আগরতলা, ১১ ডিসেম্বর : প্রেমের সূত্রে বিয়ে, ছয় বছরের দাম্পত্য জীবন এবং দুই সন্তানের মা–বাবা এর মধ্যেই তীব্র অশান্তির জেরে ভাঙনের পথে যাত্রাপুরের এক পরিবারের সংসার। স্বামী–স্ত্রীর পারস্পরিক অভিযোগে পরিস্থিতি জটিল হওয়ায় বিষয়টি এখন সালিশি সভা থেকে আদালত এবং থানায় গড়িয়েছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, যাত্রাপুর থানাধীন বাঁশপুকুর বড়খলা এলাকার মাফিজুল মিয়া ২০২০ সালের মার্চ মাসে মেলাঘর থানার বানিয়াছড়া বরডেপার এলাকার কুলসুম বিবিকে প্রেমের সম্পর্কের ভিত্তিতে বিয়ে করেন। শুরুতে থাকার পর, স্ত্রীর বাপের বাড়ির লোকজন এ বিয়ে মেনে নেয়নি বলেই দাবি স্বামীর।
বিয়ের তিন বছর পর কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে বহিরাজ্যে যান মাফিজুল, পরে স্ত্রীর পরামর্শে মালদ্বীপে কাজ করতে যান। বিদেশ যাওয়ার পর স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে আসেন। মাফিজুলের দাবি এরপর সামাজিক মাধ্যমে স্ত্রীর বিভিন্ন ভিডিও পোস্ট করা এবং অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা নিয়ে তাদের দাম্পত্যে অশান্তি দেখা দেয়। এ বিষয়ে কথা বলতেই দাম্পত্যে বিরোধ চরমে ওঠে বলে জানান তিনি।
পরিবারের দ্বন্দ্ব মীমাংসায় স্থানীয়ভাবে এক সালিশি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কুলসুম বিবি দাম্পত্যে ফিরে যেতে অনীহা প্রকাশ করেন বলে দাবি পক্ষের একাংশের। পরে পারস্পরিক সম্মতিতে কোর্টে গিয়ে বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে কাগজপত্রে সই দিতে স্বামী পিছিয়ে যান বলে অভিযোগ উঠেছে।
পরিস্থিতি আরও জটিল হয় যখন মাফিজুল মিয়া অভিযোগ করেন, বিদেশে থাকার সময় তার উপার্জিত প্রায় ১০ লক্ষ টাকার হিসাব তিনি পাচ্ছেন না এবং স্ত্রী ওই অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে দাবি করেন। এ ঘটনায় তিনি মেলাঘর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ঘটনার বিষয়ে কুলসুম বিবির প্রতিক্রিয়া বা তার পরিবারের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগটি তদন্তাধীন এবং উভয় পক্ষের বক্তব্য সংগ্রহ করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দাম্পত্য সম্পর্কের টানাপোড়েন সামাজিক মাধ্যম ও আর্থিক বিরোধের কারণে চরমে উঠছে বলেই স্থানীয় মহলের অভিমত। তদন্তের পরেই প্রকৃত ঘটনার বিস্তারিত পরিষ্কার হবে।

