প্রশাসনিক প্রশিক্ষণে পরিবর্তনশীল বাস্তবতার প্রতিফলন জরুরি : ড. জিতেন্দ্র সিংহ

নয়াদিল্লি, ৩০ এপ্রিল : পরিবর্তনশীল শাসনব্যবস্থার প্রেক্ষিতে পাঠ্যক্রমে গতিশীলতা এবং আধুনিক প্রযুক্তির সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ওপর জোর দিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ড. জিতেন্দ্র সিংহ। বুধবার ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন(আইআইপিএ)-এ আয়োজিত “অ্যাডভান্সড প্রফেশনাল প্রোগ্রাম ইন পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন”(এপিপিপিএ)-এর ৫০তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি আইআইপিএ-র এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করছেন। মন্ত্রী বলেন, “আজ যা প্রাসঙ্গিক, আগামীকাল তা নাও হতে পারে। প্রতিদিন কিছু না কিছু শেখার প্রয়োজন, তবেই আমরা প্রাসঙ্গিক থাকতে পারি।”

তিনি জানান, প্রযুক্তির দ্রুত বিকাশ—বিশেষত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং কোয়ান্টাম কম্পিউটিং-এর মতো ক্ষেত্রগুলিতে সরকারি কর্মচারীদের নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করছে। সেই কারণে প্রশাসনিক প্রশিক্ষণেও প্রয়োজন ধারাবাহিক পরিবর্তন ও অভিযোজন। ড. জিতেন্দ্র সিংহ বলেন, এপিপিপিএ এখন আর শুধুমাত্র প্রথাগত পাঠ্যক্রমে আবদ্ধ নেই। এখন এর অন্তর্ভুক্ত হয়েছে আকাঙ্ক্ষিত জেলা পরিদর্শন, প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠান, গ্রামীণ ও নগরোন্নয়ন প্রকল্প, এবং ভারতের প্রাচীন জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্র। তিনি আরও বলেন, “আত্মনির্ভর ভারত” ও প্রশাসনিক সংস্কারের মতো বিষয়েরও অন্তর্ভুক্তি ঘটেছে এই কোর্সে।

একটি সরল অথচ বিস্তৃত ভাষণে তিনি বলেন, “প্রযুক্তির এই অগ্রগতির যুগে নীতিনির্ধারক এবং প্রশাসকদের নিরবচ্ছিন্ন শিক্ষার প্রক্রিয়ায় থাকতে হবে। সম্ভবত ৫০তম ব্যাচের অনেকেই ৫৫তম ব্যাচে আবার ‘রিফ্রেশার কোর্স’ করতে ফিরবেন,”—মন্তব্য করে তিনি হাস্যরসের ছলে বাস্তব দিকটি তুলে ধরেন।

ড. সিংহ বলেন, “আজকের সেনা অফিসারদের শুধু সীমান্তে নয়, মিডিয়া ব্রিফিং, সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ এবং দুর্যোগের সময় যৌথ প্রতিক্রিয়া দেওয়ার প্রয়োজন হয়।” তাই প্রশাসনিক কোর্সে যোগাযোগ দক্ষতা বাড়ানোর উপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত। তিনি উপস্থিত প্রশিক্ষণার্থীদের ভারত২০৪৭-এর ভবিষ্যৎ নকশা তৈরিতে অবদান রাখতে আহ্বান জানান। বলেন, “২০২৫-এর দৃষ্টিভঙ্গিতে আমরা ২০৪৭ কল্পনা করতে পারি না। পরিবর্তন এত দ্রুত হচ্ছে যে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে তাকানোই এখন জরুরি।”

মন্ত্রী আইআইপিএ-র উদ্যোগে নির্বাচিত সরপঞ্চ ও পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের প্রশিক্ষণ শুরুর প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “উচ্চপদস্থ আমলাদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি এখন আইআইপিএ গ্রামীণ স্তরে ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করছে, যা প্রশংসনীয়।” কোর্স পরিচালকদের মধ্যে প্রফেসর নীতু জৈন ও ড. সাকেত বিহারী-কে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানিয়ে, মন্ত্রী প্রশিক্ষণার্থীদের চ্যালেঞ্জপূর্ণ সময়ে কোর্স সম্পন্ন করার জন্য অভিনন্দন জানান।

মন্ত্রী জানান, ডিপার্টমেন্ট অফ পার্সোনেল অ্যান্ড ট্রেনিং (DoPT)-এর অনুমোদনে আগামী ৫১তম ব্যাচ থেকে কোর্স ফি বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে নতুন শিক্ষা মডিউল ও এক্সপোজার ভিজিট অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হবে। শেষে তিনি বলেন, “এই কোর্স শেষ হলেও, গত দশ মাসে তৈরি হওয়া বন্ধন আজীবনের জন্য।” আইআইপিএ-র ডিরেক্টর জেনারেল এস. এন. ত্রিপাঠী তার প্রারম্ভিক ভাষণে সংস্থার বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেন।