“আমার দেখা সব থেকে বড় দুর্ঘটনা”, দাবি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের

কলকাতা, ৩ জুন (হি. স.) : “আমি তিন বার রেলমন্ত্রী ছিলাম। এখনও পর্যন্ত আমার দেখা সব থেকে বড় দুর্ঘটনা এটা। এর আগে বিহারে হয়েছিল। আমার সময়েও হয়েছিল সেটা সিবিআইকে তদন্ত করতে দিয়েছিলাম। আজ পর্যন্ত রিপোর্ট পাইনি।’’

শনিবার দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে এই মন্তব্য করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরেই প্রশ্ন উঠেছে, এর চেয়েও বড় দুর্ঘটনা সত্যি এর আগে কবে, কোথায় হয়েেছে? বালেশ্বরে একত্রে তিনটি ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২৮০ জনের। ৯০০ জনের বেশি যাত্রী জখম। অবশ্যই সাম্প্রতিককালে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা।

একনজরে ভারতে বড় ট্রেন দুর্ঘটনা—

১৯৮১ জুন- বিহারে ঘূর্ণিঝড়ের সময় বাগমতী নদীতে পড়ে যায় প্যাসেঞ্জার ট্রেনের ৯টি বগি। প্রায় ৮০০ জন যাত্রী মারা গিয়েছিল। ট্রেনে ছিল অতিরিক্ত যাত্রী।
১৯৮৮ জুলাই- লাইনচ্যুত হয়ে কেরলের অষ্টমুদি লেকে পড়ে গিয়েছিল আইল্যান্ড এক্সপ্রেসের ১০টি বগি। মৃতের সংখ্যা শতাধিক।
১৯৯৯ গাইসাল- পশ্চিমবঙ্গের গাইসালে অওয়ধ অসম এক্সপ্রেসের সঙ্গে বহ্মপুত্র মেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। দুই ট্রেনের গতিবেগ এতটাই বেশি ছিল প্রায় বিস্ফোরণ ঘটেছিল। প্রায় ৩০০ লোকের মৃত্যু হয়েছিল।
২০০৫ অক্টোবর- অন্ধ্রপ্রদেশের ভেলুগোন্ডায় প্যাসেঞ্জার ট্রেনের একাধিক কামরা লাইনচ্যুত হয়। বন্যায় ভেসে গিয়েছিল রেললাইন। তা সত্ত্বেও ট্রেন চালিয়েছিলেন চালক। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল শতাধিক যাত্রীর।
২০১১ জুলাই- হাওড়া-কালকা মেলের ১৫টি কোচ বেলাইন হয়েছিল উত্তরপ্রদেশের ফতেপুরে। মারা গিয়েছিলেন ৭০ জন যাত্রী। আহতের সংখ্যা ৩০০-র বেশি।
২০১৬ নভেম্বর- ইন্দোর-পটনা এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয় কানপুরে। প্রায় ১৫০ জনের মৃত্যু হয়। আহত ২০০-র বেশি।
২০১৭ জানুয়ারি- অন্ধ্রপ্রদেশে হিরকন্দ এক্সপ্রেস ট্রেন বেলাইন হয়। জগদলপুর থেকে ভুবনেশ্বর প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি। প্রায় ৪১ জন মারা যায়।
২০১৭ অগাস্ট- মুজফফরনগরে পুরী-হরিদ্বার উৎকল এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়। প্রাণ হারান অন্তত ২৩ জন যাত্রী। ২৩টির মধ্যে ১৪টি কোচ বেলাইন হয়েছিল।
২০১৮ অক্টোবর- অমৃতসরে দশেরা উপলক্ষে প্রচুর মানুষ ভিড় করেছিলেন রেললাইনে। সেই সময় ট্রেনের ধাক্কায় মারা যায় কমপক্ষে ৫৯ জন। আহতের সংখ্যা ৫৭।
শুক্রবার সন্ধেয় ওড়িশার বালেশ্বরে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস, শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস এবং মালগাড়ির। ঘটনাস্থলে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটা চরম সত্যি মন্তব্য করেছেন— “এখন রাজনীতি করার সময় নয়। তাড়াতাড়ি আহতদের উদ্ধার করে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *