আগরতলা, ২৯ ডিসেম্বর: বর্তমান সরকার টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে দৃঢ়ভাবে কাজ করছে। এ লক্ষ্যে বৃষ্টির জল সংরক্ষণ এবং বনায়নের গুরুত্ব অপরিসীম। সরকার ইতিমধ্যেই এই লক্ষ্য পূরণের জন্য সক্রিয়ভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ কথা বলেছেন কৃষি ও কৃষককল্যাণ মন্ত্রী রতন লাল নাথ, আজ মোহনপুর, তারানগরের তারা সুন্দরী বাঁধ সংলগ্ন এলাকায় অনুষ্ঠিত ‘ওয়াটারশেড ম্যানেজমেন্ট ফেস্টিভ্যাল ২০২৫’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে।
মন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর একভাগ অংশ ভূমি এবং তিনভাগ জল, অর্থাৎ প্রাকৃতিকভাবে কোনো জল সংকট হওয়ার কথা নয়। তবুও আমরা জল সংকটের মুখোমুখি। বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা, ভবিষ্যতে জল সংকটের কারণে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনাও রয়েছে।
তিনি আরও বলেন এই প্রোগ্রামটি সেইসব রাজ্য ও অঞ্চলের জন্য যারা বৃষ্টির উপর নির্ভরশীল কৃষি করে এবং যেখানে জল সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা যায় না। জল সংরক্ষণ ছাড়া কৃষি সম্ভব নয়। হরিয়ানা, পাঞ্জাব ও রাজস্থানে প্রায় ১০০ শতাংশ ভূগর্ভস্থ জল ব্যবহার হচ্ছে, ফলে সেখানে জল সংকট দেখা দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ ৫২ শতাংশ, আসাম ১৫ শতাংশ, আর ত্রিপুরা প্রায় ৯ শতাংশ ব্যবহার করছে। বর্তমানে আমরা হয়তো সংকটের মধ্যে নেই, কিন্তু যদি ভবিষ্যতের জন্য জল সঠিকভাবে সংরক্ষণ না করি, সমস্যায় পড়তে হবে। যদি কৃষক ফসল না চাষ করে, মানুষ কোথা থেকে খাবার পাবে? লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করলেও, কৃষক ফসল না চাষ করলে কী হবে?
মন্ত্রী জানান, এ কারণেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কৃষিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকেন এবং কৃষককে ‘দেবতার সমতুল্য’ মনে করেন। কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় সরকার কৃষিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। আগে কোনো প্রধানমন্ত্রী কৃষকদের এত গুরুত্ব দেননি। সরকার চারটি ক্ষেত্রের উপর কাজ করছে—কৃষক, যুবক, নারী ও দরিদ্র। এদের কল্যাণে কাজ করলে আমরা ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’ অর্জন করতে পারব। বৃষ্টির জল সংরক্ষণের জন্য আমাদের পুকুর খনন করতে হবে এবং জলাধার তৈরি করতে হবে। আরও গাছ লাগাতে হবে। বন উজাড়ের কারণে বন্যা ঘটছে ।
মন্ত্রী জানান, ওয়াটারশেড ম্যানেজমেন্ট পরিকল্পনা ফেজ-২ ২০২১–২২ সালে শুরু হয়েছে। ত্রিপুরার ১৮টি মহকুমায় এ পর্যন্ত ৪৮টি প্রকল্প চলছে।
তিনি জানান, মার্চ ২০২৬-এর পর ফেজ-৩ শুরু হবে। আমাদের এই তারা সুন্দরী বাঁধের খালটি পুনঃস্থাপন করতে হবে। পুরো এলাকা জলাধার অঞ্চল হিসেবে উন্নয়নের পাশাপাশি ইকো-ট্যুরিজম, ওপেন জিম ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। ওয়াটারশেড প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো বনায়ন, জলাধার সৃষ্টি ও জল সংরক্ষণ। এ পর্যন্ত আমরা নির্মাণ করেছি ১৮১টি চেক ড্যাম, ১,০১৪টি পুকুর, ৪৪টি ‘অমৃত সরোবর’, পুনঃস্থাপন করেছি ১৩৫টি পুকুর, তৈরি করেছি ৬,৯৯২ মিটার সেচ খাল এবং নতুন গাছ লাগিয়েছি ১,৪০০ হেক্টর এলাকায়। আগের অনেক সরকার ক্ষমতায় থাকলেও এই খাল সংক্রান্ত কোনো উদ্যোগ নেয়নি। আমাদের সরকার টেকসই উন্নয়নের জন্য কাজ করছে। কৃষিই মূল ভিত্তি। আমরা যদি এক গাছ কেটে ফেলি, তবে দশটি গাছ লাগানো আবশ্যক,।

