বাংলাদেশে ছাত্রনেতা মোতালেব শিকদার গুলিবিদ্ধ, খুনের চেষ্টা

ঢাকা, ২২ ডিসেম্বর: বাংলাদেশে সোমবার ছাত্রনেতা মোতালেব শিকদারকে গুলি করে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। হামলার শিকার শিকদার খুলনার এক এলাকায় মাথায় গুলি খেয়েছেন, খবর দিয়েছে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম।

খুলনার সোনাডাঙ্গা মডেল থানার তদন্ত কর্মকর্তা অনিমেষ মন্ডল জানান, “প্রায় ১১:৪৫ এ.এম. নাগাদ দুর্বৃত্তরা তার মাথায় গুলি চালায়। তাকে দ্রুত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তবে তার অবস্থা সংকটজনক ছিল।” তবে পরবর্তীতে মন্ডল জানান, শিকদার এখন বিপদমুক্ত রয়েছেন। গুলি তার একটি কানে ঢুকে ত্বক ছিঁড়ে অন্য পাশ দিয়ে বেরিয়ে গেছে।

মোতালেব শিকদার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা এবং খুলনা বিভাগের প্রধান ও এনসিপি শ্রমিক শক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। শিকদারের ওপর হামলার ঘটনা সম্পর্কে পার্টির যুগ্ম প্রধান সমন্বয়ক মাহমুদা মিতু এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন।

এনসিপি বাংলাদেশে ছাত্রবিরোধী আন্দোলন “স্টুডেন্টস অ্যাগেইনস্ট ডিসক্রিমিনেশন” এবং “জাতীয় নাগরিক কমিটি” দ্বারা গঠিত হয়েছিল। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম ছাত্র নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল হিসেবে ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৫ তারিখে প্রতিষ্ঠিত হয়।

এদিকে, মথালেব শিকদারের হামলার কয়েকদিন আগেই বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি ওসমান হাদি নিহত হন। গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় তার উপর আক্রমণ হলে গুলির আঘাতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে ১৫ ডিসেম্বর তাকে সিঙ্গাপুরের জেনারেল হাসপাতালের নিউরোসার্জিক্যাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর তার মৃত্যু হয়।

সিঙ্গাপুর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, “এসজিএইচ এবং জাতীয় স্নায়ুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ চেষ্টা সত্ত্বেও, তিনি ১৮ ডিসেম্বর তার আঘাতে মারা যান।”

বাংলাদেশ পুলিশ রবিবার জানায়, “হাদির হত্যার প্রধান সন্দেহভাজন সম্পর্কে তাদের কাছে কোনো নির্দিষ্ট তথ্য নেই।” এ মন্তব্য আসে পরের দিন যখন হাদির ইনকিলাব মঞ্চ পার্টি শনিবার সরকারকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে হত্যাকারীদের গ্রেফতার করার জন্য দৃশ্যমান অগ্রগতি দাবি করেছে।

হাদির মৃত্যুর পর সারা বাংলাদেশে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। চট্টগ্রামে ভারতের সহকারী হাইকমিশনারের বাসভবনে পাথর ছোড়ার ঘটনা ঘটে।

হাদিকে শনিবার ঢাকায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে গার্ড অব অনারের মধ্যে দাফন করা হয়।

Leave a Reply