নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা/ খোয়াই, ২৮ নভেম্বর৷৷ পুর ও নগরের শূণ্য আসনে উপনির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারির আটচল্লিশ ঘন্টা যেতে না যেতেই রাজনৈতিক তৎপরতা শুরু রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে৷ রাজধানী আগরতলা শহরে তো বটেই রাজ্যের অন্যান্য স্থানেও একই অবস্থ বলে সংবাদ সূত্রে জানা গেছে৷ খোয়াইয়ে কংগ্রেস কর্মীর বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ করেছে কংগ্রেস নেতৃত্বরা৷
পুর ও নগরের উপ নির্বাচনে বামপ্রার্থীদের নিরাপত্তার দাবীতে রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশকের দ্বারস্থ্য হয়েছে সিপিএম নেতারা৷ সিপিএমের পক্ষ থেকে শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ করা হয়৷ তাঁদের আশঙ্কা আসন্ন পুর ও নগরে উপ নির্বাচনে বামপ্রার্থীদের উপর শাসক দলের মদতপুষ্ট দুসৃকতিকারীরা হামলা করতে পারে৷ তাই তাঁরা পুলিশ মহানির্দেশকের দ্বারস্থ হয়েছেন বাম প্রার্থীদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য৷
সিপিএম নেতৃত্ব তথা বিধায়ক বাদল চৌধুরী, সাংসদ জীতেন্দ্র চৌধুরী, প্রাক্তন মন্ত্রী মানিক দে দলীয় কার্য্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে এই অভিযোগ করে বলেন, বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে সিপিএমের পার্টি অফিস ভাঙচুর, পার্টি কর্মীদের উপর হামলা, এমনকি পার্টি কর্মীদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে শাসক দলের মদতপুষ্ট দুসৃকতীরা৷ সিপিএমের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আসন্ন পুর ও নগরের উপ নির্বাচনে বাম প্রার্থীদের উপর হামলা করতে পারে দুসৃকতিকারীরা৷ সেই আশঙ্কায় বুধবার দুপুরে নিরাপত্তার দাবীতে পুলিশ মহানির্দেশকের কাছে যান তাঁরা৷
এদিকে, খোয়াই পুর পরিষদের উপনির্বাচনের মুখে প্রধান বিরোধী দল সিপিএমের টিকির নাগাল না পাওয়া গেলেও নতুন করে পাল্লা ভারী করতে মাঠে নেমে পড়েছে কংগ্রেস৷ তাই পুর উপনির্বাচনের প্রাক্কালে শাসক দল বিজেপি বনাম কংগ্রেসের মধ্যেই লড়াই হচ্ছে৷ কিন্তু, কংগ্রেসের হয়ে লড়াই করার আগেই খোয়াইকে কংগ্রেস কর্মীর বাড়িতে দুবৃত্তদের হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনায় রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক পরিস্থিতি৷
বুধবার খোয়াই ব্লক কংগ্রেস ভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে জেলা কংগ্রেস কমিটির সভাপতি বিক্রম কিশোর সিনহা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং গোটা ঘটনার জন্য শাসক দলের দিকেই আঙুল তোলেন৷ কংগ্রেস নেতৃত্ব সরাসরি অভিযোগ করে বলেন, যেহেতু মনোনয়নপত্র চেয়ে হামলা ভাঙচুর করা হয়েছে তাই এই ঘটনা বিজেপিই সংগঠিত করেছে৷ এছাড়াও তিনি মূল ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে বলেন, মঙ্গলবার বিকালে খোয়াই পুর পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হয়৷ বৈঠকে সিপিএম গড়হাজির ছিল৷ এই বৈঠকের পর কংগ্রেস ও বিজেপির দল ১৫টি আসনের জন্য মনোনয়ন তুলে নেয়৷ কংগ্রেসের হয়ে মনোননয় নেন কংগ্রেস কর্মী জুটন দেবনাথ৷ এদিন, সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ সাত আট জন যুবক মাথায় ফুল হেলমেট পরে মুখে কালো কাপড় বেধে জুটন দেবনাথের বাড়িতে যায়৷ সেই সময় জুটন বাড়িতে ছিল না৷ ঐ যুবকরা ঘরের দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে মনোনয়ন পত্রগুলি চায়৷ না পাওয়ায় ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে৷ এই ঘটনার পর কংগ্রেস দলের জেলার নেতারা বুধবার সকালে জুটন দেবনাথের বাড়িত যায় এবং ঘটনার তীব্র নিন্দা জানায়৷
এদিকে, মনোনয়নপত্র ছিনিয়ে নেবার ঘটনাকে ঘিরে খোয়াইয়ে কংগ্রেস কর্মীর বাড়িতে মঙ্গলবার রাতে ঘরের হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনার জন্য কংগ্রেস নেতৃত্ব বিজেপির দিকে আঙুল তুললেও বিজেপির খোয়াই মন্ডল সভাপতি সুব্রত মজুমদার এক বিবৃতিতে জানান, খোয়াইয়ের পুর পরিষদের উপ নির্বাচনে শাক দল ১৫টি আসনেই প্রার্থী দেবে৷ কংগ্রেস কর্মীর বাড়িতে ইে ঘটনার ঘটনায় শাক দলের কোন হাত নেই৷ তিনি ঘটনার নিন্দা জানান এবং পাশাপাশি তিন এও জানান জুটন দেবনাথ পূর্বে সিপিএম দলের কর্মী ছিলেন৷ বর্তমানে তিনি সিপিএম ছেড়ে কংগ্রেস দলে নাম লিখিয়েছেন৷ তাই হয়তো শাসক দল বিজেপিকে জড়িয়ে কুৎসা রটাতে এই ঘটনা সংগঠিত করেছে৷