নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৭ এপ্রিল৷৷ সরকারী হাসপাতালগুলিতে বিনামূল্যে ওষুধ দেওয়ার সিদ্ধান্ত শুধু কাগজেপত্রেই সীমাবদ্ধ ছিল৷ বাস্তব হল, রোগীদের ওষুধ দোকান থেকেই কিনতে হতো৷ এই ব্যবস্থার পরিবর্তনে কঠোর হয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রী সুদীপ রায় বর্মণ৷ সূত্রের খবর, দুই দফায় জি বি হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে রোগীদের ওষুধ সরবরাহের বিষয়ে সমস্ত খোঁজখবর নিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী৷ তাতে তিনি জানতে পেরেছেন, হাসপাতালের স্টোরে ওষুধ থাকা সত্বেও রোগীদের দোকান থেকে কিনতে হচ্ছে৷ সূত্রের দাবি, ওষুধ কেলেংকারির হদিশ পেয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী৷ তাই তিনি খুব শীঘ্রই জি বি হাসপাতালের স্টোরে অডিটের ব্যবস্থা করবেন৷ এদিকে, আগামী ছয় মাসের মধ্যে জি বি হাসপাতালে বাইপাস সার্জারি হোক, সেই লক্ষ্যে চেষ্টা চালিয়েছে রাজ্য সরকার৷ সূত্রের খবর, কার্ডিয়াক সার্জন সহ আট জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই জারি করবে স্বাস্থ্য দপ্তর৷
সূত্রের খবর, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন, স্বাস্থ্য অধিকর্তার অফিসকে অর্থ বরাদ্দ করা হয় জি বি হাসপাতাল সহ রাজ্যের সমস্ত হাসপাতালে ওষুধ সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য৷ শুধু তাই নয়, রাজ্য সরকার হাসপাতাল সুপারকেও পৃথকভাবে অর্থ বরাদ্দ করে থাকে৷ যদি স্টোরে ওষুধ মজুত না থাকে, তাহলে দোকান থেকে কিনে রোগীকে দেওয়ার জন্য৷ পূর্বতন সরকারের আমলেই হাসপাতালগুলিতে ভর্তি রোগীদের সমস্ত ওষুধ রাজ্য সরকারের তরফে বিনামূল্যে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু, তা শুধুই কাগজেপত্রে সীমাবদ্ধ রয়ে গিয়েছে৷
জি বি হাসপাতালে ভর্তি প্রত্যেক রোগীকে দোকান থেকে ওষুধ কিনে আনতে হচ্ছে৷ সূত্রের খবর, হাসপাতালের স্টোরে প্রয়োজনীয় ওষুধ মজুত রাখা এবং রোগীদের সরবরাহ করার বিষয়ে অনিয়মের জের স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হয়েছেন৷ হাসপাতাল সুপারকে ডেকে এনে এর কৈফিয়ত চেয়েছেন৷ সূত্রের দাবি, প্রতিটি ওয়ার্ডে ওষুধ রাখার কোন ব্যবস্থা নেই কেন তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চেয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী৷ ২৪ ঘন্টা ফার্মেসি কেন চালু রাখা হচ্ছে না, তাও জানতে চেয়েছেন তিনি৷ এসমস্ত বিষয়ে কিছু জটিলতা উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে জবাব দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ৷ কিন্তু, জবাব সন্তোষজনক নয় বলে দাবি সূত্রের৷
সূত্রের কথায়, প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে ফ্রিজ এবং ওষুধ রাখার জন্য নির্দিষ্ট র্যাক তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী৷ হাসপাতালে ভর্তি রোগীকে বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ সুনিশ্চিত করার জন্য বলেছেন তিনি৷ তাতে প্রয়োজনে যদি ওষুধ মজুত না থাকে, তাহলে হাসপাতালের সুপারের ফান্ড ব্যবহার করে দোকান থেকে কিনে দিতে বলেছেন তিনি৷ শুধু জি বি হাসপাতাল নয়, সারা রাজ্যে সমস্ত হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি রোগীদের বিনামূল্যে ওষুধ দেওয়ার বিষয়টি সুনিশ্চিত করার জন্য স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রী৷
সূত্রের দাবি, হাসপাতালে ওষুধ সরবরাহকে ঘিরে বড়ধরনের কেলেংকারী লুকিয়ে রয়েছে, তা আঁচ করতে পেরেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী৷ তাই, শীঘ্রই হাসপাতালের স্টোরে অডিটের ব্যবস্থা করছেন তিনি৷
এদিকে, আগামী ছয় মাসের মধ্যে জি বি হাসপাতালে বাইপাস সার্জারী হোক চাইছে রাজ্য সরকার৷ এর জন্য, অত্যাধুনিক ক্যাথ ল্যাব তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে৷ সূত্রের খবর, স্বাস্থ্য দপ্তর বহির্রাজ্য থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আনতে চলেছে৷ সে মোতাবেক ৮ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই জারি করবে স্বাস্থ্য দপ্তর৷ তাঁদের মধ্যে ২ জন কার্ডিয়াক সার্জনও রয়েছেন৷ বাকিরা হলেন, ২ জন নিউরো সার্জন, ২ জন নেফরোলজিষ্ট, ১ জন ইউরোলজিষ্ট এবং ১ জন অঙ্কো সার্জন৷