‘বিদেশ যাচ্ছেন, টেনশন দিতে চাই না’, মুখ্যমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে রাজ্যপাল

কলকাতা, ১১ সেপ্টেম্বর (হি স)। শনিবার মধ্যরাতে রাজ্যপালের জোড়া ‘গোপন চিঠি’ নিয়ে তরজা অব্যাহত। নবান্নে যে খামবন্দি চিঠি পৌঁছেছে এবং যেটি দিল্লিতে পাঠানো হয়েছে, তার বিষয়বস্তু কী? এ নিয়ে কৌতূহল তুঙ্গে।

সোমবার অর্ধদিবস পর্যন্ত তার নিরসন হল না। মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে কী লেখা, তা নিয়ে কী মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হবে, এসব নিয়ে জানতে চাইলে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সাংবাদিকদের জানান, ”মুখ্যমন্ত্রী বিদেশ যাচ্ছেন। এখন তাঁকে টেনশন দিতে চাই না। তিনি ফিরে এলে আলোচনা করা যাবে।” প্রশ্ন উঠছে ‘গোপন চিঠি’র সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর ‘টেনশনের’ কথা কেন বললেন রাজ্যপাল? কী এমন আছে চিঠিতে? তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়ে গেল।

শনিবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর উদ্দেশে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস বলে ছিলেন, মধ্যরাত পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। দেখুন, কী পদক্ষেপ করতে পারি। তার পাল্টা ব্রাত্য ফেসবুকে লেখেন, শহরবাসী সাবধান। শহরে নতুন রক্তচোষা আসছে।

তারও আগে থেকে শিক্ষামন্ত্রী এবং তৃণমূলের অন্য নেতারা রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে চলছিলেন। শনিবার ১১টা ৪৬ মিনিটে রাজ্যপাল মুখ বন্ধ করা খামে দুটি চিঠি ছাড়েন। একটি দিল্লিতে, অন্যটি নবান্নে। রবিবার দিনভর সেই দুই চিঠির বিষয়বস্তু নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা জল্পনা চলে। নবান্ন কিংবা রাজভবন তা নিয়ে মুখ খোলেনি।

সোমবার রাজ্যপাল ব্রাত্যকে কটাক্ষ করে বলেন, আমার জুনিয়র অ্যাপয়ন্টির বক্তব্যের কোনও উত্তর দেব না। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তাঁর মতো করে শিক্ষা পরিস্থিতির ব্যাখ্যা দিয়েছেন। রাজ্যকে যা পাঠানো হয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করার এখন সঠিক সময় নয়। গোপন জিনিস গোপন থাকাই ভালো। মুখ্যমন্ত্রী বিদেশে যাচ্ছেন। তাঁর ব্যাগের বোঝা বাড়াতে চাই না। তাঁকে টেনশনও দিতে চাই না। এলে কথা হবে। আমি বন্ধ খামে প্রাপককে চিঠি পাঠিয়েছি। এই বিষয় প্রাপকই উত্তর দিতে পারবেন।

মুখ্যমন্ত্রী মঙ্গলবার লগ্নি টানতে বিদেশে যাচ্ছেন। তার আগে সোমবার বিকেলে তিনি রাজভবনে সাংবাদিক বৈঠক করতে পারেন বলে নবান্ন সূত্রের খবর। রাজ্যপালের পাঠানো চিঠি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মুখ খোলেন কি না, তার দিকে তাকিয়ে রয়েছে রাজনৈতিক মহল।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ-সহ শিক্ষাক্ষেত্রে রাজ্যপাল তথা আচার্যের একাধিক ‘অযাচিত হস্তক্ষেপ’ নিয়ে নতুন করে রাজ্য-রাজ্যপালের সংঘাত শুরু হয়। শনিবার কার্যত হুঁশিয়ারির সুরেই রাজ্যপাল জানান, ”মধ্যরাত পর্যন্ত অপেক্ষা করুন, দেখুন কী করি।”