নয়াদিল্লি, ২৯ ডিসেম্বর : সুপ্রিম কোর্ট সোমবার আরাভালি পর্বতমালার সংজ্ঞা নিয়ে তার ২০ নভেম্বরের রায় স্থগিত করেছে। আদালত সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, আরাভালি পর্বতমালার সংজ্ঞা কী হবে, সেই বিষয়ে পুনরায় বিচার করা হবে এবং এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেল গঠন করা হবে, যারা এর উচ্চতা এবং ওই অঞ্চলে খনি নিষিদ্ধ করার বিষয়ে পর্যালোচনা করবেন।
আগে, সুপ্রিম কোর্ট ২০ নভেম্বর একটি রায়ে আরাভালি পর্বতমালার সংজ্ঞা ১০০ মিটার বা তার বেশি উচ্চতার ভূমি হিসেবে গ্রহণ করেছিল, এবং দিল্লি, হরিয়ানা, রাজস্থান এবং গুজরাটে নতুন খনি লাইসেন্সের অনুমতি নিষিদ্ধ করেছিল। তবে এই সংজ্ঞা নিয়ে অনেক বিতর্ক ছিল, এবং আদালত পুনরায় তা পর্যালোচনা করতে চাইছে।
এ বিষয়ে শনিবার সুপ্রিম কোর্ট নিজ উদ্যোগে আরাভালির সংজ্ঞা সম্পর্কিত সমস্যার দিকে মনোযোগ দিয়েছে, এবং এই রায়ে কোনো পরিবর্তন বা সংশোধন প্রয়োজন কিনা, তা পুনরায় পর্যালোচনার সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে।
এই পদক্ষেপটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ পূর্বের সেই রায়ও একটি তিন সদস্যবিশিষ্ট বেঞ্চই দিয়েছিল, যার নেতৃত্বে ছিলেন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ভূপেশ আর গাভাই। নভেম্বরের রায়ে আদালত আরাভালি পর্বতমালার সংজ্ঞার বিষয়ে পরিবেশ, বন এবং জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের একটি কমিটির সুপারিশ গ্রহণ করেছিল।
কমিটি তার সুপারিশে জানিয়েছিল যে, “আরাভালি পাহাড়” হতে হবে এমন কোনো ভূমি যা আরাভালি জেলার মধ্যে অবস্থিত এবং স্থানীয় ভূ-সতত থেকে ১০০ মিটার বা তার বেশি উচ্চতায় রয়েছে। আর, “আরাভালি পর্বতশ্রেণী” হবে এমন দুটি বা তার বেশি পাহাড়, যা একে অপরের ৫০০ মিটার নিকটবর্তী অবস্থায় রয়েছে।
আরাভালি পর্বতমালা ভারতের অন্যতম প্রাচীন ভূতাত্ত্বিক কাঠামো, যা দিল্লি থেকে গুজরাট পর্যন্ত, হরিয়ানা এবং রাজস্থান অতিক্রম করে বিস্তৃত। এই পর্বতশ্রেণী প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধক হিসাবে কাজ করে, যা উত্তর ভারতের মরুকরণের বিরুদ্ধে রক্ষাকবচ হিসেবে বিবেচিত, এবং জলশক্তি পুনর্নবীকরণ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুযায়ী, বিশেষজ্ঞ প্যানেল তৈরি হবে, যা আরাভালি পর্বতমালার সংজ্ঞা এবং সেখানে খনি কার্যক্রম সম্পর্কিত প্রশ্নগুলি আরও বিস্তারিতভাবে পরীক্ষা করবে। আদালত এর মাধ্যমে আরাভালি পর্বতশ্রেণীর সংরক্ষণকে সবচেয়ে বড় গুরুত্ব দিচ্ছে, কারণ সেখানে অতি মাত্রায় খনন কাজ জাতীয় পরিবেশের জন্য “মহান বিপদ” সৃষ্টি করতে পারে।
এই বিবৃতি দিয়ে আদালত পরিবেশগত স্থিতিশীলতা, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে আরাভালির সংরক্ষণকে একটি অগ্রাধিকারের বিষয়ে অভিহিত করেছে।

