আগরতলা, ২৩ সেপ্টেম্বর : মঙ্গলবার বিধানসভা অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে বিধায়ক গোপাল চন্দ্র রায়ের এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় জানিয়েছেন রাজ্য সরকার সরকারি কর্মচারীদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদানে বদ্ধপরিকর। কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে ডিএ প্রদানের ব্যবধান কমানোর জন্য সরকার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিধায়ক গোপাল চন্দ্র রায় এর আনীত তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় বিধানসভায় জানিয়েছেন, রাজ্যে বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ভিশন ডকুমেন্ট এর সাথে সঙ্গতি রেখে ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ২.২৫ থেকে বাড়িয়ে ২.৫৭ পর্যন্ত করা হয়েছে, যাতে করে কর্মচারীদের বেসিক পে কেন্দ্রীয় সরকারের সপ্তম পে কমিশনের অনুরূপ করা যায়। ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ২.২৫ থেকে বাড়িয়ে ২.৫৭ করার ফলে কর্মচারিদের বেসিক ১৪.২২ শতাংশ বৃদ্ধি হয়।
একজন কর্মচারির বেসিক যদি ১০০০ টাকা হয়, তবে ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ২.২৫ এর পর তার বেসিক হবে ২২৫০ টাকা। ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ২.৫৭ লাগু হওয়ার পরে বেসিক বৃদ্ধি পেয়ে হয়ে যাবে ২৫৭০ টাকা। এতে কর্মচারিদের বেসিকও ১৪.২২ শতাংশ বৃদ্ধি হয় এবং প্রতিবার ডিএ বৃদ্ধির পরে এই বর্ধিত বেসিক এর কারনে কর্মচারিরা উপকৃত হচ্ছেন। যেখানে কয়েকটি রাজ্যে করোনাকালীন পরিস্থিতিতে রাজ্য কর্মচারীদের জন্য কোন ডিএ দেওয়া হয়নি আমাদের রাজ্য সরকার সেই পরিস্থিতিতে কর্মচারীদের জন্য ডি.এ এবং পেনশনভোগীদের জন্য ডি.আর ঘোষণা করেছিল।
এছাড়া করোনা-কালীন পরিস্থিতিতেও কর্মচারীদের জন্য ক্যাশ ইন লিউ অফ এফটিসি চালু করা হয়েছিল।পূর্বে, একাধিক পদ মিলিয়ে পাঁচ বছর বা তার বেশি সময় ধরে চাকরি করা ফিক্সড পে কর্মচারীদের নিয়মিত করার কোনও নীতি ছিল না। ফলস্বরূপ, বিভিন্ন পদ মিলিয়ে ৮, ৯, এমনকি ১০ বছর চাকরি করেও কোনো কোনো কর্মচারী ফিক্সড পে থেকে যেতেন। বর্তমান সরকার এখন এই নীতি সংশোধন করেছে। সংশোধিত নীতির অধীনে, একজন ফিক্সড পে কর্মচারী একাধিক পদ মিলিয়ে পাঁচ বছর ধরে একটানা চাকরি সম্পন্ন করলেই নিয়মিত হওয়ার যোগ্য হবেন।সরকার আসার পর আইনি জটিলতায় অনেকদিন ধরে অনেক কর্মচারী সুবিধা থেকে বঞ্ছিত ছিল।
পদোন্নতি দেওয়ার জন্য এডহক প্রমোশন পলিসি চালু করা হয়েছে এবং একটা বিরাট অংশের কর্মচারী এই সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন। সরকার সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া বিবেচনা করে নিয়মিত পদোন্নতি কিভাবে দেওয়া যেতে পারে তার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং অদূর ভবিষ্যতে একটি সমাধান সুত্র বেরিয়ে আসবে বলে আশা করা যায়। এছাড়া মুখ্যমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনার সুবিধা যাতে সমস্ত সরকারি কর্মচারি পেতে পারেন তার জন্যও একটি পলিসি তৈরি হচ্ছে। সরকার টিএসআর জওয়ানদের অবসরের বয়স ৫৮ বছর থেকে বাড়িয়ে ৬০ বছর করেছে। টিএসআর ও পুলিশের জন্য বরাদ্দ রেশন মানি ও ড্রেস অ্যালাউন্স বৃদ্ধি করা হয়েছে। সরকার হোমগার্ডদের মাসিক পেনশন তিনগুণ বৃদ্ধি করেছে। ৭৫০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকা করা হয়েছে।রাজ্য সরকার ডিএ-এর ব্যবধান যাতে ধীরে ধীরে কমানো যায় তার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।তাছাড়া সরকার সরকারি কর্মচারীদের জন্য ফেস্টিভ্যাল এডভান্স ৫০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০০০০ টাকা করেছে। তৎসঙ্গে কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ ফেস্টিবল গ্রান্ড ২০১৮ সালের তুলনায় এই বছরে তিন গুণ বৃদ্ধি করেছে।

