ফিলিপাইন্সের রাষ্ট্রদূতের প্রশংসা: ব্রহ্মোস মোতায়েনের পর ভারত ‘শীর্ষ অংশীদার

ওয়াশিংটন, ১৪ নভেম্বর: যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ফিলিপাইন্সের রাষ্ট্রদূত হোসে ম্যানুয়েল দেল গালেগো রোমুয়ালদেজ ভারত-ফিলিপাইন্স সম্পর্ককে অসাধারণভাবে শক্তিশালী বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, নিউ দিল্লি এখন ম্যানিলার শীর্ষ অংশীদার ও বন্ধুদের অন্যতম।

বুধবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটনে এক বেসরকারি অনুষ্ঠানে রোমুয়ালদেজ ভারতের কাছ থেকে ব্রহ্মোস মিসাইল ক্রয়কে দুই দেশের দৃঢ় প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বাস্তব উদাহরণ বলে উল্লেখ করেন।

রোমুয়ালদেজ বলেন, আমরা এখন ভারতকে আমাদের শীর্ষ অংশীদারদের একজন হিসেবে দেখি। তারা ফিলিপাইন্সকে অত্যন্ত সহযোগিতা করেছে… আমরা ব্রহ্মোসসহ অনেক প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কিনছি এবং প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রেও ভারতের সঙ্গে কাজ করছি।

রাষ্ট্রদূতের এই মন্তব্য আসে কয়েক দিন পরই, যখন ফিলিপাইন মেরিন কর্পস প্রকাশ্যে ভারতের ব্রহ্মোস সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইল সিস্টেম উন্মোচন করে।

২০২২ সালে ভারতের ব্রহ্মোস অ্যারোস্পেসের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ৩৭৫ মিলিয়ন ডলারের এই চুক্তির আওতায় ফিলিপাইন্স ২৯০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম মিসাইল পাচ্ছে। দক্ষিণ চীন সাগরে প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে শোর-বেজড অ্যান্টি-শিপ মিসাইল ব্যাটালিয়ন এই সিস্টেম পরিচালনা করবে।

অনুষ্ঠানে রোমুয়ালদেজ ফিলিপাইন্সের প্রেসিডেন্ট ফের্দিনান্দ মারকোস জুনিয়রের সাম্প্রতিক ভারত সফরকেও “খুব ফলপ্রসূ” বলে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, “আমাদের প্রেসিডেন্ট কিছুদিন আগেই ভারতে রাষ্ট্রীয় সফরে গিয়েছিলেন। এটি অত্যন্ত ফলপ্রসূ ছিল। আমরা ভারতের সঙ্গে আরও কাজ করার অপেক্ষায় আছি।”

মারকোস তার পাঁচ দিনের ভারত সফরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। উভয় পক্ষ বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা ও সামুদ্রিক নিরাপত্তায় সহযোগিতা জোরদার করতে উন্নত কৌশলগত অংশীদারিত্ব ঘোষণা করে।

এছাড়াও উভয় দেশ মহাকাশ গবেষণা, পর্যটন, সংস্কৃতি এবং ডিজিটাল প্রযুক্তিতে সহযোগিতা বিস্তারের সিদ্ধান্ত নেয়। ভারতের সহায়তায় ফিলিপাইন্সের সার্বভৌম ডেটা ক্লাউড ইনফ্রাস্ট্রাকচার স্থাপনে একটি পাইলট প্রকল্প চালু করা হবে। পাশাপাশি ফিলিপাইন্সকে ইনফরমেশন ফিউশন সেন্টার–ইন্ডিয়ান ওশান রিজিয়নে যোগদানের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

দুই দেশ প্রেফারেনশিয়াল ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট নিয়ে আলোচনা শুরু করতে টার্মস অব রেফারেন্সও গৃহীত করেছে।

বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, উভয় দেশই ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি, নিরাপত্তা, সমৃদ্ধি এবং নিয়মভিত্তিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট মারকোস জানান, আমরা একটি মুক্ত ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিকের জন্য ভারতের সঙ্গে কাজ করতে চাই।