ইউএসএ ও ব্রিটেনের যৌথ বিমান হামলা: লক্ষ্য ইয়েমেনের রাজধানী সানার নিকটবর্তী হুথি ড্রোন ঘাঁটি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ৩০ এপ্রিল:এক গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অভিযানের অংশ হিসেবে, যুক্তরাষ্ট্র (ইউএসএ) ও যুক্তরাজ্য (ব্রিটেন) যৌথভাবে ইয়েমেনের রাজধানী সানার উপকণ্ঠে একটি শক্তিশালী বিমান হামলা পরিচালনা করেছে। এই আঘাত হুথি সশস্ত্র গোষ্ঠীর ড্রোন উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত একাধিক স্থাপনায় চালানো হয়।

ব্রিটেনের গোয়েন্দা সংস্থাগুলির মতে, এই ড্রোনগুলোরই ব্যবহার করা হয়েছিল লাল সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজের ওপর হামলার জন্য। তাই আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও বাণিজ্যিক পথ রক্ষার স্বার্থে এই হামলাকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

রাতভর দক্ষিণ সানায় হামলা, তথ্য জানাল যুক্তরাজ্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়
ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, এই যৌথ হামলাগুলি সানার দক্ষিণ অংশে রাতভর চলেছে। মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে জানানো হয়, তারা হামলার সময় বেসামরিক নাগরিকদের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেছে। যদিও, এখন পর্যন্ত নির্দিষ্ট কোনো ক্ষয়ক্ষতির সংখ্যা বা বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ধারাবাহিক অভিযান
যুক্তরাষ্ট্র ১৫ মার্চ থেকে হুথি লক্ষ্যবস্তুর বিরুদ্ধে তার সামরিক অভিযান আবার শুরু করে এবং এর পর থেকে একাধিক স্ট্রাইক পরিচালনা করেছে। এই যৌথ হামলা ছিল তারই ধারাবাহিক অংশ। তবে এই নির্দিষ্ট অভিযানের ওপর এখনো হুথিদের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

ট্রাম্পের নির্দেশনায় আক্রমণের তীব্রতা
মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে, প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামরিক বাহিনীকে হুথি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে “চূড়ান্ত ও শক্তিশালী” স্ট্রাইক চালানোর নির্দেশ দেন। তার নির্দেশনার পর থেকে, আমেরিকার পক্ষ থেকে পরিচালিত বিমান হামলাগুলি ইয়েমেনে এক হাজারেরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। এতে হুথি যোদ্ধা ও নেতাদের হত্যা করে তাদের সামরিক ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে দুর্বল করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও উদ্বেগ
এই ধরনের হামলা আন্তর্জাতিক মহলে নানা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। একদিকে আন্তর্জাতিক জলপথের নিরাপত্তা বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তা, অন্যদিকে ইয়েমেনের সংকট আরও ঘনীভূত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মানবাধিকার সংগঠনগুলি।

এই অভিযান হুথি গোষ্ঠীর উপর আন্তর্জাতিক চাপ আরও বাড়াবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে ইয়েমেনের চলমান গৃহযুদ্ধ ও মানবিক সংকটের নিরসনে এই সামরিক পদক্ষেপ কতটা কার্যকর হবে, তা সময়ই বলবে।