আগরতলা, ২৯ ডিসেম্বর: সোমবার আগরতলার বর্ডার গোলচক্কর এলাকায় রামনগরের প্রয়াত বিধায়ক ও জননেতা সুরজিৎ দত্তের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। উল্লেখ্য, রামনগরের বর্তমান বিধায়ক তথা আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদারের উদ্যোগে গত ২৭ ডিসেম্বর এই স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেনের প্রয়াণের কারণে সেদিন কর্মসূচি স্থগিত রাখা হয়।
সোমবারের স্মরণসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডক্টর মানিক সাহা। এছাড়াও বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রয়াত সুরজিৎ দত্তের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও বিধায়ক রতন চক্রবর্তী সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রয়াত বিধায়ক সুরজিৎ দত্তের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডক্টর মানিক সাহা। এরপর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মেয়র তথা রামনগর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক দীপক মজুমদার। উপস্থিত ছিলেন রামনগর বিধানসভা কেন্দ্রের কর্পোরেটরগণ, মণ্ডল সভাপতি অমিতাভ ভট্টাচার্যসহ বিজেপির বিভিন্ন স্তরের নেতৃত্ব ও কর্মীরা। প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর ২০২৩ সালের ২৭ ডিসেম্বর কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সুরজিৎ দত্ত। রামনগর বিধানসভা কেন্দ্রসহ সমগ্র রাজ্যজুড়ে তাঁর জনপ্রিয়তা ছিল ঈর্ষণীয়।
রাজনৈতিক জীবনে সুরজিৎ দত্ত ১৯৮৮ সালে ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে প্রথমবার বিধায়ক নির্বাচিত হন এবং সুধীর রঞ্জন মজুমদারের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস-টিইউজেএস সরকারের মন্ত্রী হন। পরবর্তীতে ১৯৯৩, ১৯৯৮, ২০০৩ এবং ২০০৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে টানা চারবার কংগ্রেসের টিকিটে জয়লাভ করে তিনি মোট পাঁচবার বিধায়ক নির্বাচিত হন। ২০১৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তিনি সিপিআই(এম)-এর প্রার্থী রতন দাসের কাছে পরাজিত হন। পরে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দিয়ে ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে রামনগর আসন পুনরুদ্ধার করেন এবং ২০২৩ সালের নির্বাচনেও পুনরায় বিজয়ী হন।
বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর মানিক সাহা প্রয়াত সুরজিৎ দত্তকে একজন অবিস্মরণীয় জননেতা হিসেবে অভিহিত করেন এবং বলেন, তাঁর নেতৃত্ব ও মানুষের প্রতি নিষ্ঠা রামনগরের রাজনৈতিক ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। পরে স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা বলেন জীবনের শেষ রয়েছে। কিন্তু জিবিত অবস্থায় মানুষের জন্য কাজ করে গেলে মানুষ তাকে স্মরণ করবে তার কাজের জন্য। একজন মানুষ জিবিত থাকতে তার ভালো কাজ গুলির সম্পর্কে কেউ কথা বলে না। কিন্তু মৃত্যুর পর ঐ ব্যক্তির ভালো কাজ গুলি নিয়ে সকলে কথা বলে। সুরজিৎ দত্তর মৃত্যুর পর মানুষ বেশি বেশি ওনাকে স্মরণ করছেন। প্রয়াত সুরজিৎ দত্তর কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এইদিন আরও বলেন প্রয়াত সুরজিৎ দত্তর বিষয়ে কথা বলে শেষ করা যাবে না। মানুষের জন্য কাজ করার মানসিকতা ছিল ওনার মধ্যে। তাই মৃত্যুর পরও তিনি সকলের হৃদয়ে রয়েছেন।

