শিলচর (অসম), ৩ ডিসেম্বর (হি . স.) : অসমের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি (এন আই টি), শিলচরে ভারত রত্ন ড. এ পি জে আব্দুল কালাম লার্নিং এন্ড রিসোর্স সেন্টারে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ এবং লাইব্রেরি প্রাঙ্গনে বঙ্গবন্ধু গার্ডেন উদ্বোধন করা হল। শনিবার সকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, এমপি এবং এনআইটি শিলচরের ডাইরেক্টর প্রফেসর রজত গুপ্ত ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ এবং ‘বঙ্গবন্ধু গার্ডেন’ উদ্বোধন করেন।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এন আই টি, শিলচরে বঙ্গবন্ধু কর্নার এবং বঙ্গবন্ধু গার্ডেনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে সেন্টারের ভূপেন হাজারিকা অডিটরিয়ামে আয়োজিত আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মোমেন বঙ্গবন্ধু কর্নার গড়ে তোলার জন্য ভারত সরকারের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘ভারত সরকারের জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান তথা দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ ডিজিটাল লাইব্রেরিতে মুজিব কর্নার স্থাপন করায় এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বঙ্গবন্ধুর সারা জীবনের সংগ্রাম, তাঁর আদর্শ ও স্বপ্ন সম্পর্কে আরো বেশি জানার সুযোগ সৃষ্টি হলো।
একইসাথে তারা বাংলাদেশের দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস এবং ভারত সরকার কীভাবে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করেছে সেগুলোও জানতে পারবে।’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে যে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে সেসব তথ্যও তারা জানার সুযোগ পাবে।’
‘আমাদের উভয় দেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, ভাষা মোটামুটি একইরকম। সেদিক থেকে আমাদের নাড়ীর বন্ধন আর সুদৃঢ় হবে। আমরা ধর্ম, বর্ণ, সংস্কৃতি, গোষ্ঠী সবকিছুর ঊর্ধ্বে থেকে মানুষ হচ্ছে সব থেকে বড়- এতে আমরা বিশ্বাস করি। আর মানুষে মানুষে সুসম্পর্ক থাকলে কোন কিছু আর আমাদের মাঝে বাধা হয়ে থাকবেনা। বঙ্গবন্ধু কর্নার আমাদের সেই প্রত্যাশা পূরণে সহায়ক ভূমিকা রাখবে’ বলে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন।
এনআইটি, শিলচরে মুজিব কর্নারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন তাঁর লিখিত ও সম্পাদিত বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের উন্নয়ন বিষয়ক কিছু বই উপহার দেন। মুজিব গার্ডেন উদ্বোধনের পর সেখানে তিনি গাছের চারা রোপন করেন।
উদ্বোধনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের অন্যান্যের মধ্যে মহিবুর রহমান মানিক, এমপি, ইকবালুর রহিম, এমপি, গাজী মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ, এমপি, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন চৌধুরী, ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুস্তাফিজুর রহমান, এনআইটি শিলচরের শিক্ষকমণ্ডলী, সিলেটের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং মিডিয়ার প্রতিনিধিবৃন্দ এবং এনআইটি শিলচরে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, প্রথমবারের মতো আয়োজিত শিলচর-সিলেট উৎসবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করছে। প্রতিনিধিদল শুক্রবার সকালে সড়ক পথে সিলেটের শেওলা সীমান্ত দিয়ে ভারতের সুতারকান্দি আইসিপিতে পৌঁছায়। সেখানে তাদের ভারতের বিএসএফের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা স্বাগত জানান। পরে সেখান থেকে তাঁরা আসামের শিলচরে পৌঁছেন।