গুয়াহাটি, ১ সেপ্টেম্বর (হি.স.) : ‘অসম তৃণমূল কংগ্রেস ’ (টিএমসি)-এর সভাপতি রিপুন বরা আজ রবিবার দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। রাজ্যসভার প্রাক্তন সদস্য তথা ভারতীয় জাতীয় কংগ্রসের অসম প্রদেশ কমিটির প্রাক্তন সভাপতি তথা অসমের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী রিপুনের দাবি, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের মানুষ এই দল (টিএমসি)-কে পশ্চিমবঙ্গের একটি ‘আঞ্চলিক দল’ হিসেবে বিবেচনা করেন। এই দলকে অসম তথা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মানুষ গ্রহণ করতে রাজি নন।
‘অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস’-এর সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে প্রেরিত পদত্যাগপত্ৰে রাজ্যসভার প্রাক্তন সদস্য রিপুন বরা লিখেছেন, অসমে টিএমসিকে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে তিনি পার্টি-সুপ্রিমো তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বহু পরামর্শ দিয়েছিলেন, ‘কিন্তু সেগুলি বাস্তবায়িত হয়নি।’ ‘গত দেড় বছর ধরে বহু চেষ্টা করে দলের সুপ্রিমোর সঙ্গে সাক্ষাৎকারের সুযোগ পাইনি।’
দলের সেকেন্ড-ইন চিফের কাছে প্রেরিত পদত্যাগপত্রে রিপুন বরা আরও লিখেছেন, ‘২০২২ সালের এপ্রিলে তৃণমূল কংগ্রেসে (টিএমসি) যোগদানের পর থেকে, আমার দল এবং আমি অসমে দলের কাজ বাড়াতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছি, বিজেপিকে মোকাবিলা করতে টিএমসিকে একটি কার্যকর বিকল্প হিসেবে প্ৰতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেছি। আমাদের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আপনার নেতৃত্বে প্ৰভাবিত হয়ে টিএমসিতে যোগদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এবং আমি এই মিশনে আন্তরিকভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধও ছিলাম।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘‘অসমে টিএমসি-র প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। তবে পশ্চিমবঙ্গের একটি আঞ্চলিক দল হিসেবে টিএমসির উপলব্ধি সহ বেশ কয়েকটি পুনরাবৃত্তিমূলক সমস্যা আমাদের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করেছে। এই উপলব্ধি মোকাবিলা করতে আমরা জাতীয় পর্যায়ে একজন অসমীয়া নেতার প্রয়োজন, টালিগঞ্জে ভারতরত্ন ডক্টর ভূপেন হাজরিকার বাসভবনকে হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করা এবং কোচবিহারের ‘মধুপুর সত্র’ (যেখান থেকে অসমের সর্বশ্রেষ্ঠ সমাজ সংস্কারক মহাপুরুষ শংকরদেব বৈষ্ণব আন্দোলন শুরু করেন)-কে সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে রূপান্তরিত করার মতো বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছিলাম। এই বিষয়গুলি সমাধান করতে আপনার এবং আমাদের প্রধান মমতা দিদির সাথে একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিশ্চিত করার জন্য গত দেড় বছর ধরে বারবার চেষ্টা করা সত্ত্বেও আমি ব্যর্থ হয়েছি।’
‘অসমের জনগণ এমন দলকে মেনে নিতে রাজি নন, যাঁরা অন্য রাজ্যের বলে মনে করেন। এই চ্যালেঞ্জগুলির আলোকে এবং পর্যাপ্ত রেজোলিউশনের অভাবে আজ আমি এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়ে নিজেকে টিএমসি থেকে বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’