আগরতলা, ৪ নভেম্বর : রাজ্যের বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলিতে সম্প্রতি প্রকাশিত প্রথম বর্ষের পরীক্ষার ফলাফলকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজ্যজুড়ে। ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত এই পরীক্ষায় বিপুল সংখ্যক ছাত্রছাত্রী অকৃতকার্য হওয়ায় শিক্ষাঙ্গনে শুরু হয়েছে তীব্র আলোচনা ও সমালোচনা।
বিশেষ করে বিতর্কিত ত্রিপুরা শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজে ১৫০ জন ছাত্রের মধ্যে ৯২ জন অকৃতকার্য হওয়ায় শিক্ষাব্যবস্থার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ছাত্র সমাজ ও অভিভাবক মহল। রাজ্যের সব মেডিকেল কলেজ মিলিয়ে মোট ১৭০ জন ছাত্রছাত্রী অকৃতকার্য হয়েছে বলে জানা গেছে।
এই পরিস্থিতিতে বিষয়টির যথাযথ তদন্তের দাবিতে আজ এসএফআই ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির এক প্রতিনিধি দল রাজ্যের মেডিকেল শিক্ষা অধিকর্তা ডা. এইচ.পি. শর্মার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রতিনিধি দলে ছিলেন এসএফআই রাজ্য সম্পাদক সৃজন দেব, রাজ্য কমিটির সদস্য সৌভিক সেন এবং ছাত্র নেতা রিয়াজ আহমেদ।
এসএফআই-এর পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়েছে— ফলাফলের এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতির কারণ অনুসন্ধানের জন্য একটি বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক। সংগঠনের অভিযোগ, প্রায় কোটি টাকার কোর্স ফি নেওয়া সত্ত্বেও বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলিতে অভিজ্ঞ ফ্যাকাল্টির অভাব এবং পরিকাঠামোগত দুর্বলতা শিক্ষার মানকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে।
এসএফআই নেতারা আরও বলেন, বেসরকারি কলেজগুলিতে অতিরিক্ত ফি-র কারণে প্রকৃত মেধাবী কিন্তু আর্থিকভাবে দুর্বল ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি হতে পারছেন না, ফলে শিক্ষার মান ক্রমশ নিচে নেমে যাচ্ছে।
সংগঠনটি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে রাজ্যের দুই বেসরকারি মেডিকেল কলেজে মেধার ভিত্তিতে ৫০ শতাংশ আসনে সরকারি বেতন কাঠামো চালু করার দাবি জানিয়েছে। এতে গরিব ও মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের সুযোগ বাড়বে, পড়াশোনার মানও উন্নত হবে বলে মত এসএফআই নেতৃত্বের।
এছাড়া যারা পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে, তাদের জন্য সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার আগে বিশেষ ক্লাসের ব্যবস্থা করার আবেদন জানানো হয়েছে সংগঠনের পক্ষ থেকে। অধিকর্তা ডা. এইচ.পি. শর্মা এসএফআই প্রতিনিধিদের আশ্বস্ত করেছেন যে ফলাফলের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মেডিকেল কলেজগুলির কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, প্রয়োজনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং বেতন কাঠামো নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি কমিটি গঠন প্রক্রিয়াধীন।
এসএফআই ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির সভাপতি প্রীতম শীল এবং সম্পাদক সৃজন দেব এক যৌথ বিবৃতিতে জানান, “আমরা চাই রাজ্যে মেডিকেল শিক্ষার মান উন্নত হোক। শিক্ষার্থীদের স্বার্থে সংগঠন ভবিষ্যতেও এই বিষয়ে নজর রাখবে।”

