আগরতলা, ২৬ সেপ্টেম্বর (হি. স.) : সরকারী আধিকারিকরা মন্ত্রিদের মিথ্যা তথ্য দিচ্ছেন এবং ভুল বোঝাচ্ছেন। সাবরুম মহকুমায় হরিণা বাজার সংলগ্ন মনু নদীর উপর অর্ধ নির্মিত অবস্থায় পড়ে থাকা ব্রীজ সম্পর্কে ভুল তথ্য দেওয়ার জন্য বিধানসভায় তদন্ত কমিটি গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী তথা পূর্ত মন্ত্রী ডা: মানিক সাহা তথ্যে গড়মিল পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
আজ সোমবার বিধানসভা অধিবেশনের অন্তিম দিনে উল্লেখ পর্বে বিধায়ক শংকর রায় সাবরুম মহকুমায় হরিণা বাজার সংলগ্ন মনু নদীর উপর অর্ধ নির্মিত অবস্থায় পড়ে থাক ব্রীজ সম্পর্কে জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়টি উত্থাপন করেন। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী তথা পূর্ত মন্ত্রী বিধানসভায় এ-বিষয়ে বিবৃতি দেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ২০০৮-০৯ অর্থবর্ষে ওই ব্রীজটি নির্মাণের অনুমোদন পাওয়া গিয়েছিল। এনবিসিসি-র অধীনে ঠিকেদার ২০১১ সালের জুন মাসে নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলেন এবং ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে ওই কাজ সমাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল।
তিনি বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সমাপ্ত না হওয়ায় ঠিকেদারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে ২০২১ সালের জানুয়ারির মধ্যে ব্রীজ নির্মাণ সমাপ্তির লিখিত প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে কাজ পুণরায় শুরু হয়েছিল। কিন্তু, এরপরও যথাসময়ে কাজ শুরু হয়নি এবং পুণরায় নোটিশ দিয়ে চুক্তিপত্র বাতিলের বিষয়ে সতর্ক করা হলে ২০২১ সালের ৮ আগস্ট থেকে নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। তবে, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে অসম এবং ত্রিপুরার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় নির্মাণ সামগ্রী আনতে সমস্যা হয়ে এবং তাতে নির্মাণ কাজে প্রভাব পড়েছে, বলেন তিনি।
তাঁর বক্তব্য, নির্মাণ সামগ্রীর জন্য বহিরাজ্যের উপর নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। ফলে, নির্মাণ কাজে বিলম্ব হয়েছে। তবে, সমস্ত দিক বিবেচনা করে ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ওই ব্রীজের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে, জানান তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শুনে বিধায়ক শংকর রায় সরকারী আধিকারিকদের প্রতি চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তাঁর সাফ কথা, আধিকারিকরা মিথ্যা তথ্য দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বিভ্রান্ত করছেন। কারণ, গতকাল সরেজমিনে নির্মাণস্থল পরিদর্শন করে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের সাথে মিল খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি বলেন, ওই নির্মাণ কাজের সাথে যুক্ত ঠিকেদারকে অবিলম্বে কালো তালিকাভুক্ত করা উচিত। ১২ বছর ধরে শুধুই নোটিশ দেওয়া হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হোক। তাঁর অভিযোগ, এক শ্রেণীর ইঞ্জিনিয়ার এবং আধিকারিক অনিয়মের সাথে যুক্ত রয়েছেন।
বিধায়ক শংকর রায়ের সাথে সহমত পোষণ করে বিধায়ক বিপ্লব ঘোষ বলেন, ওই ব্রীজ নির্মাণ নিয়ে সরকারকে ভুল পথে চালিত করা হচ্ছে। তাই, অবিলম্বে তদন্ত কমিটি গঠন করে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হোক। সমস্ত কিছু জেনে মুখ্যমন্ত্রী এদিন বিধায়কদের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন। শুধু তাই নয়, তথ্যে গড়মিল পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

