BRAKING NEWS

শারদোৎসবে মেতে উঠেছে করিমগঞ্জ শহর, জেলায় নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপনে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্ৰশাসনের, সীমান্তে নজরদারি বিএসএফ-এর

।। স্নিগ্ধা দাস ।।করিমগঞ্জ (অসম), ৯ অক্টোবর (হি.স.) : শারদোৎসবে মেতে উঠেছে সীমান্ত শহর করিমগঞ্জ। গোটা শহর সেজে উঠেছে পঞ্চমীর সন্ধ্যা থেকেই। আজ (বুধবার) মহাষষ্ঠী। মহাষষ্ঠী মানে সপরিবারে উমার পিতৃগৃহে আগমনের দিন। আজ শেষ-বিকাল থেকেই প্যান্ডালে প্যান্ডালে শুরু হয়েছে বোধনের পুজো৷ ঢাকের বোল, কাঁসর ঘণ্টা ও মন্ত্রোচ্চারণের ধ্বনীতে মুখরিত পুজো মণ্ডপগুলি। 

করিমগঞ্জে এবার বেশ কয়েকটি বিগ বাজেটের পুজো রয়েছে। তার মধ্যে শহরতলির পূজা, ক্লাব অগ্রগামী, মধ্য করিমগঞ্জ, ইয়ুথ ইউনিটি, ক্লাব শতভিষা, রয়েল স্টার, ইয়ুথ কর্ণার, স্টেশন রোড-রায়নগর কলোনি-ইঅ্যান্ডডি কলোনি সর্বজনীন দুর্গাপূজা, শ্রীনগর কলোনি সর্বজনীন দুর্গাপূজা, রামকৃষ্ণ মিশনের পূজা অন্যতম। 

জেলা সদরে ১১০টির বেশি ছোট-বড় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত তিন বছর থেকে তুলনামূলকভাবে এবার সংখ্যা বেড়েছে। গোটা জেলায় ৫১৭টি সর্বজনীন পূজা থাকলেও সীমান্ত শহরে রয়েছে ৫৬টি। ভারত-বাংলা সীমান্তে কাঁটাতারের বাইরে বিদ্যমান নো-মেন্স ল্যান্ড মানিকপুর এবং গোবিন্দপুর গ্রামে এবার মাতৃ আরাধনার আয়োজন করা হয়েছে জোরদারভাবে। 

করিমগঞ্জে নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপনের জন্য সবধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। দুই প্লাটুন অতিরিক্ত ব্যাটালিয়ন মোতায়েন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে শহরের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশের পক্ষ থেকে সিসিটিভি ক্যামেরা সংস্থাপন করা হয়েছে। জনসাধারণ যাতে শারদোৎসব সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে উপভোগ করতে পারেন, তার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে। 

এদিকে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে দুর্গোৎসব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন করিমগঞ্জের জেলাশাসক প্রদীপকুমার দ্বিবেদী। পাশাপাশি প্লাস্টিকমুক্ত উৎসব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। জেলাবাসীকে শারদীয়ার শুভেচ্ছা জানিয়ে জেলাশাসক বলেন, শান্তিপূর্ণ ও আনন্দের সঙ্গে মহোৎসব পালন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। 

পুলিশ সুপার পার্থপ্রতিম দাস জানান, শারদীয় দুর্গোৎসবে শান্তি-শৃঙ্খলা ও উৎসবের আমেজ বজায় রাখতে করিমগঞ্জ পুলিশ মাঠে রয়েছে। পাশাপাশি অতিরিক্ত ভাবে ২ প্লাটুন কমান্ডো ব্যাটালিয়নের জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছে। অ্যক্টিভ রয়েছে সেকেন্ড-লাইন-ডিফেন্স। তাছাড়া বিএসএফ রয়েছে সীমান্ত প্রহরায়। 

সীমান্ত এলাকায় যাতে পূজার আনন্দে কোনও ভাটা না পড়ে, তার জন্য বিএসএফ এবং সেকেন্ড-লাইন-ডিফেন্সকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সুপার বলেন, উত্তর ত্রিপুরার কদমতলা এবং সম্প্রতি সংঘটিত বাগারগুলের ঘটনায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক। ধর্মনগরে উত্তর ত্রিপুরা জেলা পুলিশ সুপার ভানুপদ চক্রবর্তী সহ সব মসজিদ কমিটিকে নিয়ে গঠিত শান্তি কমিটির সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। ফলে বিগত দিনের ঘটনায় কোনও ধরনের প্রভাব পড়বে না করিমগঞ্জের দুর্গাপূজায়, বলেন পুলিশ সুপার।

এদিকে করিমগঞ্জের পুরপতি রবীন্দ্রচন্দ্র দেব জানান, মাতৃ আরাধনায় সীমান্ত শহর প্রস্তুত। পুরসভার পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিমা নিরঞ্জনের ক্ষেত্রে কুশিয়ারা নদীর বিসর্জনঘাটে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে বিসর্জনের ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা না হয়।

অন্যদিকে করিমগঞ্জে ভারত-বাংলাদেশে সীমান্তে কর্তব্যরত বিএসএফ-এর ১৬ নম্বর ব্যাটালিয়নের কমাডেন্ট সঞ্জয় কুমার বলেন, মানিকপুর এবং গোবিন্দপুর সীমান্তে দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে বাড়তি সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকবে। কাঁটাতারের এপারে ছাউনি ছাড়া ওপারে টহল থাকবে বিএসএফ জওয়ানদের। এককথায় সীমান্তে কড়া নজরদারি রেখেছে বিএসএফ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *