আগরতলা, ১৫ সেপ্টেম্বর (হি. স.) : বামপন্থী ছাত্র যুব সংগঠনের মহাকরণ অভিযান ঘিরে রণক্ষেত্রের রূপ নিয়েছিল আগরতলায় সার্কিট হাউস এলাকা। শিক্ষা, কাজ ও সন্ত্রাসমুক্ত ত্রিপুরার দাবিতে বামপন্থী ছাত্র যুবরা আজ বৃহস্পতিবার মহাকরণ অভিযানে গিয়েছিলেন। তাঁদের থামাতে পুলিশের জল কামান ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে হয়েছে। তাতে, একজন সিআরপিএফ জওয়ান ও কয়েকজন বামপন্থী যুব কর্মী আহত হয়েছেন। কাঁদানে গ্যাসের শেল মাথায় লেগে সিআরপিএফ কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁকে চিকিত্সার জন্য জি বি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
এদিন বাম ছাত্র যুব সংগঠনের মিছিল শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে মহাকরণের উদ্দেশ্যে রওনা দিতেই সার্কিট হাউস সংলগ্ন এলাকায় তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। ছোড়া হয় জল কামান ও টিয়ার গ্যাস। তাতে মুহূর্তেই উত্তপ্ত হয়ে উঠে সংশ্লিষ্ট এলাকা। বাম ছাত্র যুবরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেদ করে এগিয়ে যান। কিন্তু, পুলিশের কড়া হস্তক্ষেপে তাঁরা পুরাতন রাজ ভবনের সামনে থেকে ফিরে আসতে বাধ্য হন।
ত্রিপুরায় বর্তমান সময়ের বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কিত মোট ৯ দফা দাবির ভিত্তিতে এদিন বাম ছাত্র যুব সংগঠনের সদর, ডুকলি, জিরানিয়া এবং মোহনপুর বিভাগের যৌথ উদ্যোগে মহাকরণ অভিযান শুরু হয়েছিল। এদিন সার্কিট হাউস এলাকায় একটা সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়েছিল। প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পুলিশ জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়েছিল। তাতে, বেশ কয়েকজন বামপন্থী যুব কর্মী এবং সিআরপিএফ জওয়ান আহত হয়েছেন। পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের শেল ওই জওয়ানের মাথায় লেগেছে। তাতে, তাঁর মাঠ ফেটে গেছে। তাঁকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। জানা গেছে, তাঁর মাথায় চারটি সেলাই লেগেছে।
এদিকে গোটা ঘটনা সম্পর্কে এস এফ আই রাজ্য সম্পাদক সন্দীপন দেব বলেন, মানুষের সমর্থনেই এই অভিযান শুরু করেছে বামপন্থী ছাত্র যুবরা। তবে পুলিশের ভূমিকা ছিল অমানবিক, ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, পুলিশ দলদাসের ভূমিকা পালন করছে। তাই, বর্তমান সরকারকে উৎখাত করলেই পুলিশের মেরুদণ্ড সোজা হবে।এদিন ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক নবারুণ দেব বলেন, শিক্ষা, কাজ এবং সন্ত্রাসমুক্ত ত্রিপুরার দাবিতে আজ বামপন্থী ছাত্র যুবরা মহাকরণ অভিযান সংগঠিত করেছেন। তাঁর বক্তব্য, বর্তমান ত্রিপুরা সরকার বেকারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। কাজ দেওয়ার বদলে বহু মানুষের কাজ কেড়ে নিচ্ছে। বহু মানুষ ইতিমধ্যে ছাটাই হয়েছেন। শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। ফলে, ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যত অন্ধকারে ঢেকে যাচ্ছে। তাঁর দাবি, ত্রিপুরা এখন নেশা এবং সন্ত্রাসের ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে। দুর্নীতি চারিদিকে ছেয়ে গেছে। তাই, মানুষের স্বার্থে এবং তাঁদের বাঁচাতে আজ এই মহাকরণ অভিযান করা হয়েছে, বলেন তিনি।