নিজস্ব প্রতিনিধি, ধর্মনগর, ৬ নভেম্বর : সামাজিক অবক্ষয় দিনের পর দিন চূড়ান্ত আকার ধারণ করতে শুরু করেছে। মনুষত্ব হারিয়ে গর্ভধারনী মাকে নিজের হাতে খুন করে চূড়ান্ত পৈশাচিকতার পরিচয় দিল ধর্মনগর থানাধীন রাধাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা রাজু দেবনাথ।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, সোমবার সকালে ধর্মনগর থানাধীন রাধাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শান্তি দেবনাথ এর বাড়িতে ইলেকট্রিক বিল দেওয়ার জন্য ইলেকট্রিক বিল মিটার নির্ধারককারী আসে। এসে সে দেখতে পায় শান্তি দেবনাথ এর ঘরের দরজা বন্ধ। ছাপ ছাপ রক্তের দাগ এবং একটা পচা গন্ধ অনুভব করে মিটার নির্ধারককারী বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়।
পাশাপাশি বাড়িগুলিতে গিয়ে এলাকাবাসীদের এই ব্যাপারে সে খবর দেয়। এলাকাবাসীর এর পক্ষ থেকে ধর্মনগর থানায় খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে ধর্মনগর থানার পুলিশ শান্তি দেবনাথ এর বাড়িতে যায়। এলাকাবাসীসহ ধর্মনগর থানার পুলিশ ডাকাডাকি হৈচৈ করলে ঘর থেকে রাজু দেবনাথ (৩০) বেরিয়ে আসে।
ঘরের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় শান্তি দেবনাথের দেহ পড়ে থাকতে সবাই দেখতে পায়। সাথে সাথে পুলিশ রাজু দেবনাথকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিকভাবে শান্তি দেবনাথ এর বাড়িতে ওসি নাড়ুগোপাল দে গেলেও পরবর্তী সময় এলাকায় ছুটে যান ধর্মনগর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দেবাশীষ সাহা এবং ফরেন্সিক টিম।
রাজু দেবনাথ স্বীকার করে শুক্রবার রাতে কুড়াল দিয়ে সে তার মাকে খুন করেছে। বাড়ির মধ্যে একটি গর্ত করেছিল, সে গর্তে তার মার অর্থাৎ শান্তি দেবনাথ এর মৃতদেহ লুকিয়ে রাখবে বলে। কিন্তু উপযুক্ত সময়ের অভাবে সে ঘর থেকে তার মার মৃতদেহ লুকিয়ে রাখার মত সুযোগ পায়নি। শান্তি দেবনাথ এর স্বামী গিতেন্দ্র দেবনাথ আগরতলায় থাকে এবং এক মেয়ে সোমা দেবনাথ হাফলং এ তার শ্বশুর বাড়িতে ছিল।
এলাকাবাসীরা জানায়, এই বাড়িতে শান্তি দেবনাথ এবং তার ছেলে রাজু দেবনাথ এই বাড়িতেই থাকতো। রাজু, প্রায়ই তার মা শান্তি দেবীকে মারধর করত বলে এলাকাবাসীরা জানায়। শান্তি দেবনাথ এর মৃতদেহ আজ ধর্মনগরের উত্তর জেলা হাসপাতালের মর্গে রাখা হবে। আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহ শান্তি দেবনাথ এর স্বামী এবং মেয়ের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
এই ধরনের পৈশাচিক ঘটনায় এলাকাবাসীরা স্তম্ভিত। জন্তু-জানোয়াররাও এই ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারবে কিনা তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সন্দেহের অবকাশ নেই। একটা চূড়ান্ত স্তব্ধতা বিরাজ করছে এলাকা জুড়ে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে।