নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৭ এপ্রিল৷৷ রাজ্যে ক্ষমতার পালাবাদল হওয়ার পর তথা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর নির্বাচনোত্তর সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটে চলেছে বলে দাবি করেছে সিপিএম৷ দলের অভিযোগ নতুন সরকারের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব শান্তি রক্ষার যে আহ্বান রেখেছেন তা বাস্তবে উধাও৷ সিপিএমের তরফ থেকে শনিবার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জিরানীয়া মহকুমায় প্রতিদিনই শাসক দলেরই দুর্বৃত্তদের দ্বারা সি পি আই (এম) কর্মী সমর্থক সহ সাধারণ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন৷ এক কথায় গুন্ডারাজ কায়েম হয়েছে৷ দলমত নির্বিশেষে সকল অংশের মানুষই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন৷ মুখ্যমন্ত্রীর শান্তির বার্তা বাস্তবে উধাও৷ মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া শান্তি রক্ষার আহ্বানকে নিজ দলের দুর্বৃত্তরাই পাত্তা দিচ্ছেন না৷ প্রতিদিন একের পর এক ঘটনাগুলি তাই প্রমাণ করছে৷
গত ৬ এপ্রিল রাত ৯টা নাগাদ জিরানীয় মহকুমার রানীরবাজার ঘোড়ামারায় নিজ বাড়িতে শাসকদলের দুর্বৃত্তদের দ্বারা মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হন রানীরবাজার পুর পরিষদের চতুর্থশ্রেণীর কর্মচারী, সিপিআই(এম) দরদী সাধনা দেবনাথ৷ দুসৃকতিকারীরা সাধনা দেবনাথকে ঘর থেকে টেনে হিচড়ে বাইরে এনে এলোপাথারি ভাবে লাঠি, রড ইত্যাদি দিয়ে মারধর করে৷ মারাত্বক জখম অবস্থায় শ্রীমতি দেবনাথ প্রাণ রক্ষায় বাড়ির বেড়া ভেঙ্গে দৌড়ে রাস্তার পাশে আসার পর এলাকার কছুি লোকজন তাকে রক্ষায় এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে রাণীরবাজার হাসপাতালে নিয়ে যান৷ তার মাথা ফেটে যায় এবং শরীরের সর্বত্র আঘাতের চিহ্ণ রয়েছে৷ আঘাত গুরুতর হওয়ায় রাতেই জিবি হাসপাতালে পাঠানো হয়৷ তার মাথায় সাতটি সেলাই লেগেছে৷
৭ এপ্রিল সকালে পার্টি নেতৃত্ব তথা প্রাক্তন মন্ত্রী মানিক দে, পশ্চিম জেলা সম্পাদক পবিত্র কর, সাংসদ শংকর দত্ত, জিরানীয়া মহকুমা সম্পাদক মধুসুধন দাস, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য তপন দাস, নারী নেত্রী কৃষ্ণা রক্ষিত সহ অন্যান্য হাসপাতালে গিয়ে সাধনা দেবনাথকে দেখেন এবং তার চিকিৎসা বিষয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের সাথে কথা বলেন৷ নেতৃবৃন্দ তার পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলে৷
৭ এপ্রিল সকাল ১০টা নাগাদ জিরানীয়াতে শাসক দলের কতিপয় দুর্বৃত্তদের দ্বারা ডি ডাব্লিও এস দপ্তরের এস ডি ও অফিসে সরকারী কর্মচারী হিসাবে নিজ কর্মস্থলে কাজ করতে গেলে রাজুবর হক আক্রান্ত হয়৷ তাকে প্রচন্ড মারধর করা হয়৷ তার সহকর্মীরা (কর্মচারী) তাকে এগিয়ে এসে রক্ষা করে৷ প্রচন্ড আহত অবস্থায় দপ্তরের এস ডি ও সহ সহকর্মীরা (কর্মচারী) জিরানীয়া থেকে রানীরবাজার হাসপাতালে নিয়ে আসেন৷ পরবর্তী সময় তার পরিবারের লোকজন তার পরিক্ষা নিরিক্ষা করার জন্য আগরতলা চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন৷
গত ৫ এপ্রিল জিরানীয়া নোয়াবাদী বিদ্যাসাগরে পার্টি কর্মী রতন মিঞা ও কৃপেশ দেবনাথকে বিজেপি দুর্বৃত্তকারীরা মারধর করে ও সিপিআই(এম) করা যাবে না বলে হুমকি দেয়৷ ৬ এপ্রিল জিরানীয়াতে পার্টি কর্মী সুভাষ দাসকে মারধর করা হয়৷ ৭ এপ্রিল রাণিরবাজার হাসপাতাল চৌমুহনী পার্টি কর্মী কৃষ্ণ দেবনাথকে মারধর করা হয়৷
সিপিআইএম পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা ও জিরানীয়া মহকুমা কমিটি শাসক দলের দুর্বৃত্তদের (বিজেপি) হিংস্র আক্রমণের ও সন্ত্রাসের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি৷ পার্টি শাসকদলের লাগামহীন সন্ত্রাস বন্ধে এবং শান্তির পরিবেশ পুনঃস্থাপনে রাজ্য সরকার এবং সন্ত্রাসের সাথে যুক্ত দুর্বৃত্তদের শাস্তি দিতে পুলিশ প্রশাসনকে দৃড় কার্যকারী ভূমিকা দিতে দাবী জানাচ্ছে৷