কুমারঘাট, ২১ ফেব্রুয়ারি : গজরাজে এসে গুজরাটে কনে নিয়ে গেলেন বর। বিয়ের এই বিরল দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করলেন অনেকেই। ত্রিপুরার কুমারঘাটে হাল আমলে হাতীর পিঠে চড়ে বরের বিয়ের ঘটনা যেন জীবন্ত করলো অতীতের রাজকীয় বিয়েকে। গজরাজে চেপে একেবারে রাজকীয় কায়দায় বিয়ে করতে গেলো বর। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে সাধারন মানুষ উপভোগ করলেন পুরনো আমলের রজকীয় বিয়ের সেই দৃশ্য। এসব এখন অতীত হওয়াতে সতিশ সিং আর প্রিয়াঙ্কার এই বিয়ে খবরের প্রতিবাদ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাজ্যের ঊনকোটি জেলার কুমারঘাটে হওয়া এই বিয়েকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের উৎসুকতাও ব্যাপক। গুজরাটী বর সতীশ কুমার রাজপুতের সঙ্গে বিয়ে হয় ঊনকোটি জেলার ফটিকরায় বিধানসভার বাঙালী কন্যা প্রিয়াঙ্কা ঘোষের। নববধু প্রিয়াঙ্কা গুজরাটে একটি বেসরকারী কোম্পানিতে চাকুরি করার সুবাদে পরিচয় হয় দুজনের। তাদের মধ্যে হয় ভালোবাসার সম্পর্ক। এরপরই একেবারে দেশের দুই প্রান্তের দুজন পারিবারিক সম্মতিতে বসলেন বিয়ের পিড়ীতে। আর জীবন সাথীকে নিয়ে যেতে একেবারে রাজকীয়ভাবে বিয়েবাড়ী পৌঁছালো হিন্দীভাষী দামান।
হাতীর পিঠে চড়ে পুরনো সেই রাজকীয় কায়দায় শশুর বাড়ীতে পা রাখলেন বর। বরের পেছন পেছন হাল আমলের ব্যাণ্ডপার্টী আর ডিজের তালে পায়ে হেটে বিয়েবাড়ী গেলেন বরযাত্রীরাও। দুজনের শুভ পরিণয়ে গজরাজকেও এদিন সাজানো হয়েছিলো অপরূপ সাজে। আর সজ্জিত সেই হাতী বরকে নিজের পিঠে চড়িয়ে পৌছে দিয়ে আসলো একেবারে ছাদনা তলায়। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে এই দৃশ্য দেখে পুরনো আমলের সেই রাজা বাদশাদের বিয়ের কাহিনী যেমন খুঁজে পেলেন প্রবীনরা তেমনি নবিনদের কাছেও এছিলো এক অন্য আকর্ষন।
বর সতিশ কুমার রাজপুত জানালেন, মেয়ের পরিবারের লোকজন চাইছিলেন মেয়ের জন্মস্থানে হোক বিয়ের অনুষ্ঠান তাই বরযাত্রীদের সঙ্গে নিয়ে ভারতের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌছলেন বর। এতো দূরে বিয়েতে আসা তাদের জন্য কোন বড়ো বিষয় ছিলোনা বলেই জানালো বর। পরে বিয়ে বাড়ীর ছাদনা তলায় সাতপাকে বাঁধা পড়লেন বরকণে। উভয় পক্ষের লোকজনও চুটিয়ে মাতলেন বিয়ের আনন্দে। প্রাচীনকালে নববধূকে পালকিতে চাপিয়ে ঘরে তোলা বা হাতীর পিঠে চড়ে বরের বিয়ে করতে যাওয়ার মতো বিষয় এখন আর চোখে পড়েনা কারোরই। স্বাভাবিকভাবেই কুমারঘাটের মতো ছোট্ট শহরে হাতীর পিঠে চড়ে বরের বিয়ে করতে যাওয়ার বিষয়টি মুহূর্তেই হুহু করে ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমে। হাতীর পিঠে বরের যাত্রার এই বিরল ঘটনাটি বর্তমান সময়ে বেশ সাড়া ফেলেছে শহরে।