২০২৬ এশিয়ান গেমস ও অন্যান্য বহু-খেলাধুলা প্রতিযোগিতার জন্য নতুন নির্বাচন নীতি ঘোষণা করল ক্রীড়ামন্ত্রক

নয়াদিল্লি, ২৪ সেপ্টেম্বর: আসন্ন ২০২৬ এশিয়ান গেমস এবং অন্যান্য বহু-খেলাধুলা প্রতিযোগিতায় ভারতের প্রতিনিধিত্ব নিয়ে বড়সড় সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় সরকার। ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ মন্ত্রক বুধবার একটি নতুন নির্বাচন নীতি ঘোষণা করেছে, যার মূল লক্ষ্য—শুধুমাত্র পদক জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে এমন ক্রীড়াবিদ ও দলগুলিকে ভারতীয় দলে অন্তর্ভুক্ত করা।

মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই নতুন নির্বাচন কাঠামো পরিমাপযোগ্য ও অপরিমাপযোগ্য ক্রীড়া ইভেন্টের জন্য স্পষ্ট মানদণ্ড নির্ধারণ করে দিচ্ছে, যাতে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার বজায় থাকে।

যেসব ইভেন্টে ক্রীড়াপারফরম্যান্স পরিমাপযোগ্য (যেমন অ্যাথলেটিকস, সাঁতার ইত্যাদি), সেখানে ২০২৬ এশিয়ান গেমসের আগে ১২ মাসের মধ্যে, আন্তর্জাতিক ফেডারেশন অনুমোদিত প্রতিযোগিতায়, ক্রীড়াবিদকে গতবারের এশিয়ান গেমসের ষষ্ঠ স্থানাধিকারীর পারফরম্যান্সের সমান বা তার চেয়ে ভালো ফল করতে হবে। যদি ওই ইভেন্ট পূর্ববর্তী গেমসে না থাকে, তবে সিনিয়র এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফলাফল বিবেচনা করা হবে।

যেসব খেলায় পারফরম্যান্স নির্ধারণ সংখ্যায় সম্ভব নয় (যেমন বক্সিং, কুস্তি, ব্যাডমিন্টন ইত্যাদি), সেক্ষেত্রে গত এক বছরে অনুষ্ঠিত সিনিয়র এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে শীর্ষ ছয়ের মধ্যে থাকতে হবে, অথবা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে ভারতীয় ক্রীড়াবিদদের এশিয়ান দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষ ছয়ে থাকতে হবে। প্রয়োজনে সমমানের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার ফলাফল ধরা হবে।

হকি, ফুটবল, রিলে বা ডাবলস ধরনের দলগত ইভেন্টের জন্য শর্ত হল—দলকে সিনিয়র এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে শীর্ষ আটে থাকতে হবে, অথবা আন্তর্জাতিক র‌্যাঙ্কিং অনুযায়ী এশিয়ান দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষ আটে থাকতে হবে। যদি র‌্যাঙ্কিং বা চ্যাম্পিয়নশিপ না থাকে, তবে সমতুল্য আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা বিবেচনা করা হবে।

মন্ত্রক জানিয়েছে, বিশেষজ্ঞদের সুপারিশের ভিত্তিতে কিছু ক্ষেত্রে ছাড়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, তবে শুধুমাত্র অংশগ্রহণের জন্য অনুমোদন দেওয়া হবে না, যদি পদক জয়ের সম্ভাবনা না থাকে। নিম্নমানের বা অনিয়মিতভাবে আয়োজিত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করলে, সেই চেষ্টাকে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে বলেও মন্ত্রক সতর্ক করেছে।

এছাড়াও স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র সরকারি ব্যয়ে অনুমোদিত ক্রীড়াবিদ, কোচ ও সহায়ক কর্মীরাই ভারতীয় দলের অংশ হবেন। কোনও অতিরিক্ত অংশগ্রহণকারীকে নিজ খরচে পাঠানোর সুযোগও দেওয়া হবে না।

এই নতুন নীতিকে ক্রীড়া বিশ্লেষকরা ভারতের আন্তর্জাতিক ক্রীড়া রূপান্তরের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করছেন। এর মাধ্যমে ফেডারেশনগুলোর উপর নজরদারি বৃদ্ধি, এবং পারফরম্যান্স ভিত্তিক নির্বাচন প্রক্রিয়া চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।