গুয়াহাটি, ৭ এপ্রিল (হি.স.) : অসমে গ্ৰেফতার করা হচ্ছে একের পর এক মাওবাদী নেতাকে। কাছাড়, করিমগঞ্জ এবং ডিব্রুগড় জেলার বিভিন্ন চা বাগানের পর এবার গুয়াহাটির পার্শ্ববর্তী কামরূপ গ্রামীণ জেলার অন্তর্গত ছয়গাঁওয়ের কুকুরমারা থেকে আরও এক শীর্ষ মাওবাদী নেতাকে আটক করেছে সিআইডি এবং ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)-র দল। নিষিদ্ধ মাওবাদী সংগঠনের সক্রিয় সদস্য তথা স্থানীয় নেতা অভিযোগে হৃদয় কলিতাকে আটক করেছে এনআইএ।
গোপন সূত্ৰের তথ্যের ভিত্তিতে হৃদয় কলিতাকে গ্ৰেফতার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। জানা গেছে, দীৰ্ঘদিন ধরে বিচ্ছিন্নতাবাদী মাওবাদী সংগঠনের কাজ অসমে বিস্তার করার কাজে নিয়োজিত ছিল হৃদয় কলিতা। গত মার্চ মাসের ৭ তারিখ কাছাড় জেলার উধারবন্দ থানাধীন জয়পুর এলাকার পাতিছড়া চা বাগান থেকে সিপিআই (মাও)-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সক্রিয় সদস্য তথা মাওবাদী নেতা অরুণকুমার ভট্টাচার্য ওরফে কাঞ্চনদা ওরফে জ্যোতিষ ওরফে কবীর ওরফে কনক এবং কালাইন থেকে আকাশ ওরাংকে গ্রেফতার করেছিল এনআইএ। সিপিআই (মাও)-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সক্রিয় সদস্য, ৭০ বছরের অরুণকুমার ভট্টাচাৰ্য (কাঞ্চনদা) কট্টরপন্থী সংগঠনের অসম রাজ্য সাংগঠনিক সমিতির সদস্য ছিলেন। তাঁর মাথার দাম ৩ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল।
কাঞ্চনদা এবং আকাশ ওরাংকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে এপ্ৰিলের গোড়ার দিকে উজান অসমের ডিব্ৰুগড় জেলার এক চা বাগান থেকে আরেক সিপিআই (মাও)-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সক্রিয় সদস্য রিমা ওরাং ওরফে সরস্বতী নামের এক মহিলাকেও গ্রেফতার করেছিল এনআইএ।
এর পর করিমগঞ্জ জেলার অন্তর্গত পাথারকান্দি থানাধীন সোনাখিরা থেকে এনআইএ-র চারজনের একটি দল নিষিদ্ধ মাওবাদী সংগঠনের সাথে জড়িত অভিযোগে আদিবাসী সম্প্রদায়ের জোড়া দম্পতি রাজু ওরাং এবং তার স্ত্রী পিঙ্কি ওরাংকে আটক করেছিল। পরবর্তীতে তাদের অবশ্য ব্যক্তিগত মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা।
প্রাপ্ত খবরে প্রকাশ, কাছাড়ের কাঞ্চনদা এবং কালাইন থেকে গ্ৰেফতার আকাশ ওরাংকে জেরা করে রাজ্যের কাছাড়, করিমগঞ্জ, কামরূপ (গ্রামীণ), ডিব্ৰুগড় এবং ধুবড়ি জেলার ১৭টি স্থানে তালাশি অভিযান চালিয়েছে এনআইএর দল।
বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজ্য পুলিশ বলেছিল কাঞ্চনদা ও তার সক্রিয় সহকর্মীরা অসম সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য রাজ্যে সিপিআই (মাওবাদী)-র নেটওয়াৰ্ক সম্প্ৰসারণে জড়িত ছিল। এ সংক্রান্ত এক মামলা গুয়াহাটির সিআইডি থানায় রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছিল। তবে এই মামলা পরবর্তীতে এনআইএর হাতে তুলে দেওয়া হয়। তদন্তকারী এনআইএ-র দলটি ধৃতদের হেফাজত থেকে ল্যাপটপ, ছবি আঁকার পেনসিল, বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার কাটিং, উত্তরপূর্বের ম্যাপ, মোবাইল হ্যান্ডসেট সহ অন্য ডিজিটাল সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করেছে।