নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৬ নভেম্বর৷৷ নিয়োগের লক্ষ্যে বিভিন্ন দফতরে ২০১৬-১৭ এবং ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে যে সকল ইন্টারভিউ শেষে প্রার্থী বাছাই সম্পন্ন হয়েছিল সেগুলি বাতিল করা সম্পর্কে বিরোধীদের যাবতীয় অভিযোগ খণ্ডন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ মুখ্যমন্ত্রী দেব জানান, সরকারি নিয়োগ হবে স্বচ্ছ এবং আইনসম্মত৷ আজ রাজ্য বিধানসভায় বিরোধী দলের সদস্য সুধন দাস ও সহিদ চৌধুরী কর্তৃক উত্থাপিত দৃষ্টি আকর্ষনী প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্য সরকার সুন্দর ও স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করার উদ্দেশ্যে নতুন নিয়োগনীতি চালু করেছে৷
তিনি জানান, নতুন নীতি অনুযায়ী সমস্ত নিয়োগ মেধার ভিত্তিতে লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে করা হবে৷ এর আগে রাজ্য সরকারের একটি জেনারেল এমপ্লয়মেন্ট গাইডলাইন ছিল৷ সেই গাইডলাইন অনুযায়ী প্রাইমারি শিক্ষক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষক নিয়োগ হয়েছিল ২০১০ সাল থেকে৷ কিছু সংখ্যক বেকার যুবক-যুবতী তখন ওই নিয়োগের বিপক্ষে উচ্চ আদালতে মামলা করেন৷ পরবর্তী সময়ে উচ্চ আদালত এবং সর্বোচ্চ আদালত ওই জেনারেল এমপ্লয়মেন্ট গাইডলাইন অনুসারে গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি এর নিয়োগ সম্পূর্ণ মৌখিক সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে করা হত৷ পরবর্তী সময়ে পূর্বতন সরকার একটি রিজার্ভ এমপ্লয়মেন্ট গাইডলাইন প্রণয়ন করে৷ কিন্তু সেটিও আদালতের আদেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না, জানান মুখ্যমন্ত্রী৷
মুখ্যমন্ত্রী জানান, নতুন সরকার গঠন হওয়ার পর নিয়োগ সম্পর্কে সুপারিশ করতে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়৷ পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকার সমস্ত গ্রুপ বি এবং গ্রুপ সি পদের জন্য সাক্ষাৎকার প্রক্রিয়া বাতিল করতে বলায় রাজ্য সরকারও কেন্দ্রীয় সরকারের অনুকরণে একটি স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া নীতি তৈরি করতে উদ্যোগী হয়েছিল৷ জানান, অধিকন্তু আগে টিপিএসসসি ও কিছু কিছু গ্রুপ বি, গ’ সি এবং গ্রুপ ডি পদে নিয়োগের জন্য ১০ শতাংশের বেশি মৌখিক ইন্টারভিউ ১০ শতাংশ সীমাবদ্দ থাকত৷ অতএব রাজ্য সরকার নতুন নিয়োগ নীতি প্রকাশ করার পাশাপাশি বিভিন্ন দপ্তর এবং টিপিএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে৷ এছাড়াও কেন্দ্রীয় সরকার দ্য রাইটস অব পার্সনস উইথ ডিজিবিলিটি চালু করে ২০১৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর৷ ওই আইন অনুযায়ী শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষণের পরিমাণ তিন শতাংশ থেকে বাড়িয়ে চার শতাংশ করা হয়৷ কিন্তু রাজ্য সরকার ওই আইন রাজ্যে কার্যকর করেনি৷ বিভিন্ন প্রক্রিয়াজনিত নিয়ম ও নিষেধাজ্ঞার জন্য প্রতিবন্ধীদের চার শতাংশ সংরক্ষণ একটি সাংবিধানিক আদেশ৷ এজন্যও ২০১৬-১৭ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়াগুলি বাতিল করা বাধ্যতামূলকভাবে হয়েছিল৷ এই সব নিয়োগ প্রক্রিয়াগুলি বাতিল না হলে রাজ্য সরকার আবার নতুন করে আইনি ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ত৷
তিনি জানান, একটি নতুন নিয়োগনীতি চালু করার জন্য রাজ্য সরকার কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত সময় সময় আদালত কর্তৃক প্রদত্ত বিভিন্ন নির্দেশের বলে বহাল রয়েছে এবং বৃহত্তর জনস্বার্থে এটি গ্রহণযোগ্য সিদ্ধান্ত৷ এই সিদ্ধান্ত যোগ্যতা অর্জনের জন্য যোগ্য ব্যক্তিদের সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদে রাজ্যকে উপকৃত করবে এবং এটি সেরা প্রার্থীদের নিয়োগ এবং প্রশাসনের সামগ্রিক দক্ষতা নিশ্চিত করবে৷