নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৬ মার্চ৷৷ রাজ্যের যাত্রী পরিষেবায় প্রথম ধাপ রবিবার থেকে শুরু হচ্ছে৷ আগরতলা থেকে কুমারঘাট পর্য্যন্ত ব্রড গেজ লাইনে সেফটি কমিশনারের পর্য্যবেক্ষণ শুরু হবে৷ ২৭, ২৮ এবং ২৯ মার্চ সেফটি কমিশনার এই লাইনে সুরক্ষার বিষয়টি পর্য্যবেক্ষণ করবেন৷ সেফটি কমিশনার সৈলেশ কুমার পাঠক আগামীকাল সকালে রাজ্যে আসবেন৷ তাঁর সাথে নিরাপত্তা কমিশনের একটি দলও থাকবে৷ আগরতলা থেকে জিরানীয়া হয়ে কুমারঘাট পর্য্যন্ত রেল লাইনে সুরক্ষার বিষয়টি পর্য্যবেক্ষণ করা হবে৷ পূর্বোত্তর সীমান্ত রেলওয়ে সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৭ ও ২৮ মার্চ আগরতলা থেকে আমবাসা, আমবাসা থেকে মনু এবং মনু থেকে কুমারঘাট পর্য্যন্ত মোটর ট্রলিতে সুরক্ষার বিষয়টি পর্য্যবেক্ষণ করবেন সেফটি কমিশনার৷ ২৯ মার্চ কুমারঘাট থেকে আগরতলা লাইনে ১০০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টারও বেশী গতিবেগে বগিসহ রেল ইঞ্জিন চালিয়ে দেখা হবে৷ সেই মোতাবেক শনিবার বদরপুর থেকে ছয়টি বগি নিয়ে ব্রড গেজের একটি ইঞ্জিন রাতে আগরতলা স্টেশনে এসে পৌঁছেছে৷ ইতিমধ্যে পূর্বোত্তর সীমান্ত রেলওয়ের মুখ্য প্রশাসনিক আধিকারীক এ এস গারোদ এবং নির্মাণ শাখার মুখ্য বাস্তুকার হরপাল সিং রাজ্যে এসে গিয়েছেন৷ রবিবার সেফটি কমিশনারের সাথে তাঁরাও সুরক্ষা পর্য্যবেক্ষণে অংশ নেবেন৷ এদিকে, এদিন বিকাল চারটায় উদয়পুর রেল স্টেশনে ব্রড গেজে পণ্যবাহী রেলকে অভ্যর্থনা জানাবেন পরিবহণ মন্ত্রী মানিক দে৷ এদিন পরিবহণ মন্ত্রীর সাথে পূর্বোত্তর সীমান্ত রেলওয়ের আধিকারীকরাও থাকবেন৷
আগরতলা-কুমারঘাট রুটে ব্রড গেজ লাইনের সুরক্ষা পর্য্যবেক্ষণে পূর্বোত্তর সীমান্ত রেলওয়ের তরফে বিভিন্ন ক্রসিংয়ে সিগন্যাল মেনে পারাপারের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে৷ রেলওয়ের তরফে আবেদন জানানো হয়েছে, যেহেতু উচ্চ গতিতে ট্রায়াল রান দেওয়া হবে সেক্ষেত্রে জনগণের নিরাপত্তা নিজ দায়িত্বে পালন করতে৷
এদিকে, ডিআরএম তাঁর সাথে সিনিয়র ডিওএম, সিনিয়র ডিসিএম এবং অন্যান্য আধিকারীকদের নিয়ে ধর্মনগর রেল স্টেশন পরিদর্শন করেছেন৷ সেফটি কমিশনারের পর্য্যবেক্ষণের আগে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখেছেন৷ পাশাপাশি আগামী ১লা এপ্রিলের মধ্যে সমস্ত নির্মাণ কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন৷
উল্লেখ্য, গত ১লা অক্টোবর থেকে মেগা ব্লক ঘোষণা করেছিল পূর্বোত্তর সীমান্ত রেলওয়ে৷ ৩১ মার্চের মধ্যে রাজ্যে যাত্রীরেল পরিষেবা চালু করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল৷ সেই মোতাবেক অত্যন্ত দ্রুত গতিতে সফলতার সাথে কাজ প্রায় শেষের পথে৷ ইতিমধ্যে ব্রডগেজে পণ্যবাহী রেল আনুষ্ঠানিক ভাবে রাজ্যে আসতে শুরু করে দিয়েছে৷ সেফটি কমিশনারের সুরক্ষা পর্য্যবেক্ষণের জন্য সাময়িক তা বন্ধ রাখা হয়েছে৷ এদিকে, উদয়পুর পর্য্যন্ত রেল লাইন সম্প্রসারণের কাজও প্রায় শেষ৷ স্টেশন নির্মাণও সমাপ্ত হয়েছে৷ ফলে, আগামীকাল ব্রড গেজে পণ্যবাহী রেলের আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানাবেন পরিবহণ মন্ত্রী৷ রেলওয়ে আধিকারীকদের মতে আগরতলা থেকে বদরপুর পর্যন্ত প্রতি ঘন্টায় ১০০ কিমি গতিবেগে রেল চলতে পারবে৷ তাতে খুবই অল্প সময়ের মতে যাত্রীরা দূরপাল্লার রেল ভ্রমণ করতে পারবেন৷ সম্প্রতি পূর্বোত্তর সীমান্ত রেলওয়ের মুখ্য বাস্তুকার হরপাল সিং জানিয়েছেন, ব্রড গেজ রেল লাইন সম্প্রসারণের কাজ যথেষ্ট সন্তোষজনক৷ সিগন্যালিং এবং আনুসঙ্গিক স্টেশনের কাজও প্রায় শেষ৷ ফলে সেফটি কমিশনার রেল লাইনের সুরক্ষা পর্য্যবেক্ষণ করে গেলে এই রুটে যাত্রীবাহী রেল চালানোর অনুমতি মিলতে খুব একটা বেশী বিলম্ব হবে না৷ যতদূর আশা করা যাচ্ছে বাংলা নববর্ষের আগেই রাজ্যবাসী ব্রড গেজে যাত্রীবাহী রেলে দূরপাল্লায় পাড়ি দিতে পারবেন৷ পরিবহণ মন্ত্রী মানিক দে’ও রেলের কাজকর্মে যথেষ্ট সন্তোষ ব্যক্ত করেছেন৷ সময়ের মধ্যে রেল লাইন সম্প্রসারণের কাজ শেষ করতে পারায় তিনি পূর্বোত্তর সীমান্ত রেলওয়েকে তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন৷ একই সঙ্গে ব্রড গেজে যাত্রীবাহী রেলের সূচনার দিন থেকেই দূরপাল্লার সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেসের দাবি জানিয়েছেন তিনি৷ পূর্বোত্তর সীমান্ত রেলওয়ে সূত্রে খবর, ব্রড গেজে যাত্রীরেল সূচনার দিন থেকে শিলচর, গুয়াহাটি এবং কলকাতা পর্য্যন্ত সরাসরি রেল পরিষেবা শুরু হবে৷
2016-03-27

