বঙাইগাঁও (অসম), ১২ জুলাই (হি.স.) : অসমের বন্যা সমস্যা সমাধানে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। বন্যাক্রান্তদের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রীও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে পৌঁছানোর প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। আজ বন্যাক্ৰান্ত চিরাং ও বঙাইগাঁও জেলায় এসে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা।
আজ মঙ্গলবার সকালে হেলিকপ্টারে চিরাঙে ক্যাবিনেট সতীৰ্থ উর্খাওগৌরা ব্ৰহ্ম, সাংসদ রণগৌরা নাৰ্জারি, দুই বিধায়ক জয়ন্ত বসুমতারি ও অজয়কুমার রায় সহ প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রথমে যান লাওখ্ৰিগুড়ি ত্রাণ শিবিরে। সেখানে ত্রাণ শিবিরের আবাসিকদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের মুখে দুর্ভোগের বর্ণনা শুনেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি তাঁদের সম্ভবপর যাবতীয় সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।
এর পর সপার্ষদ মুখ্যমন্ত্রী যান লাওখ্ৰিগুড়ির বন্যক্রান্ত এলাকা ও বন্যা-বিধ্বস্ত নদীবাঁধ এলাকাগুলি পরিদৰ্শন করে পরিস্থিতির পর্যেবক্ষণ করেছেন। সেখানে উপস্থিত সাংবাদকিদের তিনি বলেন, ভুটানে সংঘটিত বৃষ্টিপাতের ফলে নিজলা নদীর জলোচ্ছ্বাসে এই এলাকায় সৃষ্ট বন্যা বিধ্বংসী রূপ ধারণ করে। এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে তিনি জলসম্পদ দফতরকে দীৰ্ঘমেয়াদি প্রকল্প গ্ৰহণ করে এলাকাগুলিকে ভাঙন থেকে রক্ষা করতে নিৰ্দেশ দিয়েছেন বলে জানান। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সাম্প্ৰতিক বন্যায় আৰ্তজনদের সহায়তা করতে তিনি নিরন্তর আন্তরিক প্ৰয়াস জারি রেখেছেন৷
চিরাং থেকে বঙাইগাঁও জেলায় ভাঙনের শিকার সৃজনগ্ৰাম রাজস্ব সার্কলের অন্তৰ্গত তিনকোণিয়া পাৰ্ট-ওয়ান (গোবিন্দপুর) এলাকা পরিদৰ্শন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা৷ পরিদৰ্শনকালে তিনি ভাঙন পীড়িতদের সার্বিক পরিস্থিতির খোঁজ নিয়ে তাঁদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে৷ এখান থেকে মালেগড় উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে জেলা প্ৰশাসনের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হয়ে বন্যার্তদের পর্যাপ্ত সহায়তা এবং পুনঃসংস্থাপন সংক্রান্ত বিষয়ে পৰ্যালোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ড. শর্মা৷
গোবিন্দপুরে নদীভাঙন প্রতিরোধের জন্য রাজ্য সরকার এক প্রকল্প হাতে নেবে, জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ এছাড়া মানিকপুর, সৃজনগ্ৰাম প্রভৃতি এলাকার অন্যান্য স্থানে নদীবাঁধ সংস্কারের জন্যও যথোচিত ব্যবস্থা গ্ৰহণ করার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব৷
মুখ্যমন্ত্রী জানান, বঙাইগাঁও জেলার চার হাজারের বেশি বন্যার্তকে ৩,৮০০ টাকা করে সাহায্য দেওয়া হয়েছে৷ তাছাড়া তিন লক্ষ টাকা করেও বহু বানভাসিকে সহায়তা রাশি প্রদান করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে৷ বঙাইগাঁও জেলায় বন্যার যাঁদের বাড়িঘর ক্ষতিগ্ৰস্ত হয়েছে আগামী আগস্ট মাসের মধ্যে তাঁদেরও আৰ্থিক সাহায্য প্ৰদানের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি৷ মুখ্যমন্ত্রী জানান, এভাবে বন্যার কবলে পড়ে যে সকল ছাত্রছাত্রীর বইপত্ৰ সহ অন্যান্য শিক্ষাসামগ্ৰী নষ্ট হয়েছে, তাদেরও এককালীন আৰ্থিক সাহায্য প্ৰদান করা হবে৷ বঙাইগাঁও জেলা পরিদর্শনের সময় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন ক্যাবিনেটমন্ত্রী রঞ্জিৎকুমার দাস, জেলাশাসক নবদ্বীপ পাঠক প্রমুখ৷