নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১১ মে ৷৷ রাজ্যে সরকারী জমি দখল করে গড়ে তোলা পার্টি অফিসগুলি গুড়িয়ে দিচ্ছে প্রশাসন৷ তাই, আলোচনা ছাড়া

উচ্ছেদ হলে ত্রিপুরা স্তব্দ করে দেওয়া হুমকি দিয়েছে কংগ্রেস৷ এই ইস্যুতে শুক্রবার মঠচৌমুহনীতে পথ অবরোধও করেছে কংগ্রেস৷ এদিন সাংবাদিক সম্মলনে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিন্হা জানিয়েছেন, শনিবার সদর মহকুমা প্রশাসনের সাথে পার্টি অফিস উচ্ছেদ ইস্যুতে আলোচনা হবে৷ এই প্রতিশ্রুতিতেই এদিন অবরোধ প্রতাহ্যার করা হয়েছে৷ সাথে যোগ করেন, রাজ্যে অরাজকতা এবং অপশাসনের বিরুদ্ধে প্রদেশ কংগ্রেস আগামী ১৭মে বৈঠক করবে৷ ওই দিন আগরতলায় প্রদেশ কংগ্রেস আক্রোশ র্যালি সংগঠিত করবে৷
বীরজিৎবাবুর কথায়, বিরোধীদলের রাজনীতি করার যেমন অধিকার রয়েছে তেমনিই পার্টি অফিস গড়ে তোলাও গণতন্ত্রেরই অঙ্গ৷ কংগ্রেস দেশে একটি প্রাচীন দল৷ স্বাভাবিক ভাবেই রাজ্যেও প্রাচীন দল হিসেবে পরিচিত কংগ্রেস৷ ফলে, এ রাজ্যে কংগ্রেসের এবং তার শাখা সংগঠনের বহু পুরানো অফিসঘর রয়েছে৷ ওই পুরোনো অফিসেও উচ্ছেদের নোটিশ দেওয়া হচ্ছে৷ তাঁর বক্তব্য, জমির নথিঁতে গড়মিল থাকতেই পারে৷ কিন্তু আত্মপক্ষ সমর্থন ছাড়াই উচ্ছেদ অভিযান রাজ্য সরকারের স্বৈরাচারি সিদ্ধান্তের পরিচয় দিচ্ছে৷ তাঁর কথায়, জমির নথিঁ সংশোধনেরও আইন রয়েছে৷ কিন্তু সেই পথে না হেঁটে বিরোধীদলের সাথে কোনও আলোচনা ছাড়াই পার্টি অফিস গুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে৷ এরই প্রতিবাদে এদিন মঠচোমুহনীতে কংগ্রেস অবরোধ করেছে বলে জানান বীরজিৎ সিনহা৷ তিনি বলেন, প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধের পর ডিসিএম এই ইস্যুতে আলোচনার প্রতিশ্রুতি দেন৷ শনিবার সদর মহকুমা শাসকের অফিসে এ বিষয়ে আলোচনা হবে৷ তিনি হুমকির সুরে জানান, আলোচনা ছাড়া কংগ্রেসের কোন পার্টি অফিস উচ্ছেদ হলে ত্রিপুরা স্তব্ধ করে দেওয়া হবে৷ প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে উচ্ছেদ অভিযান আটকানো হবে৷
বীরজিৎবাবু এদিন বলেন, অতীতেও উন্নয়নের জন্য বহু বাড়িঘর উচ্ছেদ করা হয়েছে৷ কিন্তু উচ্ছেদ অভিযানের পূর্বে ঐ পরিবারদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করা হতো৷ কিন্তু হাওড়ার পারে ১৩ বস্তিবাসী পরিবারকে বিকল্প ব্যবস্থা না করেই উচ্ছেদের নোটিশ ধরিয়েছে জেলা প্রশাসন৷ রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তকে অমানবিক বলে বিঁধেছেন বীরজিৎ সিনহা৷ তাঁর কথায়, নতুন সরকারের জমানায় রাজ্যে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা চলছে৷ তিস্তর পঞ্চায়েত সহ নির্বাচিত সংস্থাগুলিতে জোর করে পদত্যাগ করানো হচ্ছে৷ গ্রামেগঞ্জে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে৷ তাঁর কটাক্ষ, পূর্বতন সরকারের আমলে রাজনৈতিক কারনে অর্থনৈতিক অবরোধ করা হয়েছিল বলে ভেবেছিলাম৷ কিন্তু এখন কেন্দ্র ও রাজ্যে একই দলের সরকার হওয়া সত্বেও গ্রামেগঞ্জে হাহাকার মেনে নেওয়া যায়না৷ তিনি বিদ্রুপ করে বলেন, সম্প্রতি শরিক দলেও বিবাদ দেখা দিয়েছে৷ তাঁদের মধ্যে ঝামেলার কারণে রাস্তা অবরোধ হয়েছে৷ তাঁর দাবি, রাজ্যে এক অরাজকতার পরিবেশ তৈরি হয়েছে৷ এজন্যই কংগ্রেস আক্রোশ র্যালির সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷
কংগ্রেস মুখ্যপাত্র তাপস দের কথায়, বর্তমান সরকার জনস্বার্থ বিরোধী কাজ করছে৷ কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল রায়ের বক্তব্য, বর্তমান সরকারের শাসন ইংরেজ আমলের রাজত্বকেও হার মানাচ্ছে৷
এদিকে, বিশালগড় কংগ্রেসের পার্টি অফিস ভাঙ্গার প্রতিবাদে এক বিক্ষোভ মিছিল ও সভা করল কংগ্রেস৷ দলের স্থানীয় নেতা জয়দুল হোসেনের নেতৃত্বে হয় এই বিক্ষোভ মিছিল৷ মিছিলে অংশ নেয় শতাধিক কর্মী সমর্থক৷ মিছিলটি দুর্গানগর বাজার পরিক্রমা করে শেষ পথসভায় মিলিত হয়৷ শুক্রবার বিকাল তিনটায় শুরু হয় মিছিল৷ সভায় বক্তব্য রাখেন কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী জয়দুল হুসেন, ব্লক যুব কংগ্রেস সভাপতি জেমস হক এবং জেলা কংগ্রেস নেতা সুধীর দেবনাথ৷ কংগ্রেস নেতা জয়দুল হুসেন বলেন অগণতান্ত্রিক ভাবে রাজনীতি করতে গিয়ে দুর্গানগর কংগ্রেস ভবনটি ভাঙ্গা হয়েছে৷ তবে প্রশাসন জানায়, পার্টি অফিসগুলি ভাঙ্গার আগে দলীয় নেতাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ অবশেষে বাধ্য হয়ে প্রশাসন হস্তক্ষেপ করেন৷