তেজপুরের লিচু যাবে লন্ডন, লাচিত বরফুকনের ১৫০ ফুট উঁচু মূৰ্তি নিৰ্মাণ সহ বহু গুরুত্বপূৰ্ণ সিদ্ধান্তে সিলমোহর
তেজপুর (অসম), ১১ জুন (হি.স.) : ১৯৯২ সালের বিভিন্ন জেলায় ভূমি আবণ্টন সহ ফাইলবন্দি মোট ১০৩৭টি প্ৰস্তাবে আজ অনুমোদন দিয়েছে তেজপুরে অনুষ্ঠিত রাজ্য ক্যাবিনেট। আজকের বৈঠকে তেজপুরের প্রসিদ্ধ লিচু লন্ডনে রফতানি করা, লাচিত বরফুকনের ১৫০ ফুট উঁচু মূৰ্তি নিৰ্মাণ সহ বহু গুরুত্বপূৰ্ণ সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়েছে।
রাজ্যের রাজধানী গুয়াহাটির বাইরে আজ চতুর্থ ক্যাবিনেট বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে শোণিতপুর জেলা সদর তেজপুরে। মুখ্যমন্ত্ৰী ড. হিমন্তবিশ্ব শৰ্মার পৌরোহিত্যে আজ তাঁর ৫০-তম ক্যাবিনেট বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে তেজপুর সম্মিলন কেন্দ্রের প্রেক্ষাগৃহে। অনুষ্ঠিত বৈঠকে আগামী জুলাই মাসে কাছাড় জেলার সদর শিলচরে এবং আগস্টে কোকরাঝাড়ে ক্যাবিনেট বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই তথ্য খোদ মুখ্যমন্ত্রী দিয়েছেন। তিনি জানান, আজ পর্যন্ত ক্যাবিনেটে ৬০০টি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। গৃহীত ৬০০টি সিদ্ধান্তের কতটা কাৰ্যকর হয়েছে সেই সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে মন্ত্রী চন্দ্ৰমোহন পাটোয়ারির নেতৃত্বে ছোট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। পরবৰ্তী ক্যাবিনেটে এর রিপোর্ট জমা দেবে কমিটি, জানান মুখ্যমন্ত্রী।
তেজপুরের লিচু লন্ডনে রফতানি করার সিদ্ধান্তের পাশাপাশি বৰ্তমানে লিচু সরবরাহকারী অগ্নিগড় ফুড প্রসেসিং সেন্টার (এফপিসি)-এর জন্য প্রসেসিং প্ল্যান্ট নিৰ্মাণ করার সিদ্ধান্তে অনুমোদন দিয়েছে ক্যাবিনেট। এছাড়া আজকের ক্যাবিনেটে আরও যে গুরুত্বপূৰ্ণ সিদ্ধান্ত গ্ৰহণ করা হয়েছে সেগুলি যথাক্রমে অমৃত সরোবর নিৰ্মাণের জন্য ৩৫০ কোটি টাকা মুখ্যমন্ত্ৰীর সমগ্ৰ গ্ৰামোন্নয়ন যোজনা থেকে অনুমোদিত হয়েছে। এছাড়া সিদ্ধান্ত হয়েছে, স্বশাসিত সংস্থা (পুর, নগর নিগম ইত্যাদি)-র মুখ্য কাৰ্যনির্ববাহী অভিযন্তা, অ্যাকাউন্টেন্ট নিয়োগ করবে সরকার। তাঁদের বদলি করার পাশাপাশি সরকার বেতনও দেবে।
তাছাড়া সৌরশক্তি আহরণের জন্য অসমে ১,০০০ মেগাওয়াট নতুন সৌরশক্তি প্ৰকল্প নিৰ্মাণ করার সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়েছে আজকের ক্যাবিনেট বৈঠক। এর জন্য প্ৰায় ৫,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে। এভাবে অসমের বিভিন্ন এলাকায় সরকারি ভূমিতে এই প্ৰকল্পগুলি নিৰ্মাণ হবে।
বিদ্যুৎ বিভাগকে বৈদ্যুতিক মিটার, ট্ৰান্সফৰ্মার ইত্যাদি সরবরাহ করতে ৮,৭২৭ কোটি টাকা অনুমোদন দিয়েছে ক্যাবিনেট। এর জন্য কেন্দ্ৰ এবং রাজ্য সরকার যৌথভাবে প্ৰদান করবে তহবিল। গরুখুঁটি বহুমুখী কৃষি প্ৰকল্পের নামে সমিতি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে একজন এসিএস অফিসার নিয়োগ করা হবে।
গুয়াহাটিতে ৫,০০০ হাজার মানুষ বসতে পারেন, সে অনুযায়ী প্ৰেক্ষাগৃহ নিৰ্মাণের জন্য ১৮৫ কোটি টাকার অনুমোদন মিলেছে ক্যাবিনেটের। তাছাড়া বটদ্ৰবা থান উন্নয়ন প্ৰকল্পের জন্য দ্বিতীয় দফায় অর্থ মঞ্জুর করেছে ক্যাবিনেট। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, লাচিত বরফুকনের ৪০০-তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে ১৫০ ফুট উঁচু মূৰ্তি তৈরি করা হবে।
এছাড়া লখিমপুর এবং ঢকুয়াখনাকে সরাসরি সংযুক্ত করতে ঘূণাসুঁতির নদীর ওপর একটি সেতু নিৰ্মাণ করা হবে। এর জন্য ৩৮৩ কোটি টাকার অনুমোদন দিয়েছে ক্যাবিনেট। এর ফলে লখিমপুর-ধেমাজি এবং মাজুলির দূরত্ব বহু কমবে।
বাকসা জেলার তামুলপুর এবং বরমাকে সংযুক্ত করতে একটি সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। এর জন্য ২৪৭ কোটি টাকার অনুমোদন মিলেছে। তাছাড়া তেজপুরের মিশন চারিআলি উড়ালপুলের সংশোধিত অনুমোদন দেওয়া দিয়েছে ক্যাবিনেট। আজকের অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে আগের চেয়ে দীর্ঘ হবে প্রস্তাবিত সেতুটি। এর জন্য প্ৰায় ৫০০ কোটি টাকা ব্যয় হবেব। বাণ থিয়েটারের উন্নয়নে ৪ কোটি টাকার অনুমোদনের পাশাপাশি মরা ভরলুকে ফের খননের জন্য ১৫ কোটি টাকা, তেজপুরের বড়পুখুরির উন্নয়নে ১৬ কোটি টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে আজকের ক্যাবিনেট বৈঠকে। এছাড়া তেজপুরের জেলা কারাগার চারিদুয়ারে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই স্থানে জ্যোতি-বিষ্ণু-ফণী সাংস্কৃতিক প্ৰকল্প নিৰ্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্যাবিনেট। বর্তমান কারাগারের ৬৪ বিঘা ভূমিতে নির্মাণ হবে এই প্ৰকল্প।

