সংসদে তুমুল হট্টগোলের মধ্যেই লোকসভায় পাশ ভিবি-জি র‍্যাম জি বিল, এমজিএনরেগা ‘খর্ব’ করার অভিযোগ বিরোধীদের

নয়াদিল্লি, ১৮ ডিসেম্বর: তীব্র হট্টগোল ও বিরোধীদের প্রতিবাদের মধ্যেই বৃহস্পতিবার লোকসভায় পাশ হয়ে গেল ‘বিকসিত ভারত গ্যারান্টি ফর রোজগার অ্যান্ড আজীবিকা মিশন (গ্রামীণ)’ বা ভিবি-জি র‍্যাম জি বিল, ২০২৫। বিরোধী সাংসদদের অভিযোগ, এই বিলের মাধ্যমে মহাত্মা গান্ধীর নামকে অবমাননা করা হয়েছে এবং এমজিএনরেগা আইনের মূল চরিত্রকে দুর্বল করা হয়েছে।

বিল নিয়ে আক্রমণের মুখে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান সরকারের অবস্থান জোরালোভাবে তুলে ধরেন। লোকসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “শুরুতে এই প্রকল্পের নাম ছিল এনরেগা। তখন মহাত্মা গান্ধীর নাম ছিল না। ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় ভোটের স্বার্থেই কংগ্রেস গান্ধীজির নাম জুড়ে দেয়।” চৌহানের দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বেই এমজিএনরেগা প্রকল্প সবচেয়ে শক্তিশালী ও কার্যকরভাবে রূপায়িত হয়েছে।

কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর সমালোচনার জবাবে, যেখানে তিনি অভিযোগ করেছিলেন যে মোদী সরকার ইচ্ছেমতো প্রকল্পের নাম বদলায়, চৌহান পাল্টা বলেন, জওহরলাল নেহরু ও মহাত্মা গান্ধীর নামে একাধিক কল্যাণমূলক প্রকল্প চালু রয়েছে।

বিল পাশের সময় সংসদে প্রবল বিশৃঙ্খলা দেখা যায়। বিরোধী সাংসদরা কাগজ ছিঁড়ে স্লোগান তুলতে থাকেন এবং অধিবেশন ব্যাহত করেন। তার আগে সংসদ ভবন চত্বরে মিছিল করে বিল প্রত্যাহারের দাবিও জানান তাঁরা। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে এই আইনকে “মহাত্মা গান্ধীর প্রতি অপমান” এবং গ্রামীণ ভারতের সামাজিক-অর্থনৈতিক রূপান্তরের চালিকাশক্তি কাজের অধিকারের উপর আঘাত বলে অভিহিত করেন। প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধীও মকর দ্বারে সাংসদদের সঙ্গে বিক্ষোভে অংশ নেন।

ভিবি-জি র‍্যাম জি বিল অনুযায়ী, গ্রামীণ এলাকার প্রতিটি পরিবারের প্রাপ্তবয়স্ক সদস্যরা যদি অদক্ষ শ্রমে কাজ করতে আগ্রহী হন, তবে সেই পরিবারকে বছরে ১২৫ দিনের মজুরি-ভিত্তিক কাজের আইনি নিশ্চয়তা দেওয়া হবে। আইন কার্যকর হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারগুলিকে নিজেদের প্রকল্প এই নতুন আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে তুলতে হবে।

এই বিল ঘিরে সংসদে রাজনৈতিক সংঘাত আরও তীব্র হয়েছে এবং আগামী দিনে বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।

Leave a Reply