বেঙ্গালুরু, ২১ অক্টোবর (হি.স.): মহাকাশ বিজ্ঞানের ইতিহাসে নতুন মাইলফলক স্পর্শ করল ভারত। গগনযানের সফল পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো)। অথচ, এ দিন সকালেই শুরুতে থমকে গিয়েছিল গগনযানের পরীক্ষামূলক যাত্রা। শনিবার সকাল ৮টায় অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে গগনযানের যাত্রা শুরু হওয়ার কথা ছিল। পরে নির্ধারিত সময়ের থেকে ৪৫ মিনিট পরে, অর্থাৎ ৮টা ৪৫ মিনিটে গগনযান যাত্রা শুরু করবে বলে জানানো হয়। গগনযানের উৎক্ষেপণ প্রক্রিয়া শুরু হতে যখন মাত্র ৫ সেকেন্ড বাকি, সেই সময় হঠাৎই ইসরোর ‘কাউন্টডাউন ক্লক’-এ লাল কালিতে ভেসে ওঠে ‘হোল্ড’ অর্থাৎ ‘স্থগিত’ শব্দটি। পরে ইসরোর তরফে এক্স হ্যান্ডলে জানানো হয়, যাত্রা স্থগিতের কারণ চিহ্নিত করা গিয়েছে এবং তা সংশোধনও করা হয়েছে। উৎক্ষেপণের পরবর্তী সময় নির্ধারিত করা হয় সকাল ১০টায়। ঘড়ির কাঁটায় সকাল দশটা, তখনই সফল পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করল ভারতের গগনযান।
আপৎকালীন পরিস্থিতিতে মহাকাশচারীরা প্যারাসুটের মাধ্যমে নেমে আসতে পারবেন কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য যে পরীক্ষা করেছিল ইসরো, তা-ও সফল হয়েছে। পরিকল্পনামাফিক গগনযান থেকে বঙ্গোপসাগরে নেমে এসেছে প্যারাসুট। ইসরো জানিয়েছে, পরিকল্পনা অনুযায়ীই সব কিছু ঠিক হয়েছে। শনিবার ইসরোর তরফে প্রথমে জানানো হয়, স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় জ্বালানি থেকে শক্তি উৎপন্ন হয়নি। তাই মসৃণ ভাবে গগনযান উৎক্ষেপণের যে পরিকল্পনা ইসরো করেছিল, তা বাস্তবায়িত হয়নি। ইসরোর চেয়ারম্যান এস সোমনাথ এই প্রসঙ্গে বলেন, “গগনযান নিরাপদে রয়েছে।” সফল উৎক্ষেপণের পর ইসরোর প্রধান এস সোমনাথ বলেছেন, “টিভি-ডি১ মিশনের সফলতা ঘোষণা করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। এই মিশনের উদ্দেশ্য ছিল একটি পরীক্ষামূলক যান প্রদর্শনের মাধ্যমে গগনযান প্রোগ্রামের ক্রু এস্কেপ সিস্টেম প্রদর্শন করা যেখানে যানটি একটি মাক নম্বর পর্যন্ত গিয়েছিল, যা শব্দের গতির থেকে কিছুটা উপরে। সমুদ্রে টাচ-ডাউন সহ পরবর্তী অপারেশনগুলি খুব ভালভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং আমাদের কাছে এই সবের জন্য ডেটার নিশ্চিতকরণ আছে।”
ইসরোর এই সাফল্যে বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই উৎক্ষেপণে ভারতের প্রথম মানব মহাকাশ ফ্লাইট প্রোগ্রামকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেল। ইসরোর বিজ্ঞানীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও।