গুয়াহাটি, ২৬ আগস্ট (হি.স.) : মিজোরামের সাইরাঙে নির্মীয়মাণ সেতু ভেঙে পড়ে যে বিপর্যয় সংঘটিত হয়েছে তার জন্য আবারও কাঠগড়ায় এবিসিআই নির্মাণ সংস্থা। এত বড় দুর্ঘটনার পর উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের নির্মাণ শাখার আধিকারিকদের মাথায় হাত। প্রশ্ন উঠছে, নির্মীয়মাণ রেল সেতু ভেঙে এত বড় বিপর্যয়ের জন্য কে দায়ী? অভিযোগের আঙুল এবারও নির্মাণ সংস্থা এবিসিআইর দিকে।
এই নির্মাণ সংস্থার নিম্নমানের কাজ এবং অনভিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ারদের গাফিলতির জন্য বড় বিপর্যয় ঘটে এতগুলি শ্রমিকের প্রাণ গেছে। এবিসিআই নির্মাণ সংস্থাকে নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। যেখানেই এই নির্মাণ সংস্থা কাজ করে, সেখানেই নিম্নমানের কাজ করার অভিযোগ যেন তাদের পিছু ছাড়তে চায় না। নির্মীয়মাণ এই রেল সেতু ভেঙে দুর্ঘটনার পর ফের বিতর্কের শিরোনামে সাইরাং রেল সেতু নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিলচরের এবিসিআই নির্মাণ সংস্থা।
এবিসিআই নির্মাণ সংস্থার ইঞ্জিনিয়ারদের গাফিলতির দরুনই এই দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। লামডিং-বদরপুর হিল সেকশনে ব্রডগেজ রেলপথের নিউহাফলং স্টেশনের কাছে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ ৯ নম্বর টানেল নির্মাণেও এবিসিআই-এর বিরুদ্ধে নিম্নমাণের কাজ করার অভিযোগ উঠেছিল। বিশেষজ্ঞরা ওই টানেলের স্থায়িত্ব নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন।
মিজোরামের ভৈরবী-সাইরাং রেলপথের ১৯৬ নম্বর রেল সেতু নির্মাণ কাজে এবিসিআই কাজে হাত দেয় ২০১২ সালে। লামডিং ডিভিশন সূত্রে জানা গেছে, ওই রেল সেতুর কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ শেষ হয়ে গিয়েছিল। আগামী দু-মাসের মধ্যে রেলপথটি খুলে দেওয়ার কথা ছিল। ঘন জঙ্গলের মধ্যে বিভিন্ন প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে কাজ শুরু হয় এই রেল সেতুর। কিন্তু যে গতিতে কাজ হওয়ার কথা ছিল তা হয়নি। এ বছরই মিজোরামে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে এই সেতুর কাজ শেষ করে আগামী দু-মাসের মধ্যে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের ওপেন লাইন শাখার হাতে হস্তান্তরের কথা ছিল।
সেতু বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ইস্পাতের সাদা রেল গার্ডকে সঠিকভাবে পিলারের সঙ্গে জুড়ে দিতে একটি হলুদ গার্ড থাকে। সেই গার্ড নাকি খুব নড়বড়ে ছিল। যার জন্য মূল সেতু, যার ওজন ৮০০ টন তা হুড়মুড় করে ভেঙে নীচে পড়ে যায়। শ্রমিকদের প্রত্যেকের শরীরে সেফটি বেল্ট লাগানো ছিল। কিন্তু ৮০০ টনের লোহার সেতুর ওজনের কাছে এই বেল্ট কাজ দেয়নি। যার দরুন এই বিপত্তি ঘটে রেল সেতুটি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে ২৩ জন শ্রমিকের মৃত্যু ঘটে। এমতাবস্থায় ভৈরবী থেকে সাইরাং পর্যন্ত সংযোগকারী এই রেল সেতুর কাজ এখন শেষ হতে কতদিন সময় লাগবে এটাই এখন বড় প্রশ্নচিহ্নের সৃষ্টি হয়েছে রেলওয়ে বিশেষজ্ঞ মহলে।