মুখ্যমন্ত্রীকে আশ্বাস কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রীর, নতুন ঘোষিত নূ্যনতম সহায়ক মূল্যেই রাজ্যের কৃষকদের থেকে ধান কেনা হবে

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৬ অক্টোবর৷৷ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব নয়াদিল্লি সফরকালে আজ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রকের পদস্থ আধিকারিকদের সাথে বৈঠক করেন৷ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব কেন্দ্রীয় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পমন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ানের সাথে এক বৈঠকে মিলিত হন৷ বৈঠকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী পাসোয়ান মুখ্যমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করে বলেন, রাজ্যের কৃষকদে র কাছ থেকেই ত্রিপুরার জন্য ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া ধান কিনবে৷ তিনি জানান, ধান কেনা হবে নতুন ঘোষিত নূ্যনতম সহায়ক মূল্যেই৷ তাতে রাজ্যের লক্ষাধিক কৃষক উপকৃত হবেন৷ এবছরের শেষে ডিসেম্বর মাস থেকেই ধান কেনার উদ্যোগ নেওয়া  হবে৷ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এদিন কেন্দ্রীয় রেল এবং কয়লা মন্ত্রী পীযুষ গোয়েলের সাথেও বৈঠক করেন৷ বৈঠকে রাজ্যে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত করা এবং রাজ্যে কয়লার লিংকেজেস বাড়ানোর বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়৷

মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব আজ কেন্দ্রীয় যুব বিষয়ক এবং ক্রিড়া মন্ত্রী কর্নেল রাজ্যবর্ধন রাঠোরের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন৷ বৈঠকে ‘খেলো ত্রিপুরা’ প্রকল্পে ত্রিপুরায় খেলাধূলার উন্নয়নে রাজ্য সরকার যে সমস্ত পদক্ষেপ  নিয়েছেন সে সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে অবহিত করেন৷ আগামী মাসে ত্রিপুরায় অনুষ্ঠেয় উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুব উৎসব ২০১৮-র প্রস্তুতি সম্পর্কেও মুখ্যমন্ত্রী ক্রীড়ামন্ত্রীকে অবহিত করেন৷ শ্রীরাঠোর রাজ্য সরকারের কাজের ভূয়সী প্রশংসা করে ত্রিপুরার খেলাধূলার উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকার থেকে সব ধরনের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন৷ উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুব উৎসবের প্রস্তুতির কাজেও কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রী সন্তোষ ব্যক্ত করেছেন৷ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন, হাইওয়ে এবং জাহাজ মন্ত্রকের মন্ত্রী নীতিন গড়করির সাথেও আজ বৈঠক করেন৷ বৈঠকে ত্রিপুরার পরিকাঠামো উনয়ননের জন্য বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়৷ আলোচনায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গড়করি জানান, এনএইচ ৪৪-‘এ’ (মনু -সিংলুম) এবং এন এইচ ২০৮ (কৈলাসহর-তেলিয়ামুড়া) প্রকল্পের ডিপিআর গ্রহণ করা হয়েছে৷ এই প্রকল্পগুলি রূপায়ণে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও শ্রীগড়করি জানান৷ এন এইচ ১০৮ -‘বি’ এর এলাইনমেন্টের প্রস্তাবও বৈঠকে আলোচনার পর গ্রহণ করা হয়েছে৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী গড়করি মুখ্যমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করে বলেন, ত্রিপুরায় জাতীয় সড়কগুলি সারাইয়ের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা হবে৷ এন এইচ আই ডি সি এল-এর সহযোগিতা নিয়ে রাজ্যের পূর্ত দপ্তর এই কাজ করবে৷ গোমতী নদী এবং মেঘনা নদীর মধ্যে জলপথ চালু করার ৩৫ কিলোমিটার পলি সরানোর কাজ শুরু করা হবে৷ এই সিদ্ধান্ত ত্রিপুরাকে উত্তর-পূর্ব ভারতের নতুন গেইট ওয়ে তৈরির কাজকে উদ্দীপ্ত করবে৷

মুখ্যমন্ত্রী ন্যাশনাল প্রজেক্ট কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন (এনপিসিসি)-এর চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর মনোহর কুমারের সাথে বৈঠক করেছেন৷ বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী সীমান্তে বিশেষ করে ত্রিপুরার ইন্টার্ন সেক্টরে কাঁটাতারের বেড় নির্মাণের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেন৷ তিনি বিষয়টি মিশন মুডে নেওয়ার জন্য এনপিসিসি’র সিএমডিকে বলেছেন৷ এনপিসিসি-র সিএমডি-ও এই কাজটি মিশন মুডে নেওয়া হবে এবং খুব দ্রুততার সাথে তা শেষ করা হবে বলে মুখ্যমন্ত্রীকে আশ্বাস দিয়েছেন৷

মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এছাড়াও সড়ক নির্মাণের কাজ এবং ত্রিপুরার কিছু অংশে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কাজ শেষ করার বিষয়ে এনবিসিসি লিমিটেডের আধিকারিকদের সাথে বৈঠক করেন৷ বৈঠকে এনবিসিসি’র আধিকারিকদের পক্ষে নেতৃত্ব দেন সংস্থার চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড অনুপ কুমার মিত্তল৷ মুখ্যমন্ত্রী ধীর গতিতে কাজ চলার বিষয়টি প্রতিনিধি দলের সামনে উত্থাপন করেন এবং রাজ্যে তাদের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য বলেন৷ যে সমস্ত প্রকল্প হেভি ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন লিমিটেড (এইচ ই সি এল) আগে করেছে এবং তা এখন এনবিসিসি হাতে নিয়ছে তা নিয়েও বৈঠকে পর্যালোচনা করা হয়৷ রাজ্যের সড়ক এবং সীমান্তে বেড়া দেওয়ার কাজ দ্রুত শেষ করা হবে বলে ড মিত্তল বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীকে আশ্বাস দিয়েছেন৷ ড মিত্তল আরও জানান, এর আগে এইচ ই সি এল-কে দেওয়া হয়েছিল এরকম বকেয়া পড়ে থাকা ৫০ শতাংশেরও বেশি প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে এবং ২০১৯ সালের মার্চ মাসের মধ্যেই এগুলির নির্মাণ কাজ শেষ  হবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ তিনি ত্রিপুরায় বিশ্বমানের পরিকাঠামো নির্মাণে এনবিসিসি গঠনমূলক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখবে বলেও মুখ্যমন্ত্রীকে আশ্বাস দিয়েছেন৷মুখ্যমন্ত্রী এদিন পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রকের আধিকারিকদের সঙ্গেও বৈঠক করেন৷ রাজ্যের সর্বত্র উপযুক্ত বেনিফিসিয়ারিরা যাতে প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনার আওতায় রান্নার গ্যাসের সংযোগ পেতে পারেন সেজন্য গ্যাস সংযোগ দেওয়ার কাজ দ্রুত শেষ করতে মুখ্যমন্ত্রী আধিকারিকদের বলেছেন৷ এই প্রকল্প যথাযথ বাস্তবায়িত হলে ত্রিপুরায় নারী শক্তি অনেক বেশি উপকৃত হবেন বলে মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন৷ এখানে উল্লেখ্য, বিপ্লব কুমার দেবের নেতৃত্বে নতুন সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে ইতিমধ্যেই ত্রিপুরায় দেড় লক্ষ গ্যাস সংযোগ প্রদান করা হয়েছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *