কানপুর, ৮ অক্টোবর (হি.স.): রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের পাঁচ দিনব্যাপী স্বর সঙ্গম ঘোষ শিবির শুরু হয়েছে কানপুরে । কানপুর প্রান্তে প্রথমবারের মত এই ঘোষ শিবিরের আয়োজন করা হচ্ছে যাতে ২১টি জেলার প্রায় ১৫শতাধিক স্বয়ংসেবক ৭০ধরনের বাদ্যযন্ত্র নিয়ে অংশগ্রহণ করছে। শেষ দিনে অর্থাৎ ১০ অক্টোবর, নির্বাচিত শিক্ষার্থী স্বয়ংসেবকরা সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতের সামনে বাদ্যযন্ত্র পরিবেশন করবেন। সরসঙ্ঘচালক কানপুরে তিনদিন অবস্থানে থাকবেন এবং ৯ অক্টোবর বাল্মীকি সমাজে ভাষণ দেবেন। পরদিন তিনি ঘোষ শিবিরে ভাষণ দেবেন ।
কানপুর প্রদেশের রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের পাঁচ দিনব্যাপী স্বর সঙ্গম ঘোষ শিবির ৬ অক্টোবর থেকে নবাবগঞ্জের পণ্ডিত দীনদয়াল সনাতন ধর্ম বিদ্যালয়ে চলছে। প্রাদেশিক ঘোষ ক্যাম্পে ৭০টি আধুনিক, ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীন বাদ্যযন্ত্রের প্রদর্শনী করা হয়েছে। বাদ্যযন্ত্রের প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন উত্তরপ্রদেশ নাট্য আকাদেমির সভাপতি রাজেশ্বর আচার্য। এই ক্যাম্পে সিনিয়র বাদ্যকরদের দিকনির্দেশনা পাচ্ছে তরুণরা। কানপুর প্রান্তে আসা ২১টি জেলা থেকে নির্বাচিত ছাত্রদের ১০ অক্টোবর সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতের সামনে অনুষ্ঠান করতে হবে। প্রায় ১৫০০শিক্ষার্থী এখানে ৭০ ধরনের ভারতীয় বাদ্যযন্ত্রের একটি প্রদর্শনী রয়েছে। প্রদেশের সমস্ত জেলায়, ২৫ সেপ্টেম্বর পথ আন্দোলনের মাধ্যমে শেষ অনুশীলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে শুধুমাত্র নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা ঘোষ শিবিরে যোগ দিচ্ছেন। আয়োজিত পাঁচ দিনব্যাপী শিবিরে একদিন থাকবে ভারতীয় সংস্কৃতির নামে, যাতে থাকবে লোকগান, শাস্ত্রীয় সঙ্গীত গাওয়ার মত অনুষ্ঠান। প্রদর্শনীতে ৭০টি বাদ্যযন্ত্র সবার সামনে রাখা হয় এবং জানানোর চেষ্টা করা হয় যে, বিনোদনের পাশাপাশি এই বাদ্যযন্ত্রগুলো মনকে উন্নত করারও মাধ্যম। তাই দেশের তরুণ প্রজন্মকে শুধু এগুলোর গুরুত্ব না বুঝে দেব-দেবীর সন্নিকটে থাকা বাদ্যযন্ত্রের গুরুত্ব অনুধাবন করে গ্রহণ করতে হবে।
তিনদিন কানপুরে থাকবেন সরসঙ্ঘচালক
কানপুর প্রান্তের প্রচার প্রমুখ অনুপম জানিয়েছেন যে ৮অক্টোবর সন্ধ্যায় সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত কানপুরে আসছেন এবং পণ্ডিত দীনদয়াল স্কুলে থাকবেন। মোহন ভাগবত প্রদেশের ইউনিয়ন আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এই সময়ে, দুটি অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছে যেখানে সংঘ প্রধান জনগণের মধ্যে থাকবেন। সরসঙ্ঘচালক ৯অক্টোবর ফুলবাগের নানারাও পার্কে বাল্মীকি সমাজ আয়োজিত একটি কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বাল্মীকি সমাজকে ভাষণ দেবেন। এরপর ১০ অক্টোবর বিকাল সাড়ে ৪টায় দীনদয়াল স্কুল সংলগ্ন ভিএসএসডি কলেজ প্রাঙ্গণে শিবিরে সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন ঘোষ। দীনদয়াল স্কুলে আসা প্রায় ১৫০০ স্বয়ংসেবকদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অস্থায়ী হাসপাতাল নির্মিত
প্রান্ত ঘোষ শিবিরে স্বয়ংসেবকদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের ব্যাপক ভিড় থাকবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পণ্ডিত দীনদয়াল স্কুলে তিনটি বড় কক্ষে একটি অস্থায়ী হাসপাতালও খোলা হয়েছে। এর পেছনে কারণ হিসেবে ধারণা করা হচ্ছে, এই দিনগুলোতে আবহাওয়ার পরিবর্তন চলছে এবং সব ধরনের সংক্রামিত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। প্রতিটি কক্ষে বিভিন্ন চিকিৎসক উপস্থিত থাকবেন। এখানে ডাক্তার সৌরভকে চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রধান করা হয়েছে এবং তিনি স্থায়ীভাবে ক্যাম্পে থাকবেন।
১৯২৭ সালে ঘোষ বাদ্য শুরু হয়
রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ ১৯২৫ সালে বিজয় দশমীর দিনে নাগপুরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সংঘের আধিকারিকদের মতে, সংঘ প্রতিষ্ঠার দুই বছর পর ১৯২৭ সালে ঘোষ বাজানোর অনুষ্ঠান শুরু হয়েছিল। ঘোষ বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রের সেরা বাদ্যকরদের নিয়ে গঠিত হয় । সংঘ তার ঘোষকে দেশ ও বিশ্বের প্রতিটি কোণায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে, তাই এবারের ঘোষ শিবিরকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ।প্রান্ত প্রচার প্রমুখ জানিয়েছেন যে কানপুর প্রদেশের ২১টি জেলার পুরানো সেরা বাদ্যকর স্বর সঙ্গম ঘোষ শিবিরে অংশ নিচ্ছেন।
প্রদর্শনীতে এসব বাদ্যযন্ত্র প্রদর্শিত হচ্ছে
সমিতির কর্মকর্তারা জানান, প্রদর্শনীতে চার ধরনের বাদ্যযন্ত্র প্রদর্শিত হচ্ছে। ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র হচ্ছে তবলা, সেতার, তানপুরা, শেহনাই, পাখাওয়াজ, বাঁশি, ঢোলক, আধুনিক বাদ্যযন্ত্র ইলেকট্রনিক কীবোর্ড, গিটার, স্যাক্সোফোন, ট্রাম্পেট, জনদম, কোগা। সেখানে বাদ্যযন্ত্রের পরিবেশনাও হয়েছে যা প্রায়শই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এর মধ্যে হারমোনিয়াম, দিলরুবা, জুঁই ও ম্যান্ডোলিন প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। সংঘে ব্যবহৃত বাদ্যযন্ত্র যেমন তূর্য, প্রণব, বেণু, নাগং, আনক ইত্যাদি প্রদর্শন করা হচ্ছে।