বীরযোদ্ধা লাচিতের ৪০০-তম জন্মজয়ন্তীতে ৪০০-প্রদীপের আলোয় আলোকিত ভারত-বাংলা সীমান্ত

করিমগঞ্জ (অসম), ২৪ নভেম্বর (হি.স.) : বীরযোদ্ধা লাচিত বরফুকনের ৪০০-তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে ৪০০টি প্রদীপের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠল এপার বাংলা ওপার বাংলার মধ্যে কুশিয়ারা নদী তীরবর্তী ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত।

গোটা দেশ জুড়ে বীর লাচিতকে নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে স্মরণ করা হলে ভারতের মধ্যে একমাত্র সীমান্ত জেলা করিমগঞ্জে অভিনবভাবে বীরযোদ্ধা লাচিত বড়ফুকনকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। প্রদীপ নদীতে ভাসান দিতে অগণিত মানুষের আগমন, অন্যদিকে এপার বাংলা ওপার বাংলার সীমান্তবর্তী নদীতে মনোরম এই দৃশ্য উপভোগ করতে অসংখ্য মানুষের জমায়েত ঘটে বৃহস্পতিবার বিকালে।

বৃহস্পতিবার বীর লাচিত বরফুকনের ৪০০-তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবং প্রেস ক্লাব করিমগঞ্জের ব্যবস্থাপনায় বিসর্জনঘাটে লাচিতের মর্মর মূর্তির পাদদেশে প্রদীপ প্রজ্বলন ও পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান হয়। এর পর পণ্ডিতের মন্ত্রপাঠ ও মহিলাদের শঙ্খ ও উলুধ্বনির মধ্যে ৪০০টি মাটির প্রদীপ ভাসিয়ে দেওয়া হয় ভারত-বাংলা সীমান্তে কুশিয়ারা নদীতে। অনুষ্ঠানে শহরের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও অংশগ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলাশাসক রিন্টু বড়ো, পুরপতি রবীন্দ্র দেব, উপ-পুরপতি সুখেন্দু দাস, প্রেস ক্লাবের মুখ্য উপদেষ্টা হবিবুর রহমান চৌধুরী, প্রেস ক্লাবের সভাপতি মিহির দেবনাথ, প্রেস ক্লাবের সম্পাদক অরূপ রায়, রবীন্দ্র সদন মহিলা মহাবিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ ড. শর্মিষ্ঠা খাজাঞ্চি প্রমুখ।
এ উপলক্ষ্যে করিমগঞ্জের অতিরিক্ত জেলাশাসক রিন্টু বড়ো বলেন, প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে এবং জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় প্রদীপ ভাসানের যে অনুষ্ঠান হয়েছে তা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। এ ধরনের অনুষ্ঠান হয়তো আর কোথাও হয়নি। প্রদীপ ভাসানের মাধ্যমে একদিকে যেমন বীর লাচিতের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে, অন্যদিকে সর্বস্তরের নাগরিকের কাছে এক ভ্রাতৃত্বের বার্তা তুলে ধরা হয়েছে।

পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রচন্দ্র দেব বলেন, আজকের অনুষ্ঠান সত্যিই স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এমন অনুষ্ঠান হয়তো এর আগে কখনও করিমগঞ্জ তথা অসমে কোথাও দেখা যায়নি।
প্রেস ক্লাবের উপদেষ্টা হবিবুর রহমান চৌধুরী বলেন, লাচিত বরফুকনের ৪০০-তম জন্মজয়ন্তীকে সামনে রেখে অসমে ভ্রাতৃত্বের বার্তা দেওয়া হয়েছে। আজকের এই অনুষ্ঠানে জাতিধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সকলের উপস্থিতি এর প্রমাণ।

প্রেস ক্লাবের সভাপতি মিহির দেবনাথ বলেন, আমরা সাংবাদিকতার পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতাকে সামনে রেখে বিভিন্ন সেবামূলক কাজের সঙ্গে এবার বীর লাচিতের জন্মদিবস পালন করলাম। এর আগে আমরা বৃক্ষরোপণ আলোচনাসভা এবং সবশেষে ৪০০টি প্রদীপ ভাসান দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি করেছি। আগামী দিনেও সমাজের ঐক্যতার জন্য প্রেস ক্লাব কাজ করে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *