Protest:বইয়ের স্টলে আক্রান্ত বাম কর্মী, প্রতিবাদ চলচ্চিত্র পরিচালকের

কলকাতা, ৩ অক্টোবর (হি.স.): বইয়ের স্টলে এক বাম কর্মীকে আক্রমণ করার ঘটনার প্রকাশ্য প্রতিবাদ করলেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। সোমবার সন্ধ্যায় অকুস্থলে ওই আক্রমণের প্রতিবাদে এক সভার ডাক দেওয়া হয়েছে।

সোমবার কমলেশ্বরবাবু সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, “জানি আজ অষ্টমী – আনন্দের দিন। তবু, এই আবেদন জানাতে বাধ্য হচ্ছি। সহমত হলে এই বক্তব্য ছড়িয়ে দিতে বিশেষ অনুরোধ করছি।

শুভদীপ গাঙ্গুলী রাসবিহারী অঞ্চলে বসবাসকারী জনৈক বামপন্থী মানুষ – অঞ্চলের সমাজকর্মী এবং নিজস্ব পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকা একজন নির্বিরোধী মানুষ। শুভদীপ মূলত বাংলা ও বিশ্ব সাহিত্যের একনিষ্ট পাঠক। লেখালিখির কাজ করে শুভদীপ। কাল সন্ধ্যেয় শুভদীপ আক্রান্ত হলেন।

সপ্তমীর দিন সন্ধ্যেয় (গতকাল) রাসবিহারীতে ভারতের মার্ক্সবাদী কমিউনিস্ট পার্টি আয়োজিত বইয়ের স্টলে শুভদীপ ও তাঁর অগ্রজসম রানাদা বসেছিলেন। সেই সময় অঞ্চলের শাসক দল আশ্রিত দুই দুষ্কৃতী (সান্টু ও গদাইয়ের নেতৃত্বে কয়েকজন সমাজবিরোধী এসে রাসবিহারীর সেই বইয়ের স্টল আক্রমণ করে, বইয়ের স্টল ভেঙে দেয় ও শুভদীপ ও রানাদাকে মারধর করে।

গোটা ঘটনাটাই কর্মরত পুলিশের চোখের সামনেই ঘটে এবং পুলিশ নির্বিকার মুখে দাঁড়িয়ে ঘটনাটা দেখে। সংলগ্ন কালীঘাট অঞ্চলের কমরেডরা এসে শুভদীপ ও রানাদাকে বাঁচান এবং পরিস্থিতি সামাল দেন – যদিও তাঁরা যথেষ্ট আহত। নিয়মানুগ ভাবে, ঘটনার পরে, এই আক্রমণের কথা বিবৃত করে টালিগঞ্জে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আজ অর্থাৎ অষ্টমীর বিকেলে – ৫টা নাগাদ – ওই জায়গায় একটি প্রতিবাদ সভা সংগঠিত হচ্ছে।

বামপন্থীরা বহু বছর ধরেই (ক্ষমতায় থাকা বা না থাকাকালীন) পুজোর সময় বিভিন্ন অঞ্চলে বইয়ের স্টল দিয়ে থাকেন। অনেকেই স্বেচ্ছায় বই কেনেন (যেমন মানুষ বই কেনেন বই মেলায়)। সেই সব স্টলে মার্ক্সীয় দর্শন বা প্রয়োগের ওপর লেখা বই ছাড়াও অনেক প্রথিতযশা সাহিত্যিকের সাহিত্যকর্ম থাকে।

প্রশ্ন হলো : বই বিক্রি করে জনসাধারণের চেতনার উন্মেষ ঘটানোর প্রক্রিয়া কি গণতান্ত্রিক নয়? বইয়ের স্টল থেকে তো কাউকে জোর করে বই কিনতে বলা হয় না এবং তা পুজোর আনন্দে কখনো ব্যাঘাত ঘটায় না। সেক্ষেত্রে বামেদের দেওয়া বইয়ের স্টল ভেঙে দেওয়া বা স্টলে বসা মধ্যবয়স্ক ও প্রৌঢ় মানুষকে মারধর করার কোন রাজনৈতিক যুক্তি আছে কী ? এ ঘটনা গণতান্ত্রিক মানুষকে ভাবে না ?

যাঁরা বই লেখেন, পড়েন বা পাবলিস করেন তাঁদের এই প্রতিবাদে অংশ নেওয়া উচিৎ নয় কী ? যাঁরা বামপন্থায় বিশ্বাস রাখেন বা বাম ঐক্যের কথা বলেন তাঁদের এই প্রতিবাদ সভায় অংশ নেওয়া প্রয়োজন নয় কী? নতুবা এই শাসক দল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ও নিষ্ক্রিয় পুলিশ প্রশাসন একদিন আপনার হাতের বইটাও কেড়ে নেবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *