গুয়াহাটি, ২৯ ডিসেম্বর (হি.স.) : অসম-অরুণাচল প্রদেশ আন্তঃরাজ্য সীমাবিবাদ নিষ্পত্তি হতে চলেছে। ইতিমধ্যে সীমান্তঘেঁষা ৩৭টি গ্রামের বিরোধ নিষ্পত্তি হয়েছে এবং আরও ৮৬টির জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সুপারিশ করেছে উভয় রাজ্যের কমিটিগুলি।
তাঁর অফিশিয়াল টুইটার হ্যান্ডেলে এই খবর দিয়েছেন অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘আমরা সমস্ত অসামান্য সমস্যার সমাধানে অগ্রসর হচ্ছি। আঞ্চলিক কমিটিগুলি তাদের সুপারিশপত্র জমা দিয়েছে। আমরা শান্তির পথে আছি।’ মুখ্যমন্ত্রী খান্ডুর দাবি, পূর্ববর্তী সরকারগুলি অসম এবং অরুণাচল প্রদেশের সীমান্ত সমস্যাকে ঝুলিয়ে রেখেছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ঐকান্তিক ইচ্ছা ও নির্দেশনায় বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে উভয় রাজ্যের সমৃদ্ধি এবং শান্তির লক্ষ্যে প্রতিবেশী দুই রাজ্য পদক্ষেপ নেয়।
প্রসঙ্গত, অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু এবং অসমের মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মা চলতি বছরের ১৫ জুলাই ঐতিহাসিক নামসাই ঘোষণাপত্রে উভয় রাজ্য বিতর্কিত গ্রামের সংখ্যা ১২৩-এর মধ্যে প্রথমে ৩৭টি এবং পরবর্তীতে ৮৬টির ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে স্বাক্ষর করেছিল। সে সময়ই উভয় রাজ্যের সাথে সম্পর্কিত আঞ্চলিক কমিটির জমাকৃত যৌথ ফিল্ড রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা করতে যথাক্রমে ২২ আগস্ট এবং ৩০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত দুটি আঞ্চলিক কমিটি-স্তরের বৈঠক সম্পন্ন হয়। অসমের আঞ্চলিক কমিটির প্রধান করা হয়েছে মন্ত্রী অতুল বরাকে।
এর পর ২১ ডিসেম্বর তৃতীয় আঞ্চলিক কমিটি-স্তরের সীমান্ত আলোচনা গুয়াহাটিতে সমাপ্ত হয়েছিল। সীমাবিবাদ নিষ্পত্তির জন্য অরুণাচল প্রদেশ এবং অসম উভয় সরকার ১২টি আঞ্চলিক কমিটি গঠন করেছে।
বিবাদাকৃত সীমাগুলি অরুণাচল প্রদেশের নামসাই ও লোহিত জেলা এবং অসমের তিনসুকিয়া জেলায় বিদ্যমান। অসম এবং অরুণাচল প্রদেশের ৮০৪.১ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে।
১৯৭২ সালে অরুণাচল প্রদেশকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করার পর তারা অভিযোগ করেছিল, সমভূমির বেশ কয়েকটি বনভূমি যা ঐতিহ্যগতভাবে পার্বত্য উপজাতি-প্রধান এবং সম্প্রদায়ের অন্তর্গত ছিল তা একতরফাভাবে অসমে স্থানান্তরিত হয়েছ।
পরবর্তীতে ১৯৮৭ সালে রাজ্যের মর্যাদা অর্জনের পর অরুণাচল প্রদেশ কর্তৃক গঠিত একটি ত্রিপক্ষীয় কমিটি অসম থেকে অরুণাচল প্রদেশে নির্দিষ্ট অঞ্চল স্থানান্তর করার সুপারিশ করতে সুপ্রিমকোর্টে যায়। তবে এর আগে উভয় রাজ্য কর্তৃপক্ষ ১৯৮০ সালের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সীমানা পুনর্বিন্যাস করার সিদ্ধান্ত নিয়ে উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন ত্রিপক্ষীয় কমিটি গঠন করে। ওই কমিটি ২৯টি টোপো শিটে চিত্রিত করে একটি সমঝোতাপত্রে স্বাক্ষর করেছিল।

