আগরতলা, ২৭ আগস্ট : কৃষকদের আয় বৃদ্ধি ও সুস্বাস্থ্যের জন্য / খাদ্যাভাসে অন্যতম ভরসা মিলেট আগরতলা, ২৭ আগস্ট: ভারত সরকারের ‘উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রকে’র (ডোনার) অধীনস্থ কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা “নর্থ-ইস্টার্ন রিজিওনাল এগ্রিকালচারাল মার্কেটিং কর্পোরেশন (নেরাম্যাক) আজ আগরতলার লেম্বুছড়ায় “কৃষি মহাবিদ্যালয়ে” “ভারতে মিলেট বা শ্রীঅন্ন উত্পাদনের প্রচার” শীর্ষক দু’দিনের এক অনুষ্ঠানের সূচনা করেছে। এই অনুষ্ঠানের লক্ষ্য হল, শ্রীঅন্নের উপকারিতা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা এবং কৃষকদের মধ্যে মিলেট চাষে আগ্রহ বৃদ্ধি করা| অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা কৃষকরা ছিলেন|
মিলেট বা শ্রীঅন্ন জাতীয় শস্য একসময় এই অঞ্চলে ফলন হলেও এখন এর চাষ কমে গেছে| অথচ জোয়ার, বাজরা, কাওন শস্য, রাগি ইত্যাদি দানাশস্য শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী| একটা সময় সুষম ও ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাসে এগুলো শামিল ছিল, মাঝে মধ্যে এগুলোর ব্যবহার হত| কিন্তু ক্রমে এর ব্যবহার কমে যাওয়ায়, উত্পাদন বা চাষাবাদেও আগ্রহ কমে গেছে| তাই পুনরায় কৃষকদের মধ্যে এই ধরনের খাদ্যশস্য উত্পাদনে আগ্রহ বৃদ্ধি করার জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো ও কৃষি-বিশেষজ্ঞদের বিভিন্ন পরামর্শ কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে| এর মধ্য দিয়ে কৃষকদের আয় বৃদ্ধি করাও লক্ষ্য|
অনুষ্ঠানের বিভিন্ন বক্তার ভাষণে এই বিষয়টিই উঠে এসেছে| অনুষ্ঠানের শুরুতে মূল বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করেন নেরাম্যাকের এমডি কমোডোর রাজীব অশোক| তিনি শ্রীঅন্নকে খাদ্যাভ্যাসে শামিল করার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর দিকটি তুলে ধরেন| এই স্বাস্থ্যকর বিষয়টির প্রচারের উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, মানুষ এই বিষয়টা বুঝতে পারলে পুনরায় এইসব খাদ্যশস্যের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে|
অনুষ্ঠানে কলেজ অফ ফিসারিজ-এর ডিন অরুণভাই প্যাটেল বলেন, শ্রীঅন্ন শুধুমাত্র চাল ও গমের উপরেই নির্ভরতা কমিয়ে আনবে তা নয়, মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়লে মিলেটের বাজার বৃদ্ধি পাবে| যা আখেরে কৃষকদেরই মুনাফা দেবে| কৃষি কলেজের অধ্যক্ষ ড: দেবাশিস সেন বলেন, এই অঞ্চলের জলবায়ুতে মিলেট শস্য উত্পাদনের ব্যাপক সুযোগ রয়েছে| যে কারণে একসময় এখানে এই ধরনের ফসলের চাষ হত| তিনি কৃষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, পুনরায় এই শস্যের চাষ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কৃষি কলেজ সমস্ত রকম সহায়তা করবে| তিনি নাবার্ডের সঙ্গে মিলেটস নিয়ে গৃহীত প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে বলেন, উত্পাদনের উপর ভিত্তি করে প্রক্রিয়াকরণ ইউনিটগুলির প্রয়োজনীয়তাকে যুক্তিসঙ্গত করার প্রয়োজন রয়েছে|
নাবার্ডের মহাব্যবস্থাপক অনিল এস. কোটমিরে কৃষক ও সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশে বাজরা উত্পাদনের গুরুত্ব সম্পর্কে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি কৃষক ও উদ্যোক্তাদের নিজেদেরকে বাজরা ব্যবহারের গুরুত্ব বোঝার এবং এর মাধ্যমে উত্পাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে অসম, অরুণাচল প্রদেশ এবং ত্রিপুরার মিলেট চাষি এবং উদ্যোক্তা সহ প্রায় দুই শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন। কৃষি কলেজের পক্ষ থেকে মিলেট চাষের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও অন্য সরঞ্জাম প্রদর্শিত হয়|