রায়পুর ,১৭ অক্টোবর: ছত্তিশগড়: বামপন্থী উগ্রপন্থার বিরুদ্ধে ভারতের দীর্ঘদিনের লড়াইয়ে এক বড় সাফল্য মিলল আজ। ছত্তিশগড়ে একযোগে ২০৮ জন নকশালি আত্মসমর্পণ করল সরকারের পুনর্বাসন ও আত্মসমর্পণ নীতির আওতায়। তাদের কাছ থেকে মোট ১৫৩টি আগ্নেয়াস্ত্রও জমা পড়েছে পুলিশের হাতে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে ১১০ জন নারী ও ৯৮ জন পুরুষ রয়েছেন, সকলেই নিষিদ্ধ মাওবাদী সংগঠনের সক্রিয় সদস্য ছিলেন।
সরকারি তথ্যমতে, এই আত্মসমর্পণের ফলে অবুজমাড় অঞ্চল ও উত্তর বস্তার অঞ্চলে নকশাল প্রভাব কার্যত নির্মূল হয়েছে। এখন কেবলমাত্র দক্ষিণ বস্তার এলাকাই নকশালদের শেষ বড় ঘাঁটি হিসেবে রয়ে গেছে।
অস্ত্রভাণ্ডার যা জমা পড়েছে, ১৯টি একে-৪৭ রাইফেল, ১৭টি এসএলআর রাইফেল, ৩৬টি .৩০৩ রাইফেল এবং অন্যান্য বেশ কিছু আগ্নেয়াস্ত্র। বিজেপি নেতা অমিত মালব্য এই ঘটনাকে ছত্তিশগড়ের জন্য ঐতিহাসিক মাইলফলক বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এটি বস্তারের জন্য এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, যারা অস্ত্র ছেড়ে শান্তির পথ বেছে নিচ্ছেন, সরকার তাদের স্বাগত জানাবে। কিন্তু যারা সহিংসতা চালিয়ে যাবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চলবে। তিনি জানান, শুধু ছত্তিশগড় ও মহারাষ্ট্র মিলিয়ে গত দুই দিনে ২৫৮ জন সক্রিয় মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছেন।
ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেব সাই এই ঘটনাকে “এক মোড় ঘোরানো মুহূর্ত” বলে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন, উত্তর বস্তার ও অবুজমাড় এখন আনুষ্ঠানিকভাবে নকশালমুক্ত এলাকা।
তিনি আরও জানান, সরকারের নকশালি আত্মসমর্পণ ও পুনর্বাসন নীতি ২০২৫ এবং নিয়াদ নেলা নার প্রকল্পের সফল প্রয়োগের ফলেই এই সাফল্য এসেছে। এছাড়া, এখন পর্যন্ত মোট ৬৪টি নিরাপত্তা ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে নকশাল-প্রবণ এলাকায়, যার ফলে গ্রামে গ্রামে শান্তি ফিরেছে এবং উন্নয়নের পথ প্রশস্ত হয়েছে।
এই গণ আত্মসমর্পণ ছত্তিশগড়ের আদিবাসী অঞ্চলগুলিতে দীর্ঘদিনের নকশালি সহিংসতার অবসানের সম্ভাবনা তৈরি করেছে। উন্নয়ন, শান্তি এবং নিরাপত্তার নতুন অধ্যায়ের সূচনা ঘটেছে বলেই মনে করছে প্রশাসন ও বিশেষজ্ঞ মহল। সরকার আশা করছে, বাকি অংশেও অচিরেই এই ধারা অব্যাহত থাকবে।

