আগরতলা, ৫ সেপ্টেম্বর : টানা তৃতীয়বার নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে কেন্দ্রে সরকার গঠন হওয়ায় ত্রিপুরা বিধানসভা অভিনন্দন প্রস্তাব এনেছে। অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন ওই প্রস্তাব পাঠ করার আগেই বিরোধিতায় সরব হয়েছে বিরোধীরা। বিরোধীদের আপত্তি অগ্রাহ্য করে অধ্যক্ষ ওই প্রস্তাব পাঠ শুরু করতেই সিপিএম ও কংগ্রেসের বিধায়করা ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বিরোধীদের বিক্ষোভের পাল্টা ট্রেজারি বেঞ্চের সদ্যসরা ওই প্রস্তাবের সমর্থনে স্লোগান দিতে থাকেন। ফলে, মুহুর্তের মধ্যেই হৈ হট্টগোলের জেরে বিধানসভা উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। অধ্যক্ষ বিরোধীদের বিক্ষোভের মাঝেই ওই প্রস্তাব পাঠ চালিয়ে যান। ফলে, বিরোধীরা প্রতিবাদে অধিবেশন ওয়াকআউট করে বেরিয়ে যান। এদিন, বিরোধীদের বিক্ষোভ চলাকালীন ট্রেজারি বেঞ্চের সদ্যসদের মোদী স্লোগানে অধিবেশন কক্ষ প্রতিধ্বনিত হয়েছে।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থী, সংসদে নির্বাচিত সদস্য-সদস্যা এবং সমস্ত ভোটারদের অভিনন্দন জানিয়ে আজ রাজ্য বিধানসভায় একটি অভিনন্দনমূলক প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন প্রস্তাবটি পাঠ করে শোনানোর পর এটি ধুনি ভোটে গৃহীত হয়েছে। প্রস্তাবটিতে অধ্যক্ষ উল্লেখ করেন, ভারতবর্ষের গণতন্ত্রের অন্যতম প্রধান উৎসব হিসাবে পরিচিত অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে ৫৪২টি আসনের জন্য ভোট নেওয়া হয়। জুন মাসে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে ৬৫.৭৯ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। রাজ্য বিধানসভা সমস্ত ভোটার, লোকসভার সমস্ত নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং নবগঠিত কেন্দ্রীয় সরকারকে আন্তরিক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন জানাচ্ছে। অভিনন্দন বার্তায় বলা হয়েছে অষ্ঠাদশ লোকসভা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে উপর্যুপরী তিনবার স্থায়ী এবং শক্তিশালী এনডিএ সরকার গঠিত হয়েছে। এবিষয়ে দেশের নির্বাচকমন্ডলী আরও একবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বের প্রতি তাদের আস্থা জ্ঞাপন করেছেন।
প্রসঙ্গত, ত্রিপুরা বিধানসভায় বাদল অধিবেশন বুধবার ৪ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে। ওইদিনেই টানা তৃতীয়বার মোদীর নেতৃত্বে কেন্দ্রে সরকার গঠন হওয়ায় ত্রিপুরা বিধানসভা অভিনন্দন প্রস্তাব আনতে চেয়েছিল। কিন্তু, শোক প্রস্তাব পাঠ হওয়ায় কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মনের আগ্রহে অভিনন্দন প্রস্তাব পাঠ করা হয় নি। আজ প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষে অধ্যক্ষ ওই অভিনন্দন প্রস্তাব পাঠ করতে গেলেই আপত্তি জানান বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী। তাঁর বক্তব্য, ওই অভিনন্দন প্রস্তাবের বিষয়ে বিজনেস এডভাইজারি কমিটির বৈঠকে আলোচনা হয় নি। এমনকি, এবিষয়ে বিরোধীদের সাথে আলোচনা এবং সম্মতি নেওয়া হয় নি। তাঁর সাফ কথা, অভিনন্দন প্রস্তাবের বক্তব্যের সাথে আমরা একমত নই। ফলে, সর্বসম্মতি ছাড়া ওই প্রস্তাব প্রেরণ উচিত হবে না।
কিন্তু, অধ্যক্ষ বিরোধীদের আপত্তি গ্রাহ্য করেন নি এবং অভিনন্দন প্রস্তাব পাঠ শুরু করে দেন। তাতে, বিরোধীরা চটে লাল হয়ে যান এবং বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। একসময় তাঁরা ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। অন্যদিকে, ট্রেজারি বেঞ্চের সদস্যরাও মোদী স্লোগানে মুখরিত হন। সাংসদ বিষয়ক মন্ত্রী রতন লাল নাথ সুর চড়িয়ে বলেন, কেন্দ্রে টানা তৃতীয়বার নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে সরকার গঠন এক ঐতিহাসিক ঘটনা। এদিকে, বিরোধীরা বিক্ষোভ দেখিয়ে বিধানসভা থেকে ওয়াকআউট করেন।