পানাজি, ৮ ডিসেম্বর : গোয়ায় আরপোরার বার্চ বাই রোমিও লেন নাইটক্লাবে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ২৫ জন নিহত হয়েছে, যার মধ্যে দিল্লির করওয়াল নগরের একটি পরিবারের চার সদস্যও রয়েছে। এই পরিবারটি আগুনে নিহত হয়, যেখানে এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীর জীবন বাঁচালেও দুই সন্তানের সঙ্গে নিজেও প্রাণ হারান।
রবিবার গভীর রাতে ঘটে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি। অগ্নিকাণ্ডের সময় একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা দেখায় যে, একটি ইলেকট্রনিক ফায়ারক্র্যাকার নাচের পারফরম্যান্সের সময় সেট করা হয়, এবং সেই স্পার্কটি বাঁশের ছাদে পৌঁছালে একে একে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনার পরের একাধিক ভিডিওতে নাচ ও সঙ্গীত পরিবেশনকারী ব্যক্তিরা আতঙ্কিত হয়ে দৌড়াচ্ছেন, এবং আগুনের তীব্রতা দেখতে পাওয়া যায়। অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের মধ্যে ৫ জন বিদেশি পর্যটকও রয়েছেন।
ঘটনার পর, নাইটক্লাবের এক মালিক সাওরভ লুথ্রা গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি জারি করেন, যেখানে তিনি এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “ম্যানেজমেন্ট এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো মানুষদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করছে এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য প্রস্তুত।”
গোয়া পুলিশ জানিয়েছে যে, এই অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রবিবার চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়, এবং সোমবার দিল্লিতে একজন অপারেশন ম্যানেজারকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন ক্লাবের চিফ জেনারেল ম্যানেজার রাজীব মোদক, জেনারেল ম্যানেজার বিবেক সিং, বার ম্যানেজার রাজীব সিংহানিয়া, গেট ম্যানেজার রিয়াংশু ঠাকুর এবং অপারেশন ম্যানেজার ভারত সিং।
গোয়ার নাইটক্লাবের আগুনে নিহত হয়েছেন ২২ বছর বয়সী ডিগান্ত পাটির, একজন শেফ, যিনি আসামের ধেমাজি জেলার বাসিন্দা ছিলেন। ডিগান্ত গত এক বছর ধরে গোয়ায় কাজের জন্য গিয়েছিলেন। এখন তার পরিবার মৃিতদেহটি আসামে নিয়ে যাওয়ার জন্য সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছে, কারণ তাদের কাছে সেই খরচ জোগানোর মতো পর্যাপ্ত সামর্থ্য নেই।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এক টুইটে বলেন, “গোয়ায় অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারানো ২৫ জনের মধ্যে ডিগান্ত পাটিরসহ তিনজন অসমবাসী রয়েছেন। আমি তাদের পরিবারদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।”
গোয়া পুলিশ তদন্তের অংশ হিসেবে নাইটক্লাবের মালিকদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। পুলিশ ক্লাবের মালিকদের বিরুদ্ধে লুক-আউট নোটিশ জারি করেছে এবং দাবি করছে যে, এই ক্লাবটির লাইসেন্স প্রদানের সময় প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টেশন পূর্ণ ছিল না।
এদিকে, গোয়া সরকার নাইটক্লাব চেইনের বিরুদ্ধে আরও পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে, যা আগুনের ঘটনার পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে।

