৷ এদিন তিনি সংকল্প পত্রের উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় তুলে ধরে বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতকে বিশ্বের তৃতীয় শক্তিশালী দেশ তৈরি করা হবে৷ কৃষকদের আয় বৃদ্ধি করা, গরিব কৃষক এবং অসংগঠিত শ্রমিকদের তিন হাজার টাকা করে পেনশন দেওয়া, জিএসটি-র সরলীকরণ করা যাতে ছোট ব্যবসায়ীর ক্ষতি না হয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এনআরসি চালু করা, দেশের আন্তর্জাতিক সীমান্তে স্মার্ট বর্ডার ফেন্সিং সংস্থাপন করা- বিশেষ করে উত্তরপূর্ব ভারতে তা হবে৷ এছাড়া জনগণের কৃষ্টি-সংসৃকতির ক্ষতি না করে সিটিজেনশিপ বিল আইনে প্রবর্তন করা, ৫০টি শহরকে মেট্রো নেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে আসা, সন্ত্রাসবাদকে কঠোর হাতে দমন করা, জনজাতিদের উন্নয়নের জন্য একলব্য সুকলকে নবোদয়ের মতো করা, যে-সকল এলাকায় ২০ হাজার থাকেন সেখানে নবোদয় সুকল তৈরি করে দেওয়া, ৫০টি বন্ধন বিকাশ কেন্দ্র উত্তরপূর্ব ভারতে চালু করা- বিশেষ করে জনজাতিদের জীবন-মানোন্নয়নের জন্য, ২৫ লক্ষ কোটি টাকা গ্রাম উন্নয়নের জন্য খরচ করা ইত্যাদি৷