গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শক্তিশালী করতে প্রতিষ্ঠানগত সমন্বয়, আর্থিক জবাবদিহিতা ও প্রযুক্তি নির্ভর শাসনের গুরুত্ব : লোকসভা স্পীকার শ্রী ওম বিরলা

মুম্বাই, ২৪ জুন : মহারাষ্ট্র বিধান ভবনে সোমবার থেকে শুরু হওয়া ‘জাতীয় সম্মেলন অব চেয়ারপার্সনস অফ এস্টিমেটস কমিটিজ অব পার্লামেন্ট অ্যান্ড স্টেট/ইউনিয়ন টেরিটোরি লেজিসলেটরস’ আজ দুই দিনব্যাপী কর্মসূচির সমাপ্তি ঘটে। বিদায়কালীন সেশনে লোকসভা স্পীকার শ্রী ওম বিরলা প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা দেন।
শ্রী বিরলা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া আরও শক্তিশালী করার জন্য প্রতিষ্ঠানগত সমন্বয়, আর্থিক জবাবদিহিতা ও প্রযুক্তি নির্ভর শাসনের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, সরকারের বিভিন্ন শাখার মধ্যে সমন্বয় থাকা প্রয়োজন যাতে নীতি সুচারুভাবে বাস্তবায়িত হয় এবং নাগরিককেন্দ্রিক প্রশাসন নিশ্চিত হয়। আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বজায় রাখতে জনস্বার্থে অর্থের সুষ্ঠু ব্যবহার অপরিহার্য।
স্পীকার আরও জানান, সংসদীয় কমিটিগুলো সরকার বিরোধী নয় বরং সরকারকে সহায়তা ও সংশোধনী পরামর্শ দিয়ে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক শাসন নিশ্চিত করে। তিনি কেন্দ্র ও রাজ্য পর্যায়ের এস্টিমেটস কমিটির মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর আহ্বান জানান।
সরকারি ব্যয়ের তদারকিতে আধুনিক প্রযুক্তির ভূমিকা নিয়ে শ্রী বিরলা বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ডেটা অ্যানালিটিক্সের ব্যবহার তদারকিকে আরও কার্যকর ও নির্ভুল করতে পারে। কমিটিগুলোকে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ও মানবসম্পদ দিয়ে শক্তিশালী করতে হবে যাতে অর্থের যথার্থ ব্যবহার নিশ্চিত হয় এবং অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা বজায় থাকে।
তিনি জনগণের সরাসরি সংযোগ থাকার কারণে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করেন এবং এস্টিমেটস কমিটিকে প্রতি রুপি জনগণের কল্যাণে ব্যয় নিশ্চিত করার দায়িত্ব দেন। তিনি বলেন, শুধু ব্যয়ের তদারকি নয়, বরং কল্যাণমূলক কর্মসূচিগুলো প্রাসঙ্গিক, নাগালের মধ্যে এবং কার্যকর কিনা তা নিশ্চিত করাই কমিটির মূল কাজ।
টেকনোলজি নির্ভর শাসনের সফল উদাহরণ হিসেবে ডিরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফারের কথা তুলে ধরে স্পীকার বলেন, এটি দুর্নীতি কমিয়ে সুবিধাভোগীদের কাছে সঠিক সময়ে সাহায্য পৌঁছাতে সহায়ক হয়েছে।
সম্মেলনে স্পীকার বলেন, এই প্ল্যাটফর্ম রাজ্য ও কেন্দ্রীয় আইনসভাগুলোর মধ্যে আর্থিক শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রতি ঐক্যবদ্ধ অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। তিনি কমিটির কাজ সম্পর্কে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কমিটির জন্যও অনুরূপ সম্মেলন আয়োজনের পরামর্শ দেন।
সম্মেলনে ২৩টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের এস্টিমেটস কমিটির চেয়ারপার্সন এবং সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনে ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব পেশ ও একমতসত্যে গৃহীত হয়, যা ভবিষ্যতে কমিটির কার্যকারিতা বৃদ্ধির রোডম্যাপ হিসেবে কাজ করবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন মহারাষ্ট্রের গভর্নর সিপি রাধাকৃষ্ণন, রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান শ্রী হরিবংশ, সংসদের এস্টিমেটস কমিটির চেয়ারপার্সন শ্রী সঞ্জয় জৈসওয়াল, মহারাষ্ট্র বিধানসভার স্পীকার শ্রী রাহুল নরওয়েকর, ডেপুটি স্পীকার অন্না দাদু বাঁসোডে, মহারাষ্ট্র বিধান পরিষদের চেয়ারম্যান শ্রী রাম শিন্দে সহ অন্যান্য বিশিষ্টজনেরা।
এই সম্মেলনের মূল বিষয়বস্তু ছিল—‘এস্টিমেটস কমিটির ভূমিকা: বাজেট অনুমানের কার্যকর মনিটরিং এবং প্রশাসনে অর্থনৈতিক ও দক্ষতা নিশ্চিতকরণ’। ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এই সম্মেলনে দেশের বৃহত্তম গণতন্ত্রে আর্থিক তদারকি ও প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধির উপায় নিয়ে আলোচনা হয়।