হাইলাকান্দি (অসম), ১৫ জুন (হি.স.) : কংগ্রেসের মতো বিজেপি সরকারও বরাক উপত্যকাকে বঞ্চনা করে আসছে। সর্বক্ষেত্রে বঞ্চিত বরাক। নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা প্রদত্ত সমস্যাবলি এখনও পূরণ হয়নি কেন, প্রশ্ন তুলেছেন রাইজর দল-এর প্রধান তথা শিবসাগরের বিধায়ক অখিল গগৈ।
মূলত গতকাল হাইলাকান্দিতে অখিল গগৈয়ের কিছু কর্মসূচি ছিল। কিন্তু গোটা জেলায় সিআরপিসি-র ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকায় তাঁর কোনও কর্মসূচির অনুমতি দেয়নি প্রশাসন। এতে ক্ষুব্ধ অখিল গগৈ রাজ্য সরকার বরাক উপত্যকাকে বঞ্চনা করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন। এই উপত্যকার জন্য বিকল্প সড়কপথ, রেলপথ ও চাকরির ক্ষেত্রে সংরক্ষণ দাবি করেছেন রাইজর দল-এর সভাপতি তথা শিবসাগরের বিধায়ক অখিল গগৈ।
বিধায়ক অখিল গগৈ বলেন, কংগ্রেসের মতো বিজেপি সরকারও বরাক উপত্যকাকে বঞ্চনা করে আসছে। তিনি বলেন, মেঘালয় হয়ে বরাক উপত্যকা-গুয়াহাটি সংযোগী সড়কপথটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। বিভিন্ন সময় ধস পড়ে সড়ক বন্ধ হওয়ার ফলে এই অঞ্চলের মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হন। তাই চন্দ্রনাথপুর-লঙ্কা হয়ে গুয়াহাটি সংযোগী প্রস্তাবিত নতুন রেলপথে অনুমোদন তড়িঘড়ি প্রদানের দাবি জানান বিধায়ক অখিল গগৈ। তিনি বলেন, বরাক উপত্যকার যাতায়াতের সমস্যা দূর করতে বিধানসভার অধিবেশনে সরব হবেন তিনি। প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যে ভারতীয় রেলমন্ত্রক লংকা-শিলচর ভায়া চন্দ্রনাথপুর ২০৮ কিলোমিটার বিকল্প নতুন রেলপথের চূড়ান্ত সার্ভে সম্পূর্ণ করার নির্দেশ দিয়েছে। প্রস্তাবিত বিকল্প ওই রেলপথের চূড়ান্ত সার্ভের কাজ সম্পূর্ণ করে তুলতে রেলমন্ত্রক ৪৩ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দও করেছে বলে জানা গেছে।
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা নির্বাচনের আগে তৃতীয় এবং চতুর্থ শ্রেণির চাকরির ক্ষেত্রে বরাক উপত্যকার প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন তা তিনি বেমালুম ভুলে গেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রতারণা কোনওভাবে তিনি বা তাঁর দল মেনে নেবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিন। অখিলের মতে, স্বাধীনতার পর থেকে প্রতিটি রাজনৈতিক দল বরাক উপত্যকাকে তাদের ভোট ব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করে আসছে।
মঙ্গলবার হাইলাকান্দিতে তাঁর বিভিন্ন কর্মসূচি ছিল। কিন্তু জেলায় ১৪৪ ধারা জারি থাকায় সভার পূর্বানুমতি বাতিল করে দেয় জেলা প্রশাসন। এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ ব্যক্ত করে বিধায়ক অখিল গগৈ বলেন, বিজেপি নেত্রী কর্তৃক সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়ানোর ফলে দেশে সৃষ্ট হিংসার বাতাবরণ সামাল দিতে যে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে, এর বিরুদ্ধে নয় রাইজর দল। কিন্তু আগে প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতিপ্রাপ্ত একটি কর্মীসভা অনুষ্ঠিত করতে জেলা প্রশাসনের বাধা দেওয়ার ঘটনা শুধু অগণতান্ত্রিক নয়, তা হিমন্তবিশ্ব সরকারের ফ্যাসিবাদী নীতির প্রতিফলন, অভিযোগ করেন গগৈ।
অখিল গগৈ আরও বলেন, রাইজর দল-এর উত্থানে বিজেপির সঙ্গে আজমলের এআইইউডিএফ দলও শংকিত হয়ে পড়েছে। তাই হাইলাকান্দির এআইইউডিএফ বিধায়করা রাইজর দল-এর কর্মী সম্মেলন ও যোগদান সমারোহ আটকাতে প্রশাসনকে চাপ সৃষ্টি করেছেন, এই খবরও তাঁর কাছে রয়েছে বলে চাঞ্চল্যকর দাবি করেন তিন। গগৈ বলেন, হাইলাকান্দিতে তিনি সভা করলে ইউডিএফ বিধায়কদের মুখোশ খুলে যাওয়ার আশঙ্কায় ভীতিগ্রস্ত জেলার তিন বিধায়ক। যদিও তিনি শীঘ্রই আবার হাইলাকান্দিতে আসবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়ে যান।