নতুন ত্রিপুরার লক্ষ্য বাস্তবায়ণে প্রবাসী ত্রিপুরাবাসীদের দক্ষতা, উদ্বাবনী চিন্তাভাবনা ও বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে: মুখ্যমন্ত্রী

আগরতলা, ২৮ ডিসেম্বর: প্রবাসী ত্রিপুরাবাসী সামিট-২০২৫ রাজ্যের জন্য একটি মাইলফলক হিসাবে চিহ্নিত হল। এই সামিট কেবলমাত্র একটি সংযোগ নয়, বরং প্রবাসী ত্রিপুরাবাসীদের অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও বিনিয়োগকে রাজ্যের উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত করার একটি সুদূরপ্রসারী উদ্যোগ। আজ আগরতলা পোলো টাওয়ারে সুশাসন দপ্তরের অধীনে ত্রিপুরা ইনস্টিটিউশন ফর ট্রান্সফরমেশন (টিআইএফটি)-এর উদ্যোগে প্রবাসী ত্রিপুরাবাসী সামিট-২০২৫ এ প্রধান অতিথির ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন।

আজকের অনুষ্ঠানের প্রথমেই প্রয়াত রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে একমিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা এবং নতুন ত্রিপুরার লক্ষ্য বাস্তবায়ণে প্রবাসী ত্রিপুরাবাসীদের অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, উদ্বাবনী চিন্তাভাবনা ও বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে ত্রিপুরা শিল্প, অবকাঠামো, তথ্য প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পর্যটন ও প্রশাসনিক সংস্কারের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। ব্যবসা সংস্কার ও ডিরেগুলেশন প্রক্রিয়ায় ত্রিপুরা দেশের মধ্যে শীর্ষস্থান অর্জন করেছে। সিঙ্গেল উইন্ডো সিস্টেম ‘ সোয়াগাত’ এর মাধ্যমে শিল্প ও ব্যবসা সংক্রান্ত অনুমোদন প্রক্রিয়া সহজ ও সময়বদ্ধ করা হয়েছে। মানুষ আর আগের মত হয়রানির শিকার হচ্ছেন না। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা বর্তমানে উত্তর-পূর্ব ভারতের একটি উদীয়মান শিল্প ও বিনিয়োগ গন্তব্য। রাবার, বাঁশ, আগর, চা, কৃষিভিত্তিক শিল্প, হস্তশিল্প, পর্যটন ক্ষেত্রে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। শিল্প পার্ক, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, স্টার্ট-আপ নীতি ও ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ব্যবস্থার মাধ্যমে নাগরিককে উৎসাহিত করা হচ্ছে। তথ্য প্রযুক্তি ও ডিজিট্যাল পরিকাঠামোর বিকাশে ত্রিপুরা দ্রুত এগিয়ে চলছে। আইটি নীতি, ডেটা সেন্টার নীতি, স্টার্ট-আপ ইকোসিস্টেম ও স্কিল ডেভেলপমেন্ট কর্মসূচির মাধ্যমে রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্ষেত্রে অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মেডিক্যাল কলেজ, নার্সিং কলেজ, সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, আধুনিক স্বাস্থ্য পরিষেবা ও সার্বজনীন স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্পের মাধ্যমে ত্রিপুরা একটি হেলথ হাব হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। তিনি বলেন, ত্রিপুরার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় পর্যটন কেন্দ্র, ইকো-ট্যুরিজম ও অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজম পর্যটন ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের উন্মোচন করছে। পর্যটন পরিকাঠামো উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ উৎসাহিত করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্যে ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রের সাফল্যের চিত্র তুলে ধরেন। প্রবাসী ত্রিপুরাবাসীদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের উন্নয়নে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, প্রবাসী ত্রিপুরাবাসীদের অভিজ্ঞতা, সহযোগ ও বিনিয়োগ ত্রিপুরার ভবিষ্যৎ নির্মাণে সহায়ক হবে। রাজ্যের বর্তমান সরকার সহযোগিতা, সহায়তা ও নীতিগত সমর্থন প্রয়াণে আন্তরিক রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী সামিটে অংশগ্রহণকারী সকল প্রবাসী ত্রিপুরাবাসীদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ত্রিপুরার সার্বিক উন্নয়নে তাদের সহযোগিতা কামনা করেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা স্বাস্থ্য মিশনের এমডি সাজু বাহিদ এ। ভার্চুয়ালি সুশাসন দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে বক্তব্য তুলে ধরেন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বন্ধন গ্রুপের চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর ঘোষ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ড. পি কে চক্রবর্তী, মুখ্যমন্ত্রীর ওএসডি পরমানন্দ সরকার ব্যানাজী প্রমুখ।

Leave a Reply