নিজস্ব প্রতিনিধি, বক্সনগর/উদয়পুর,১ জানুয়ারি৷৷ স্ত্রীকে দা দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে খুন করে ঘরে ফাঁসীতে আত্মঘাতী স্বামী৷ রোমহর্যক ঘটনাটি ঘটে সোমবার ভোরে কমলচৌড়া থানাধীন রহিমপুর পূর্ব পাড়ার ৪ নং ওয়ার্ড এলাকায়৷ জানা গিয়েছে, জাকির হুসেন (২৮) স্ত্রী রিমা আক্তার (২২)কে নৃশংসভাবে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছে৷ ইংরেজী নতুন বছরের সকালে মাতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত হয় ৮ মাসের শিশু সন্তান৷
বর্ষবিদায় শেষে নতুনের আনন্দে মাতোয়ারা সবাই, কিন্তু গোটা রহিমপুড়জুড়ে বিষাদের কালো ছায়া৷ সাত সকালে ৮ মাসের সোনালি আক্তার ঘরের মধ্যে অনবরত চিৎকার করছিল৷ বাড়িতে অন্য কারোর কোন সাড়া শব্দও মিলছিল না৷ স্থানীয় মানুষজন ছুটে এসেছেন৷ এসে দেখেন ঘরের মধ্যে পড়ে রয়েছে রিমা আক্তারের রক্তাক্ত মৃতদেহ৷ পাশেই ঘরের তীরে ঝুলে রয়েছে জাকির হুসেনের মৃতদেহ৷ সঙ্গে সঙ্গেই খবর দেওয়া হয় পুলিশকে৷ ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়ে দিয়েছে৷ রিমা আখতারের মৃতদেহে অনেকগুলি আঘাতের চিহ্ণ মিলেছে৷ পাশাপাশি জাকির হুসেনের হাতেও রক্তের দাগ ছিল৷ তাতেই আশঙ্কা করা হচ্ছে জাকির রিমাকে খুন করেছে৷ এদিন, সকালে মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে৷ গোটা গ্রামের লোক শোকাহত৷ পুলিশ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পর নিহতদের আত্মীয়দের হাতে তুলে দিয়েছে৷ অন্যদিকে, আট মাসের শিশু সন্তানকে প্রতিবেশী এক মহিলার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে রাখা হয়েছে৷ শিশুটি অনবরত কান্নাকাটি করছে৷
নববর্ষের আনন্দে যখন সবাই আনন্দে মাতোয়ারা, ঠিক সেই সময়ে মা-বাবার কোল ফিরে পেতে চার মাসের এক শিশু কন্যা চিৎকার করছে পরিত্যাক্ত ঝুপঝাড়ে৷ তার চিৎকারে এক পথচারি দাঁড়িয়ে পরে৷ দেখতে পেল রাস্তার পাশেই শিশুটি চিৎকার করছে৷ খবর দেওয়া হয় চাইল্ডলাইনে৷ পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে চাইল্ডলাইনের কর্মীরা৷ নতুন দুটি তুয়ালে দিয়ে শিশু কন্যাটিকে বুকে তুলে নিল চাইল্ড লাইনের কর্মীরা৷ প্রচন্ড শীতে থড়থড় করে কাঁপছিল শিশুটি৷ ঘটনা উদয়পুরের অমরসাগরের পূর্ব-উত্তর পাড়ে৷ শিশুটির গায়ে একটা নিমা পড়ানো ছিল৷ কোন পাষন্ড একাজ করছে তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ৷ তবে শিশু কন্যাটির পাশেই পাওয়া গেছে একটি পলিও কার্ড৷ ঐ কার্ডে নাম লেখা আছে পূর্ণী বেগম৷ নামটা শুনলেই বোঝা যায়, কতইনা আদর করে মা-বাবা নামটি রেখেছিল৷ মা আরশা বিবি৷ বয়স ত্রিশ৷ শিশুটির বাবার নাম রতন মিঞা৷ ঠিকানা মাতা বাড়ি৷ শিশুটির জন্মের তারিখ ১৩/৮/২০১৭ইং৷ প্রশ্ণ হল মাত্র চার মাস আট দিনের এই শিশু কন্যাটিকে কে বা কারা এখানে ফেলে গেল৷ কে বা কারা সেই পাষন্ড? শিশুটি ডাক্তারী পরক্ষীর পর উদয়পুরের শিশুগৃহে পাঠানো হয়েছে৷ চাইল্ড লাইন ও পুলিশ পলিও কার্ডের সূত্র ধরে মা-বাবার খোঁজ চালিয়ে যাচ্ছে৷ সন্দেহ করা হচ্ছে এটাকি পাচার করার চেষ্টায় ব্যার্থ হয়ে পাচার কারীরা ফেলে গেছে? না ক্ষুদার জ্বালা নিবৃত্তকরতে না পেরে অভাবের তাড়নায় মা-বাবা এই জায়গায় ফেলে গেছে৷ দ্বিতীয়টাই হতে পারে, কেননা যেখানে শিশুটি পাওয়া গেছে সেখান থেকে শিশু গৃহের দূরত্ব মাত্র একশ মিটার হবে৷ এখন দেখা যাক তদন্তে কি বেড়িয়ে আসে৷ সে দিকেই নজর সবার৷ যদিও পুলিশ পোলিও কার্ডে উল্লেখ করা নাম ঠিকানা অনুযায়ী শিশুটির মা বাবার সন্ধানে খোঁজ নিয়েছেন৷ কিন্তু, সর্বশেষ প্রাপ্ত সংবাদে জানা গিয়েছে সেই ঠিকানাটি পুলিশ খোঁজে বের করতে পারেনি৷ চার মাসের শিশু সন্তানের কান্নায় রীতিমতো চাইল্ড লাইনের কর্মীরা উদ্বিগ্ণ৷