বন্যায় প্রাথমিক রিপোর্টে বিদ্যুৎ দপ্তরের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২০০-২৫০ কোটি টাকা : সচিব

আগরতলা, ২৬ আগস্ট: রাজ্যে সাম্প্রতিক বন্যায় প্রাথমিক রিপোর্ট অনুসারে বিদ্যুৎ দপ্তরের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২০০-২৫০ কোটি টাকা। পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তরের ক্ষয়ক্ষতি প্রাথমিকভাবে প্রায় ৯৮ কোটি টাকা। এছাড়াও নগর ও শহর এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। আজ মাহকরণে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিদ্যুৎ, নগরোন্নয়ন এবং পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং একথা জানান।

সাংবাদিক সম্মেলনে সচিব জানান, পরবর্তী সময়ে ক্ষয়ক্ষতির পূর্নাঙ্গ মূল্যায়ণ হলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। বিদ্যুৎ দপ্তরের সর্বস্তরের প্রকৌশলী ও কর্মচারীগণ দিনরাত বিদ্যুৎ পরিষেবার পুনরুদ্ধারে নিরলস প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। এর ফলে বিভিন্ন বিদ্যুৎ মহকুমায় এখন পর্যন্ত পুনরুদ্ধারের কাজ গড়ে ৬৭ থেকে ১০০ শতাংশ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে।

তিনি আশা ব্যক্ত করেন আগামী কয়েকদিনের মধ্যে রাজ্যের সব জেলাতে বিদ্যুৎ পরিষেবা পুনরায় চালু করা সম্ভব হবে। সচিব জানান, এখন পর্যন্ত যে সব বিদ্যুৎ মহকুমায় বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু হয়েছে তার একটি তথ্য তুলে ধরেন। অমরপুর, অম্পি ও যতনবাড়িতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ফলে সেইসব জায়গায় বিদ্যুৎ পুনরায় চালু হতে আরও ২/৩ দিন সময় লাগবে। তিনি বলেন, অস্বাভাবিক বৃষ্টির ফলে বন্যায় বিদ্যুৎ দপ্তরের বিদ্যুৎ উৎপাদন সহ বিদ্যুৎ পরিবাহী লাইনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেক স্থানে বিদ্যুৎ পরিবাহী লাইন নষ্ট হয়ে গেছে।

সাংবাদিক সম্মেলনে সচিব জানান, পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তরও জোর কদমে পানীয়জল সরবরাহ অক্ষুন্ন রাখতে নিরলস কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, গভীর নলকূপ, অগভীর নলকূপ, বিভিন্ন উদ্ভাবনী প্রকল্প সমূহের ক্ষতি হয়েছে। পুনরায় এগুলিকে সচল করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে এবং অনেক ক্ষেত্রেই এখন পর্যন্ত জলের উৎসগুলিকে সচল করা সম্ভব হয়েছে বলে সচিব শ্রী সিং সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। ত্রিপুরা জল বোর্ডের প্রকল্পগুলোও কার্যকর হচ্ছে। শ্রী সিং জানান, খোলা জল পরিশোধনের জন্য নিয়ম অনুসারে জলে ফিটকিরির মাত্রা বাড়ানো হয়েছে। তাতে জলের স্বাদ একটু অন্যরকম হলেও ভয়ের বা আতঙ্কের কিছু নেই। রাজ্যের বিভিন্ন নগর ও শহর এলাকায় এখনও ৯১টি ত্রাণ শিবির রয়েছে। সেগুলিতে স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো হচ্ছে। নগর ও শহর এলাকার ড্রেন পরিষ্কার করা হচ্ছে।

সাংবাদিক সম্মেলনে ত্রিপুরা রাজ্যে বিদ্যুৎ নিগম লিমিটেডের এম ডি বিশ্বজিৎ বসু, জল বোর্ডের সিইও রজত পন্থ, বিদ্যুৎ নিগমের জেনারেল ম্যানেজার স্বপন দেববর্মা এবং পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তরের মুখ্য বাস্তুকার শ্যামলাল ভৌমিক উপস্থিত ছিলেন এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের বিভিন্ন তথ্য নিয়ে আলোচনা করেন। সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সমূহে বিদ্যুৎ ও পানীয়জলের সরবরাহ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারে দপ্তরের কাজকর্মের ছবি সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *